কাদিয়ানী সমস্যা এবং কিছু কথা...
তারিখঃ ৫ মার্চ, ২০২৩, ১৪:৫৪
পাকিস্তানি মুসলিম সমাজে কাদিয়ানিরা একটি মূর্তমান সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল। ফলে একজন সচেতন নেতৃত্বস্থানীয় মুসলিম ব্যক্তিত্ব ও গবেষক হিসেবে 'কাদিয়ানি সমস্যা' বই লিখেছিলেন সাইয়েদ মওদূদী রহ.। কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও জানিয়েছিলেন। কাদিয়ানিয়াতের প্রচার বন্ধ করার জন্য গঠিত জোটের কমিটিতে নেতৃস্থানীয় কয়েকজনের অন্যতম ছিলেন।
কিন্তু সেই জোট যখন কাদিয়ানিদের বিরুদ্ধে 'ডাইরেক্ট অ্যাকশন' কর্মসূচি ঘোষণা করে, তখন অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়েই মাওলানা মওদূদী ও তাঁর সংগঠন এই কর্মসূচি থেকে সরে আসেন এবং দাঙ্গার বিরোধিতা করেন।
দাঙ্গায় খুনোখুনি হয়। খুনের পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে গ্রেফতার হন। মাওলানা মওদূদীও গ্রেফতার হন। আদালতে মাওলানা নিজের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, এ ইস্যুতে তিনি সহিংস অবস্থানের বিপক্ষে এবং এর যথার্থ সমাধান তিনি অহিংসভাবেই করতে আগ্রহী। কাদিয়ানিরা মুসলিম পরিচয় দিতে পারবে না এবং তারা ইসলামি পরিভাষা ব্যবহার করে মুসলিমদের মাঝে তাদের বিভ্রান্ত আদর্শ প্রচার করতে পারবে না, এটাই তিনি চান। তাদের নির্মূল করা তাঁর লক্ষ্য নয়।
আর তিনি ডাইরেক্ট অ্যাকশনের মাধ্যমে জনতার আদালত বসানোর ও জনতার বিচারের বিরোধী ছিলেন সব সময়।
কিন্তু কাদিয়ানিরা তাঁর বিরুদ্ধে 'কাদিয়ানি সমস্যা' বইটি দলিল হিসেবে আদালতে পেশ করে এবং অবিবেচক আদালত সরকারি ওপর মহলের নির্দেশে ফাঁসির রায় দিয়ে দেয়। তড়িঘড়ি করে সে রায় বাস্তবায়নের তোড়জোড়ও করে সরকার। অবশ্য পরে নানামুখী আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও চাপে ফাঁসির রায় স্থগিত হয়ে যাবজ্জীবন জেলে গিয়ে ঠেকে রায়টি।
এটাই হলো মূল ঘটনা। কাদিয়ানিবিরোধিতায় মাওলানা মওদূদী ও তাঁর সংগঠনের ঐতিহাসিক অবস্থান এই। এই অবস্থান আপনার দৃষ্টিতে কেমন, সেটা পরের আলাপ। কিন্তু ইতিহাস এটাই।
মন্তব্য: ০