Alapon

আয়াতে শেফা: রোগ মুক্তি, মুসিবত থেকে উদ্ধার ও সন্তান লাভ...



আল্লাহপাক আমাদের জন্য জীবনব্যবস্থা হিসাবে কুরআন দান করেছেন। এখানে মানবজীবনের তাবৎ প্রয়োজনকে এড্রেস করা হয়েছে। রান্নাঘর থেকে পার্লামেন্ট পর্যন্ত হেন সমস্যা নেই যার সমাধান কুরআনে নেই।

কোনভাবেই কুরআন রোগ নিরাময়ের জন্য নাযিল হয়নি,এটি কুরআনের কাজও নয়।কিন্ত বিশ্বাসী হিসাবে আমাদের বিপদ মুসিবত রোগ শোক সকল অবস্থায় আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে হয়,তাঁর করুনার মুখাপেক্ষী হতে হয় এবং তাঁর কাছে সাহায্য, শিফা ও মুক্তি প্রার্থনা করতে হয়।

আমরা বিশ্বাস করি মানুষের প্রচেষ্টা সীমাবদ্ধ কিন্ত আল্লাহর করুনার কোন সীমা পরিসীমা নেই। চিকিৎসক ব্যর্থ হতে পারেন কিন্ত আল্লাহর কাছে কোন কিছুই অসম্ভব নয়।চূডান্তভাবে রোগমুক্তি,মুসিবতে উদ্ধার ও দু:খের নিরসন তাঁর কুদরাতের হাতে। তাই তাঁর কাছেই আমাদের সমর্পিত হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ,একইসাথে তা ঈমানেরও দাবী।

পবিত্র কুরআনের আয়াতে শেফা নামে পরিচিত আয়াতগুলো হচ্ছে :
১. সুরা তাওবার ১৪ নং আয়াত
وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ
আল্লাহ মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।
২. সুরা ইউনূসের ৫৭ নং আয়াত
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
হে মানবকুল, তোমাদের কাছে উপদেশবানী এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।
৩. ছুরা নাহলের ৬৯ নং আয়াত,
ﻓِﻴۡﻪِ ﺷِﻔَﺎٓﺀٌ ﻟِّﻠﻨَّﺎﺱِ
তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগমুক্তি
৪. সুরা বনী ইস্রাঈলের ৮২ নং আয়াত,
ﻭَﻧُﻨَﺰِّﻝُ ﻣِﻦَ ﺍﻟۡـﻘُﺮۡﺍٰﻥِ ﻣَﺎ ﻫُﻮَ ﺷِﻔَﺎٓﺀٌ ﻭَّﺭَﺣۡﻤَﺔٌ ﻟِّـﻠۡﻤُﺆۡﻣِﻨِﻲ ۡﻥَ
আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের
সুচিকিৎসা এবং মুমিনদের জন্য রহমত
৫. সুরা আশ্-শোয়ারার ৮০ নং আয়াত,
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِينِ
যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।
৬. সুরা হা-মীম এর ৪৪ নং আয়াত
ﻗُﻞۡ ﻫُﻮَ ﻟِﻠَّﺬِﻳۡﻦَ ﺍٰﻣَﻨُﻮۡﺍ ﻫُﺪًﻯ ﻭَﺷِﻔَﺎٓﺀٌ
বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার
এছাড়া আরো তিনটি আয়াত এমন রয়েছে যা নবীগণ আল্লাহর কাছে মুসিতকালে বলেছিলেন এবং আল্লাহপাক তা মন্জুর করেছিলেন।

১.আইউব আ: এর অসুস্থতাকালীন দোয়া
وَأَيُّوبَ إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ
এবং স্মরণ করুন আইয়্যুবের কথা, যখন তিনি তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করে বলেছিলেনঃ আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও সর্বশ্রেষ্ট দয়াবান।

فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَكَشَفْنَا مَا بِهِ مِن ضُرٍّ ۖ وَآتَيْنَاهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا وَذِكْرَىٰ لِلْعَابِدِينَ
অতঃপর আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁর দুঃখকষ্ট দূর করে দিলাম এবং তাঁর পরিবরাবর্গ ফিরিয়ে দিলাম, আর তাদের সাথে তাদের সমপরিমাণ আরও দিলাম আমার পক্ষ থেকে কৃপাবশতঃ আর এটা এবাদত কারীদের জন্যে উপদেশ স্বরূপ।
(সূরা আম্বিয়া :৮৩-৮৪)

২.ইউনুস আ: মাছের পেটে অন্তরীন অবস্থায় এই দোয়া করেছেন
وَذَا النُّونِ إِذ ذَّهَبَ مُغَاضِبًا فَظَنَّ أَن لَّن نَّقْدِرَ عَلَيْهِ فَنَادَىٰ فِي الظُّلُمَاتِ أَن لَّا إِلَٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
এবং মাছওয়ালার কথা স্মরণ করুন তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে চলে গিয়েছিলেন, অতঃপর মনে করেছিলেন যে, আমি তাঁকে ধৃত করতে পারব না। অতঃপর তিনি অন্ধকারের মধ্যে আহবান করলেনঃ তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ আমি গুনাহগার।
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْغَمِّ ۚ وَكَذَٰلِكَ نُنجِي الْمُؤْمِنِينَ
অতঃপর আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনি ভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি।
(সূরা আম্বিয়া:৮৭-৮৮)

৩.যারারিয়া আ: সন্তান লাভের জন্য এই দোয়া করেছেন
وَزَكَرِيَّا إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُ رَبِّ لَا تَذَرْنِي فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ الْوَارِثِينَ
এবং যাকারিয়ার কথা স্মরণ করুন, যখন সে তার পালনকর্তাকে আহবান করেছিল; হে আমার পালনকর্তা আমাকে একা রেখো না। তুমি তো উত্তম ওয়ারিস।
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ وَوَهَبْنَا لَهُ يَحْيَىٰ وَأَصْلَحْنَا لَهُ زَوْجَهُ ۚ إِنَّهُمْ كَانُوا يُسَارِعُونَ فِي الْخَيْرَاتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًا ۖ وَكَانُوا لَنَا خَاشِعِينَ
অতঃপর আমি তার দোয়া কবুল করেছিলাম, তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া এবং তার জন্যে তার স্ত্রীকে প্রসব যোগ্য করেছিলাম। তারা সৎকর্মে ঝাঁপিয়ে পড়ত, তারা আশা ও ভীতি সহকারে আমাকে ডাকত এবং তারা ছিল আমার কাছে বিনীত।
(সূরা আম্বিয়া :৮৯-৯০)

আল্লাহ আমাদের তাঁর বান্দা হিসাবে কবুল করুন।আমিন।

@জামান

পঠিত : ২২২৩ বার

মন্তব্য: ০