Alapon

মহিলাদের স্মার্ট হওয়ার কয়েকটি টিপস

ইসলামের দৃষ্টি কোন থেকে মহিলাদের স্মার্ট হওয়ার কয়েকটি টিপসঃ

১. সাজুগুজু কম করা
অনেক মহিলা মনে করেন আতর, গোলাপ, চন্দন মেখে রাস্তায় চলাচল করলে বুঝি স্মার্ট হওয়া যায়। আসলে কি তাই? চলুন এ ব্যাপারে দর্শক শ্রোতাদের মতামত জেনে নিই।

মি. জদু- তিনি মনে করেন, "উচ্চ মার্গীয় সুগন্ধিযুক্ত নাসিকা ভেদকারক প্রসাধনী ইউজ কইরা যেসব মেয়েলোক রাস্তায় বাইরয় তারা নিজেদেরকে অন্যের সামনে উপস্থাপনের প্রচেষ্টা চালান। তবে উচ্চ শিক্ষিত ভদ্র জনেরা তাদের এহেন সাজুগুজুকে অভদ্রজনোচিত আচরণ বলে মনে করেন। অনেকের ক্ষেত্রে তা বোকা, অশিক্ষিত ও নীচু মানুষের রুচি বলে প্রতীয়মান হয়"।

মি. মদু- তিনি বলেন, " সাজুগুজু করে সেন্ট মেখে চারপাশ মোহিত করে যারা বাহিরে ঘুরাফেরা করেন তারা ইসলামের পর্দার বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ। অনেকে এটিকে স্মার্টন্যাস ভাবেন, আসলে এটি স্মার্টন্যাস তো নয়ই উপরন্তু এটি লেস পারসোনালিটি সম্পন্ন মানুষের কাজ"।

পাবলিক সেন্টিমেন্ট থেকে আমরা বুঝলাম, সেটাপ- গেটাপ মেরে, গায়ে কড়া সুগন্ধি মেখে যে সমস্ত মা-বোনেরা রাস্তায় বের হন তারা নিজেদেরকে যাই মনে করেন না কেন সাধারণ ভদ্র ও ব্যক্তিত্ত্বশালী সুনাগরিকগণ তা মোটেও ভালো চোখে দেখেন না। শিক্ষিত বনিয়াদি সমাজের চোখে স্মার্টন্যাসতো নয়ই বরং রুচিহীনতার নামান্তর। আদালতে আখেরাতে তো কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছেই।

২. কেনাকাটা কম করা
প্রদর্শনীর যে মারাত্মক ও ভয়ংকর রকমের প্রতিযোগিতা পুঁজিবাদী কর্পোরেট দুনিয়া আমাদের উপহার দিয়েছে তার তপ্ত পরশে মা-বোনেরা শপিং মলে ঝাপিয়ে পড়েছেন। প্রতিযোগিতায় লিপ্ত বোনেরা পিতা- মাতা বা স্বামীর সক্ষমতা-অক্ষমতা বিবেচনা বোধটুকু হারিয়ে ফেলেন। 'অল্পে তুষ্ট' বলতে কোন শব্দ তাদের অভিধানে নাই। এতে পরিবারে অবৈধ ইনকাম ঢুকে যায়। এ ব্যাপারটিকে অনেকে স্মার্ট হওয়ার পূর্বশর্ত মনে করে থাকেন। কিন্তু আসলেই কি অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা মানষকে স্মার্ট বানায়?

মি. রবি সংকর- তিনি মনে করেন, "স্মার্ট হাওয়ার জন্য অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটার কোন দরকার নেই। এতে মহিলাদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা শুরু হয়। অনেক ক্ষেত্রে তা পরিবারে অশান্তি ভাঙনের কারণে পরিণত হয়"।

মি. আলকাস মিয়া- তিনি এ ব্যাপারে বলেন, "যাদের মাথায় ঘিলু কম তারা এ গুরুত্বহীন কাজটি খুব গুরুত্ব দিয়ে করে থাকে। বিশেষ করে যারা খুব সহজেই অন্যর দ্বারা বায়াস্ট হন তারাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত শপিং মলে আছাড় খেয়ে পড়েন। দৈনন্দিন পারিবারিক জীবনে এরা আনফিট, অগোছালো, নোংরা। কিন্তু যে কোন ফাংশন বা প্রদর্শনীতে এরা পটু"।

