Alapon

নিজেকে আর নিজ বলয়কেই শুধু ভালো মনে হয়?




নিজেকে খুব খুব খুউউব্ব ভালো মনে হয়? অন্যদেরকে ভীষণ তুচ্ছ মনে হয়? পবিত্রতার সবটুকুন পরশ একমাত্র তোমার নিজের কাছেই আছে বলে মনে হয়? অন্যদেরকে অচ্ছুৎ আর অপবিত্র মনে হয়?

নিজেকে ঈমান-আমল, সততা-তাকওয়া, নীতি-নৈতিকতার একমাত্র প্রতিভূ মনে হয়?

হকের আধার, বিশুদ্ধতার বহর একমাত্র তোমার নিজেকে এবং নিজের বলয়কে মনে হয়?

থামো! এখানেই থেমে যাও। কুরআনকে তো মানো, তাই না? আল্লাহর প্রতিও তো অগাধ আস্থা আর বিশ্বাস আছে, তাই না? নিজেকে কুরআনের কর্মী, কিংবা দীনের অনুসারী বলে তো পরিচয় দাও, ঠিক না?

যদি তা-ই হয়, তাহলে এসো, কুরআনুল কারিম খোলো। পাতার পর পাতা উলটে যাও। পড়ে দেখো কুরআন। পড়তে থাকো। পড়তে পড়তে চলে যাও পবিত্র কুরআনের চতুর্থতম সুরা, সুরা নিসায়। শুরু থেকে পড়তে পড়তে ৪৯ নাম্বার আয়াতে কারিমে এসে থামো। এই আয়াতের অর্থের দিকে একটু চোখ বুলিয়ে যাও। একটু থেমে থেমে, বুঝে বুঝে পড়ো। কী বলছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা?

أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُزَكُّونَ أَنفُسَهُم ۚ بَلِ اللَّهُ يُزَكِّي مَن يَشَاءُ
তুমি কি তাদের দিকে চেয়ে দেখোনি, যারা নিজেদের আত্মশুদ্ধি আর আত্মপবিত্রতার বড়াই করে বেড়ায়? অথচ শুদ্ধতা আর পবিত্রতা মহান আল্লাহ্ যাদেরকে চান, তাদেরকে প্রদান। [সুরা নিসা :৪৯]


উঁহু, শুধু এই একটি আয়াতই না, আরো আছে। সামনে অগ্রসর হও। পড়তে থাকো। এবার পবিত্র কালামে হাকিমের ৫৩-তম সুরার বত্রিশ-তম আয়াতের দিকে একটু চেয়ে দেখো। নজর দাও। চোখ বুলাও। সরল অনুবাদটা পড়ো। দ্যাখো, মহান মালিক কী বলেছেন! তিনি তো বলেছেন-


فَلَا تُزَكُّوا أَنفُسَكُمْ ۖ هُوَ أَعْلَمُ بِمَنِ اتَّقَىٰ
তোমরা নিজেদেরকে অতি পরিশুদ্ধ-পবিত্র মনে করোনা, কে পরিশুদ্ধ, পবিত্র, কার হৃদয়ে তাকওয়ার ফুল ফুটে আছে, তা তিনিই (মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লাই) ভালো জানেন। [৫৩:৩২]

এই যে দুটো আয়াত, এই আয়াতদ্বয় থেকে কী বুঝলে? কী শিখলে? নিশ্চয়ই এটিই তো শেখার কথা যে — কে অতিপবিত্র-পরিশুদ্ধ, আর কে অপবিত্র ও অশুদ্ধ, সেটা তো মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লাই ভালো জানেন। আমি কিংবা তুমি নও। অন্যের অন্তরকে মাপার স্কেল আমার কিংবা তোমার হাতে নয়। কারো কলবকে মাপার মেশিন রব্বুল আলামিন আমাদেরকে দেননি। হ্যাঁ, সত্যিই দেননি! অন্তরকে মাপার মেশিন রব্বুল আলামিন স্বয়ং নিজের কাছেই রেখেছেন। এই দায়িত্ব তিনি কোনো নবী রাসুল (আ.)-কেও দেননি।

নিজেকে খুব বেশি ভালো মনে করে অন্যদেরকে খারাপ মনে করার, অথবা নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করে অন্যান্যদেরকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার এই নিকৃষ্ট ইজারাদার কিন্তু তুমি কিংবা আমি নও।

আমরা তো শুধু আমাদের যার যার ব্যক্তিগত কাজ এবং নিজের প্রচেষ্টাটুকুই করতে পারি। এরচেয়ে বেশি কিছু নয়।

নিজের কাজ ও দায়িত্বগুলোকে যথার্থভাবে আঞ্জাম দেওয়া, আর সবকিছুর প্রতিদান, সবকিছুর বিচার-বিশ্লেষণ রব্বুল আলামিনের হাতে সোপর্দ করে দেওয়াটাই সবচেয়ে সুন্দর যে.....!

যতো সহজেই বুঝবো, ততোই কল্যাণ। ততোই মঙ্গল। দেরি হলেই ক্ষতি। অকল্যাণ। অমঙ্গল।

~রেদওয়ান রাওয়াহা
১০ /০২/২৩ ইং
https://t.me/RedwanRawaha

পঠিত : ১৮৭ বার

মন্তব্য: ০