Alapon

সদস্য সম্মেলন-২০২২ : আমাদের শিক্ষাটা কী?



আজকে আমাদের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদস্য সম্মেলন হয়েছে অনলাইনে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ আমাদের সম্মেলন উপলক্ষ্যে ভিডিও বার্তা প্রেরণ করেছেন। আলেম-ওলামাদের মধ্যে আল্লামা লুৎফুর রহমান সাহেব ছিলেন এই সম্মেলনে। কথা বলেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতিবৃন্দু।

কিন্তু গত দুই বছরের মতো জাকজমক খুব বেশি হয়নি। গত বছর সম্মেলন চলাকালীন জামালপুর কিংবা মৌলভী বাজারের সভাপতি-সহ কয়েকজন ভাই গ্রেফতার হয়েছেন। তাই হয়তো সবদিক বিবেচনায় আজকের সম্মেলনটা সংক্ষিপ্ত পরিসরেই হয়েছে।

যাই হোক, আমি আজকের সম্মেলন থেকে যেই দৃষ্টিভঙ্গিটা পেলাম, এবং সকল সদস্য ভাইকে সবচেয়ে দ্রুততার সাথে অর্জন করার মতো যে বিষয়টা পেলাম, তা হলো তাকওয়া। এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ভাই তো কুরআন থেকে কোট করেই বলেছেন— হৃদয়ে যদি তাকওয়ার নীতি ধারণ করতে পারি, আল্লাহ-ভীতিকে যদি প্রাধান্য দিতে পারি আমরা, আল্লাহ অবশ্যই আমাদের পথচলা সহজ করে দিবেন। আমাদেরকে এই কন্টাকীর্ণ পথে চলাটা সহজ করে দিবেন। বিকল্প নানাবিধ পথ খুলে দিবেন।

নুরুল ইসলাম বুলবুল ভাই, নব নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহতারাম রাজিবুর রহমান পলাশ ভাইও সেটাই বলেছেন। যেমনটি কুরআন আমাদেরকে জানাচ্ছে-
وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّهٗ مَخۡرَجًا ۙ যে তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করে, মহান আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরী করে দেন। ( সূরা তালাক-০২)


বিদায়ী সভাপতি হাফেজ রাশেদ ভাইয়ের দৃষ্টিভঙ্গী বা নসীহা ছিল লৌকিকতা-লোকদেখানো মনোভাব ও প্রদর্শনেচ্ছাকে নির্মূল করে, ইখলাসের সাথে কেবলই আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা।

শ্রদ্ধেয় ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের অন্যতম একটা নসীহা ছিল, শিরকমুক্ত ঈমান এবং বিদ'আতমুক্ত আমল।

এছাড়াও প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত আমীরে জামায়াত বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের সাথে নিয়ে ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে এমন একটি সমাজ কায়েম করেছিলেন- যেখানে নামাজ ও জাকাত প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ নিশ্চিত করা হয়েছিল। মানুষের সার্বিক অধিকার নিশ্চিত করে কল্যাণময় সমাজব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। আজও আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য জান-মাল দিয়ে সংগ্রাম ও ত্যাগের নজির স্থাপন করে শহীদি কাফেলা ইসলামী ছাত্রশিবির এগিয়ে চলেছে। বাংলার জমিনে সেই সোনালী সমাজ ছাত্রশিবির কায়েম করতে পারবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। এজন্য ছাত্রশিবিরের জনশক্তিদের দুনিয়ার সকল কাজ আখিরাতকে চিন্তা করে করতে হবে। নিজেদের কাঙ্খিত চরিত্র ও যোগ্যতা অর্জনের পাশাপাশি পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী-সবার সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে এবং ভালো ব্যবহার করতে হবে। জীবনের সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। হক আদায় করতে হবে। সত্য ও ন্যায়ের পথে অটল-অবিচল থাকতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বাতিলের মোকাবিলা করার জন্য ছাত্রশিবির প্রস্তুত রয়েছে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতি, নব-মনোনীত সেক্রেটারি জেনারেলসহ সকল পর্যায়ের জনশক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়া করেন।

সবমিলিয়ে আল্লাহর অপার মেহেরবানিতে ২০২৩ সেশনের জন্য বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচন ও সেক্রেটারি জেনারেল কোনো মনোনয়ন সম্পন্ন হয়েছে। সারাদেশের সদস্যদের অনলাইন ভোটে কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন রাজিবুর রহমান। সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মঞ্জুরুল ইসলাম। আজ ১ জানুয়ারি সকাল ১১টায় ছাত্রশিবিরের সহকারী নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম বুলবুল-এর সঞ্চালনায় নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মতিউর রহমান আকন্দ ঢাকায় শহীদ আব্দুল মালেক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনে নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতির নাম ঘোষণা করেন। নাম ঘোষণার পর নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান ছাত্রশিবিরের নির্বাচন কমিশনার। গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ বিকাল ৪টা থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ রাত ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে অনলাইনের মাধ্যমে একযোগে কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রশিবিরের সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সভাপতি ২০২৩ সেশনের জন্য কার্যকরী পরিষদের সঙ্গে পরামর্শ করে মঞ্জুরুল ইসলামকে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে মনোনয়ন দেন।

আল্লাহ আমাদের নতুন বছরের পথচলাকে মসৃণ করে দিক। খোদাভীতিকে প্রাধান্য দিয়ে হোক আমাদের সকল কাজ।

"জীবনের দামে যারা কিনে জান্নাত,
দূর করে দেয় জানি সব জুলমাত।
আনে তারা সুবাসিত আলোকিত দিন,
সে আলোয় পথ পায় সহস্র নবীন।"


কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন-২০২২
#CMC2022 #BICS

পঠিত : ৫৫১ বার

মন্তব্য: ০