৩. বাসাবাড়ি/ঘর পরিচ্ছন্ন রাখা
এমন অনেক মহিলা রাস্তায় চলেন যাদের দেখে বুঝার উপায় নাই যে তারা ব্যক্তিগত জীবনে কতটা অপরিচ্ছন্ন। তাদের কথা বার্তা, পোশাক পরিচ্ছদ দেখে কারো চোখে পলক নাও পড়তে পারে। পড়েনা চোখের পলকের সূত্র ধরে ভালোলাগা থেকে ভালবাসার জন্ম হতে পারে। সম্পর্কের গভীরতম জটিলতার এক পর্যায়ে আপনি যদি তার বাড়িতে যান তবে দেখবেন পারিবারিক জীবনে তাদের অবস্থান কতটা বস্তি মার্ক! তাদের বিছানাপত্র, ঘরের মেঝে এবং উপরে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ দেখে বমি আসলে তা আপনার দোষ বলে পরিগণিত হবেনা। আপনার চোখ কপালে উঠে যাবে। ভাবতেই পারবেন না যে এই মহিলা/মেয়েটি সেই মেয়ে কি না যাকে বাহিরে দেখে খুব রুচিশীল বলে মনে হয়েছে। তাই যারা পরিবারের যথাযথ খোঁজ খবর না নিয়েই এরকম মহিলা/মেয়ের হাতে ধরা দেন তারা অচিরেই তাদের চোখে রঙ্গিন চশমার অবস্থান লক্ষ্য করেন, অবশ্য ততদিনে বড্ড দেরি হয়ে গেছে।

৪. কম কথা বলা
স্মার্ট হওয়ার জন্য কম কথা বলা একটি উত্তম মাধ্যম হতে পারে। একটু চিন্তা করে দেখেনতো- যারা বেশি কথা বলে বা অপ্রয়োজনীয় কথা বলে তাদেরকে আমরা কী ভাবি? নিশ্চয়ই তাদেরকে আমরা বাচাল, পাগল, ফালতু লোক, ব্যক্তিত্ত্বহীন ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত করি। ঠিক বিপরীতে যারা কম কথা বলেন, প্রয়োজনাতিরিক্ত কথা বলেননা বা কম কথায় বেশি কাজ করেন তাদেরকে আমরা কী ভাবি? নিশ্চয়ই তাদেরকে আমরা ভদ্র, মার্জিত, সজ্জন ও ব্যক্তিত্ত্বওয়ালা বলে এড্রেস করে থাকি। তাহলে আমরা নিজেরা অন্যের কাছে যা যা প্রত্যাশা করি তা তা নিজের ক্ষেত্রে কেন মেনে চলি না!
মেয়েদের অনেককে নিজেকে হাইলাইটেড করার জন্য অতিরিক্ত কথা বলতে দেখা যায়। তাৎক্ষণিক তার পজিটিভ ইমপ্যাক্ট থাকলেও ইন দি লং রান নেগেটিভ ইমপ্যাক্টই বেশি। তারচেয়ে বরং প্রয়োজনীয় কথাগুলো সংক্ষেপে বলে কাজের দিকে বেশী নজর দেওয়াই বুদ্ধিমতীর কাজ।
বড় কথা হচ্ছে আপনি পাঁচ মিনিটের কথা যদি ইনিয়েবিনিয়ে ১৫/২০ মি. এ নিয়ে যান তবে নির্ঘাত তার মধ্যে মিথ্যা, ভেজাল, বেহুদা, অর্থহীন প্রলাপ ঢুকে যাবে। ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটি গুনাহের শামীল।

৫. গীবত না করা
কোন মানুষের দোষ-ত্রুটি অন্যের সামনে প্রকাশ করাই গীবত। অর্থাৎ কোন ব্যক্তির অবর্তমানে তার প্রসঙ্গে যে কোন নেগেটিভ আলোচনাই গীবত। এটি একটি জঘন্যতম অপরাধ, কবীরা গুনাহ। আকাশের নিচে এই দোষ চর্চা বা অন্বেষণের কাজটি রাত পোহালেই করে যাচ্ছেন মা বোনেরা। দুইজন মহিলা একত্রিত হলেই তারা শুরু করে দেন তৃতীয় কারো গীবত চর্চা। গীবত, চোগলখোরি, পরচর্চা ইত্যাদি কোন সুস্থ, বিবেকবান ও ব্যক্তিত্ত্বশীল মানুষের কাজ হতে পারে না।
আপনি যার কাছে অপরের বিরুদ্ধে বলছেন তিনি যদি জ্ঞানবান হন তবে নিশ্চয়ই ভাববেন আপনি এমনটি তার ব্যাপারেও করতে পারেন। গীবত চর্চাকারীকে অনেক কিছু বানিয়ে বলতে হয় তাই স্বাভাবিকভাবেই অনেক মিথ্যা বলতে হয়। একজন স্মার্ট মহিলা কখনও পরনিন্দা পরচর্চা করতে পারেন না।

