Alapon

শিক্ষা-পদ্ধতি কোন জাতিকে মুক্তি দেয়, কাউকে বানায় গোলাম...



হালাকু খান প্রলয় গতিতে দুনিয়ার সবকিছু ছারখার করে চীনের মঙ্গোলিয়া থেকে ধাবিত হচ্ছিলেন ইরাকের দিকে। তার ক্ষুধার্ত বাহিনীর সৈন্যরা পেটের খিদে নিবারণ করতে ঘোড়ার রক্ত পান করছিল। প্রায় উলঙ্গ, উন্মত্ত, দুর্দান্ত, অশিক্ষিত কিন্তু ক্ষিপ্ত গতির এই চৌকশ সেনা দলকে রুখে দিতে তদানীন্তন জমানার আর কোন শক্তি দুনিয়াতে ছিলনা।
এদের নাম ছিল তাতার বাহিনী। তারা ইরাকের সিরাজ নগরীকে ধূলির সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল। ইরাকের মুসলমান হত্যায় ওরা এমনতর নির্দয় নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছিল; মানুষ হত্যা করতে করতে তাদের হাত যুগল দুর্বল হয়ে উঠত; তবুও মানুষ হত্যা থেকে বিরত হতো না!

প্রায় ১৬ থেকে ২০ লাখ মানুষ হত্যা করে তারা ইরাকের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।
ইরাক ছিল তদানীন্তন জমানার ধনী, উর্বর ও সমৃদ্ধ নগরী। সে জমানায় দুনিয়ার সবচেয়ে বেশী শিক্ষিত, সুখী ও সমৃদ্ধশালী মানুষেরাই ইরাকে বসবাস করত। তাই তাতার বাহিনী এই নগরীকে কেন্দ্র থিতু হবার ছিল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ইরাকের সকল কিছুই তাদের করায়ত্ত হল। সকল পুরুষদের হত্যা করে তাদের স্ত্রী কন্যাদের বানানো হল দাসী! এরাই তাতারিদের রঙ্গ মহলের অংশ হয়ে যায়!

এসব রমণীরা দেশ, জাতি, স্বামী-সন্তান, সম্পদ ও ইজ্জত হারিয়েও হতোদ্যম হয়ে পড়েন নি! তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাদের সন্তানদের উচ্চ চরিত্র ও শিক্ষা-দীক্ষায় সেরা করে তুলবেন। ইরাকের ঘরে ঘরে নারীরা শিক্ষাকে অস্ত্র বানিয়ে ফেলেন। ইরাকের ঘরে ঘরে শিক্ষার অস্ত্র ভাল ভাবেই কাজ দিচ্ছিল। তাদের সন্তানদের শিক্ষা ও চরিত্র দেখে তাতার বাহিনীর ও তাদের বংশধরদের এ বিষয়ে আগ্রহ জন্মে। তারা জানতে পারে ইসলামের সুমহান শিক্ষাই সেরা শিক্ষা।

ফলে মঙ্গোলিয়া থেকে ছুটে আসা সকল তাতারিরা একযোগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। পরবর্তীতে তারাই বিশাল মধ্য এশিয়ায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা রাখে। এ থেকে বুঝা যায় মানব জীবনে শিক্ষা একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চোখ বন্ধ করে কারো শিক্ষা যেমন গ্রহণ করা যায়না তেমনি সন্তান কি শিক্ষা পাচ্ছে সেটার হদিস জানা থেকেও পিতা-মাতাকে অন্ধ হওয়া চলেনা। সন্তানকে কি শিক্ষা দিবেন সেটা এখনই চিন্তা করুন। শিক্ষার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি সেটা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকুন।

- নজরুল ইসলাম টিপু

পঠিত : ২৬০ বার

মন্তব্য: ০