Alapon

খাবারের মিথ্যা মিথ্যা রিভিউ দিয়ে আসলে লাভটা কী?



২০১৩ সালের কথা! তখন ঢাকা শহরে প্রথম আসি। ঢাকায় আসার পর বড়ো ভাইয়া জিজ্ঞেস করলো, ঢাকার কী খাইতে ইচ্ছে করে? আমি বললাম, হাজীর বিরিয়ানি।

তারপর একদিন রাতের বেলা ভাইয়া আমাকে হাজী বিরিয়ানি খাওয়ানোর জন্য নাজিরা বাজার নিয়ে গেল। গিয়ে দেখি বিরাট ভীড়। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমরা বসার জন্য সিট পেলাম। একটু পর আমাদের সামনে দিলো সেই কাঙ্ক্ষিত হাজী বিরিয়ানি! বিরাট আগ্রহ নিয়ে বিরিয়ানি খাওয়া শুরু করলাম! কিন্তু একি! এই বিরিয়ানির এতো নাম ডাক শুনলাম, অথচ এই বিরিয়ানির না আছে স্বাদ আর না আছে সুবাস!

এরপর একদিন কাবুলি পোলাও খাওয়ার শখ হলো! ইউটিউবে ফুড ভ্লগারদের রিভিউ দেখে গেলাম লালবাগের জয়তুন রেস্টুরেন্টে! ফুড ভ্লগারদের ভিডিও দেখে মনে হয়েছিল, এই জিনিস না খাইলে জীবন বৃথা হয়ে যাবে! বন্ধুকে সাথে নিয়ে সেই জয়তুন রেস্টুরেন্ট খুঁজে বের করলাম! কিন্তু রেস্টুরেন্টের চেহারা দেখে আমার খাওয়ার রুচি নষ্ট হয়ে গেল!

একদিন আমার এক বন্ধু জানতে চাইল বোবার বিরিয়ানি খাইছি কিনা! বললাম, নাম শুনেছি কিন্তু খাইনি। আমার কথা শুনে তো বন্ধু মনে হয় আসমান থেকে পড়লো! সাথে সাথে ইউটিউব ওপেন করে আমাকে বোবার বিরিয়ানি নিয়ে রিভিউ দেখালো। রিভিউ দেখে মনে হচ্ছিল যেন, তারা জান্নাতের খাদ্য খাচ্ছে।

তারপর বন্ধু আমাকে বাইকের পিছনে তুলে বলল, ' বন্ধু, চলো আইজকাই তোমাকে খাওয়াই! এতো দিনেও বোবার বিরিয়ানি না খাইয়া তুমি জীবনে অনেক বড়ো কিছু মিস করছো!'

বিরাট আশা নিয়া মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে গেলাম। গিয়ে দেখি কপাল ভালোই। মাত্রই বিরিয়ানি নামানো হয়েছে। গরম গরম খাওয়া শুরু করলাম। কিন্তু বিশেষ কোনো টেস্ট পেলাম না। মনে হলো, খুবই সাধারণ মানের খাবার! অথচ এই খাবারের কি নাম ডাক!
এখন পর্যন্ত যতো খাবারের নাম ডাক শুনেছি, তার মধ্যে সুলতান'স ডাইনের কাচ্চিটা ভালো লেগেছে। এই খাবারের যতো নামডাক, তার স্বাদটাও তেমনই!

এরপর থেকে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর কোনো ফুড ভ্লগারের ভিডিও দেখেও কোথাও খাইতে যাবো না। যতোবারই ফুড ভ্লগারদের রিভিউ দেখে খাইতে গিয়েছি, ততোবারই ধরা খেয়েছি। খাবারের এরকম মিথ্যা মিথ্যা রিভিউ দিয়ে আসলে লাভটা কী?

পঠিত : ৩২১ বার

মন্তব্য: ০