Alapon

কাদের সিদ্দিকীকে মুজিবের প্রশ্রয়



১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ঠিক একদিন পর, ১৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের 'কাদেরিয়া বাহিনী'র অধিনায়ক কাদের সিদ্দিকী ও তার বাহিনীর কয়েকজন মিলে দুষ্কৃতকারী অভিযোগে চার যুবককে আটক করে নিয়ে এলেন ঢাকার আউটার স্টেডিয়াম বা পল্টন ময়দানে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানা গেল না। দেশের সংবাদপত্রের রিপোর্টার ও ফটো সাংবাদিক এবং বিদেশি টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে আধা ঘণ্টা ধরে পিটিয়ে, তারপর কাদের সিদ্দিকী নিজ হাতে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করলেন চার যুবককে।

ভয়ঙ্কর, বিপজ্জনক ও নির্মম এই ঘটনার ছবি দেখানো হলো বিশ্বের বহু দেশে। যুদ্ধ চলাকালে আইনের বিচারে সঠিক নয় এমন ঘটনা হয়তো অনেকই ঘটেছে। কিন্তু যুদ্ধ যখন শেষ তখন এরকম ঘটনা এবং একটি বৃহৎ মুক্তিযোদ্ধা বাহিনীর অধিনায়ক স্বহস্তে সেটা ঘটিয়েছেন, বিশ্বসমাজে বাংলাদেশের প্রতি শুভেচ্ছা ও সহানুভূতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল।

এমনিতেই মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সামাজিক ক্ষতি হয়েছিল অনেক। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সামাজিক মূল্যবোধ। আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছিল। বিজয় পরবর্তী কথিত মুক্তিযোদ্ধারা লুটতরাজ, দখলবাজিতে মেতে উঠলো। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ যোগ দিলো এসবে।

শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্ব এসব তৎপরতা প্রতিহত কিংবা এমন পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য যোগ্য এবং প্রস্তুত ছিল কি? জনবহুল স্থানে শত শত মানুষের সামনে এরকম নারকীয় ঘটনার পরও কাদের সিদ্দিকীকে প্রকাশ্যে প্রশ্রয় পেতে দেখা গেছে। প্রকাশ্য জনসভায় সরকার প্রধান শেখ মুজিব তাকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, 'কাদের, তুই চারজনকে মেরেছিস, চার শ লোক মারলেও আমি তোকে কিছুই বলতাম না'।


পিকচারে- 'কাদেরিয়া বাহিনী'র অধিনায়ক কাদের সিদ্দিকীর বর্বরতা

পঠিত : ৩৭৪ বার

মন্তব্য: ০