৬. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা
আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর কিংবা কুরবানীর ঈদের দিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে গেলেন এবং নারীদের নিকট পৌঁছলেন। অতঃপর তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘‘হে নারী সমাজ! তোমরা দান-সদাক্বাহ্ (সাদাকা) কর। কেননা আমাকে অবগত করানো হয়েছে যে, জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী নারী সমাজেরই হবে।’’ (এ কথা শুনে) তারা বলল, হে আল্লাহর রসূল! এর কারণ কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ‘‘তোমরা অধিক মাত্রায় অভিসম্পাত করে থাক এবং নিজ স্বামীদের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে থাক। বুদ্ধি ও দীনদারীতে দুর্বল হবার পরও বিচক্ষণ ও সচেতন পুরুষদের বেওকুফ বানিয়ে দেবার জন্য তোমাদের চেয়ে অধিক পারঙ্গম আমি আর কাউকে দেখিনি।’’
(বুখারী ৩০৪, মুসলিম ৮০)।
স্মার্টন্যাসতো তাই যা আপনার উভয় জগতের কল্যাণ নিশ্চিত করবে।

৭. ফোনে কম কথা বলাঃ
মোবাইল প্রযুক্তি আমাদের জীবনে আমূল পরিবর্তন এনেছে এবং জীবন ও যোগাযোগ সহজ করে দিয়েছে। এর মাধ্যমে দূরের বা কাছের সবার সাথে কম খরচে ২৪ ঘন্টা খবরাখবর রাখা সম্ভব।
মা-বোনদের অনেককে দেখলে মনে হয় তারা যেন সত্যি সত্যি ২৪ ঘন্টা মোবাইলে কথা বলার খায়েশ পোষণ করেন! অনেক বোনের ফোন রিসিভ করার পূর্বে ১০ বার ভাবতে হয়- এখন কথা বলার জন্য হাতে অন্তত ১০/২০ মিনিট টাইম আছে কি না।
অপ্রয়োজনীয় বেহুদা আলাপ/গালগল্প/হাসি-তামাশা/গীবত/পরচর্চা/চোগলখোরি ইত্যাদি তাদের মাত্র ২ মিনিটের কথাকে চুইংগামের মতো টেনে ২০ মি. এ নিয়ে যায়। অনেকে সংসারের দৈনন্দিন কাজ কর্মের ফিরিস্তি দিন রাতের কোন একটা সময় ১/২ জনকে শেয়ার না করলে রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারেননা! চাওয়া পাওয়া, কেনাকাটা, রান্না বান্না, সন্তানের খাবার-পড়াশুনা ইত্যাদি অতি জটিল কঠিন সাংঘাতিক এবং গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো তারা খুবই সিরিয়াসলি আলাপ করে চলেন ঘন্টার পর ঘন্টা। এতে কিছু মারাত্মক সমস্যা হতে পারে এবং হচ্ছে।
ক. অবসর সময়টুকু স্বামী সন্তানদের না দিয়ে মোবাইলে ব্যয় হচ্ছে।
খ. নিজের অজান্তেই বেহুদা কথা ও মিথ্যা বলা হয়ে যাচ্ছে।
গ. মহিলাদের মাঝে একধরনের অসম প্রতিযোগিতা শুরু হচ্ছে যা সংসারে অশান্তি ডেকে আনছে। পরিবারে ঢুকে পড়ছে অবৈধ ইনকাম।
ঘ. ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ছে।
মোবাইলের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এক্সপোজার দেহের টিস্যুসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে আক্রান্ত করছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ক্যানার গবেষণা রিপোর্ট মতে, মোবাইল ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বললে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি হতে পারে। সবাই জানি, মাটি দূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দুষণের চেয়ে ভয়াবহ তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ। এটা গন্ধ, বর্ণ ও শব্দহীন এবং অদৃশ্য, কিন্তু মানবদেহ ও জীবজগতের জন্য খুব মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই মোবাইল ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বললে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি হতে পারে। আমাদের মা বোনরা এ কাজটি মনে হচ্ছে একটু বেশিই করে যাচ্ছেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, মেয়েরা তাদের মোবাইল ফোনটি রাখেন ভ্যানিটি ব্যাগে। যা তাদের বুকের উপর ঝুলানো থাকে। এরকম অবস্থায় মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর রশ্মি নারীর শরীরে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
এই রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি এক্সপোজার গর্ভবতীদের সমস্যার করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, গর্ভবতীদের উচিত গর্ভধারণের প্রথম ছয়মাস মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেটটিকে সব সময় তলপেট থেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখা।
আরেকটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, একটানা দশ বছর কেউ যদি গড়ে প্রতিদিন ৩০ মি. করে কথা বলে তবে তো তিনি নিজেই নিজেকে ক্যান্সারের হাতে তুলে দিলেন।
এরপরও আপনারা সতর্ক হবেন না, কথা বলা কমাবেন না?!?


