Alapon

"শেখ মুজিব বিদ্বেষীদের সাথে আওয়ামী লীগের মাখামাখি"



আওয়ামী লীগের পোলাপান কিংবা লীগের নেতা-কর্মীরা শেখ মুজিবুর রহমানকে কী বলে? তাদের প্রতিটা কথার পূর্বে, প্রতিটা বক্তব্যের পূর্বে তারা শেখ সাহেবকে তিনটা জিনিস অবশ্যই বলে। কম-বেশ হতে পারে। যেগুলো বলে, সেগুলো হচ্ছে যথাক্রমে :

০১. বঙ্গবন্ধু (মানে বাংলার বন্ধু। এই উপাধিটা ১৯৬৯ সালের ২৩-ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লীগের বর্তমান নেতা, ততকালীন ছাত্রলীগ নেতা, শহীদ আব্দুল মালেকের অন্যতম খুনি, তোফায়েল আহমেদ দিয়েছে)।

০২. হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি।

০৩. জাতির জনক / পিতা ( ১৯৭১ সালের ০৩-ই মার্চ এই উপাধিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে ভূষিত করেন বৃহত্তর নোয়াখালী- আজকের লক্ষীপুরের আ. স. ম আব্দুর রব)।

মোটামুটি এই তিনটা প্রধান পরিচয়েই শেখ মুজিবুর রহমানকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করিয়েছে আওয়ামী লীগের সরকার। এ কারণে এখন যে ব্যক্তি আওয়ামী লীগের কট্টর বিরোধী, সে-ও শেখ মুজিবকে জাতির জনক বলে, বঙ্গবন্ধু ডাকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের এই প্রিয় নেতার টাটকা দুশমন, তার চরম শত্রুদের সাথেই আজকে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে।

আওয়ামী লীগের অন্যতম রাজনৈতিক বন্ধু, তাদের দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী জাসদ এবং জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মৃত কর্নেল তাহের ছিলো প্রচুর পরিমাণে শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্বেষী। এতোটাই বিদ্বেষী ছিলো যে, শেখ সাহেব যখন কতিপয় মানুষের হাতে খুন হলেন, তখন জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির এই সহ-সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে খুনের এক হিংস্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। শেখ মুজিবকে কবর দেওয়াটাও সে সহ্য করেনি। যারা কবর দেওয়ার কাজ করেছে, সে তাদের কাজকে ভুল বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে কবর না দিয়ে লাশটা বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া উচিৎ ছিলো বলে মত ব্যক্ত করেন।
".......তাহের আক্ষেপ করে নঈমকে বললেন, ওরা বড় রকমের ভুল করেছে। শেখ মুজিবকে কবর দিতে এলাও করা ঠিক হয় নাই। এখন তো সেখানে মাজার হবে। উচিত ছিল লাশটা বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেওয়া।"[০১]


অথচ দেখুন, আজকের আওয়ামী লীগের পোলাপান সেই জাসদের সাথে, বাংলাদেশের সমাজ-সংস্কৃতি ও সভ্যতার প্রধান শত্রু এই বামপন্থীদের সাথে রাজনীতি করে। তাদের আন্দোলনে, তাদের প্রেসক্রিপশনে ইসলামপন্থীদের দমন-পীড়ন করে। দেশপ্রেমিক জামায়াতের নিরীহ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে খুন করে। খুনের পথ সহজ করতে তাদের দিয়ে শাহবাগ আয়োজন করায়।

আওয়ামী লীগ যদি সত্যিই পাকিস্তান ভাঙ্গার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসতো, তাহলে তো শেখ মুজিবুর রহমানের এই প্রধান শত্রুদের সাথে রাজনীতি করতো না। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার আগে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুজিব বিদ্বেষী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতো। জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেওয়ার আগে শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্বেষী এসব ব্যক্তিদের ফাঁসি দেওয়া উচিৎ ছিলো। অথচ আজকের আওয়ামী লীগ এবং হাসিনা তা করেনি। বরং দুধ-কলা দিয়ে সাপ পোষার কাজ করে যাচ্ছে। তবে মাহবুবুল আলম হানিফ এবং শেখ সেলিমকে অভিনন্দন। আওয়ামী লীগের মধ্যে অন্তত এই দুজন একবার হলেও মুজিব বিদ্বেষী জাসদের বিরুদ্ধে ওপেনলি কথা বলেছেন।



তথ্যসূত্র :


[০১] মহিউদ্দীন আহমদ, জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি, পঞ্চম সংস্করণ, প্রথমা প্রকাশন, পৃষ্ঠা ১৭৯

~রেদওয়ান রাওয়াহা
১৫.০১.২৩

পঠিত : ৩০৫ বার

মন্তব্য: ০