৮. পরিবার ও বাচ্চাদের পর্যাপ্ত সময় দানঃ
মনে রাখতে হবে সন্তান পৃথিবীতে আসার পর মায়েরা নিজেদের বাহিরে প্রদেয় সময়ের গলায় ছুড়ি চালাবেন।আমি আত্মীয় স্বজন, দীনের কাজ ইত্যাদিতে সময় না দেয়ার কথা বলছিনা। আমি বলছি সন্তান ও পরিবার গঠনে পরিকল্পিত সময় দানের কথা। মনে রাখতে হবে সন্তানের কাঙ্খিত ভবিষ্যৎ আপনারই হাতে।
এখানে স্মার্ট মায়েদের ভূমিকা নিন্মরূপ হতে পারেঃ

ক. বাচ্চাদের দেখভাল কাজের লোকের উপর ছেড়ে না দেয়া। সমাজ ব্যবস্থা আমাদের কোথায় এনে দাড় করিয়েছে! আফসোস আমরা নিজের কাজ নিজে করাকে আজ ছোটলোকি/গরিবি এবং খেত খেত মনে করি। নিজের সন্তান এবং ঘর দোর কাজের লোকের হাতে তুলে দেয়া কতটা নিরাপদ কিংবা কতটা বিপদজনক তা জ্ঞানবান মাত্রই বুঝতে পারেন। মা-বাবার যত্ন কাজের লোক করতে পারে না। মা-বাবা সন্তানকে যে শিক্ষা, এটিচুড, কালচার ইত্যাদি শিখাবেন তা একজন কাজের লোকের কাছ থেকে আশা করা বাতুলতার নামান্তর।

খ. অহেতুক চাকরি ও ঘুরাঘুরি পরিহার করা। দুই/তিন সন্তানের জননী সময় কাটানোর জন্য অপ্রয়োজনীয় চাকরি করা বা বাহিরে/বান্ধবীদের সাথে বেহুদা আড্ডাবাজির সময় কোথায় পান আমার বুঝে আসেনা। অনেক বোনেরা শুধু পরিচয় দেয়ার জন্য বা স্ট্যাটাস মেইন্টেনের জন্য চাকরি বা কোন কিছুতে এঙ্গেজ হওয়ার চিন্তা করেন। আবার সমাজ থেকেও এমন প্রশ্ন মাঝে মধ্যেই কানে আসে যে, আপনি শুধু বাচ্চাদের সময় দেন, বাসায়ই থাকেন, আর কিছুই করেন না? আশপাশের এমন প্রশ্ন শুনে অনেকে নতুন করে চাকরির ব্যাপারে ভাবতে শুরু করেন। এই সহজ বায়াস্টন্যাস আমাদেরকে অনেক সময় পরিবার থেকে অহেতুক দূরে সরিয়ে রাখে। স্মার্ট লোকেরা সার্কেল খুশি করতে গিয়ে পরিবারকে ঠকান না।

লেখকঃ
আহমাদ ইয়াসিন

পঠিত : ১৬১৪ বার

মন্তব্য: ০