Alapon

প্রাচীন মিশরের ইতিহাস...



মিশরের কথা বললেই আমাদের সামনে ভেসে উঠে উত্তপ্ত মরুভূমি আর পিরামিডের দৃশ্য। যেখানে নেই কোন সবুজের চিহ্ন, নেই নিরিবিলি প্রাকৃতিক ছোয়া। মরুভূমির বুকে পানি আর প্রাণ খুজে পাওয়া যেন অসম্ভব ই বটে। কিন্তু মিশর কি সব সময়েই এমন ছিল? আপনাদের আজ অচেনা এক মিশরের গল্প শুনাবো কুরআন হতে।

মূসা আঃ এর সময়কার মিশর কেমন ছিল! আল্লাহ কুরআনে বলেন-
“ তারা ছেড়ে গিয়েছিল কত উদ্যান ও প্রস্রবণ, কত শস্যক্ষেত্র ও সুরম্য স্থান। কত সুখের উপকরণ, যাতে তারা খোশগল্প করতো ”। - (সূরা দোখান : ২৫-২৭)

অর্থাৎ আমরা এখন মিশরকে যেমন দেখি, প্রাচীন মিশর কিন্তু এমন ছিল না। প্রাচীন মিশর ছিল সবুজে সুবাসিত, ছিল প্রানের প্রধান উৎস পানির নহর। ছিল মনোরম পরিবেশে আচ্ছাদিত একটি দেশ।

কিন্তু সবুজে আচ্ছাদিত একটি দেশ, এখন কি করে তপ্ত মরুভূমিতে ঢেকে গেলো? আসুন তা খুঁজে বের করি আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্যেই!

প্রাচীন মিশর হলো ইতিহাসের সবচেয়ে পুরাতন ও বড় সভ্যতা গুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছে নীলনদ কে কেন্দ্র করে। “The Nile's modern name comes from Nelios, the greek word for river valley.” [1]

নীল নদের তখন সাতটি প্রধান শাখানদী ছিল। বর্তমানে দুইটি প্রধান শাখানদী আছে। প্রতিবছর গ্রীস্মের শেষদিকে নীল নদে পানিত প্লাবিত হয়ে যেতো। সেই প্লাবন আফ্রিকা হতে ভাসিয়ে নিয়ে আসতো পলিমাটি। এভাবেই “নীল ভ্যালির” মাটি হয়ে উঠতো উর্বর। এই উর্বর মাটিতেই গড়ে উঠে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাচীন সভ্যতা।

প্লাবনের উপর ভিত্তি করেই, প্রাচীন মিশরীয়রা মিশরকে তিনটি ঝতুতে ভাগ করেন। FAO এর রিপোর্ট অনুযায়ী প্রাচীন মিশরীয়রাই প্রথম বড় স্কেলে কৃষি চাষাবাদ শুরু করে। তারা প্লাবনের পানিকে সারাবছর ব্যবহার করার জন্যে, “ব্যাসিন ইরিগেশন” সিস্টেম চালু করে। ব্যাসিন গুলো যেন, একেকটি ক্ষুদ্র নদী!

এভাবেই প্রাচীন মিশর হয়ে উঠে কৃষি কাজের তীর্থস্থলে। কিন্তু বর্তমানে তা ঢেকে গেছে সাহারা মরুভূমিতে। কেন এমন হলো? বিজ্ঞানীদের ধারনা-
১. “Slight shift in the tilt of the earth”
২. Changing rainfall pattern ”
যদিও মূল কারন বিজ্ঞানীদের নিকট অজানাই। [২]

এভাবে প্রাচীন মিশরের সুবজ-শ্যামল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য হারিয়ে গেলেও, কুরআন পড়ে আমি সহজেই হারিয়ে যেতে পারি প্রাচীন মিশররের হারানো সেই উদ্যান আর নহরে...
তাই, আমরা কুরআন পড়ার সময় যদি এভাবে কুরআনে কথাগুলো কে হৃদয়পটে অংকিত করতে পারি। তাহলে আমাদের কুরআন পড়ার মজা আরো বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।


~ মাজহারুল ইসলাম

তথ্যসূত্র:
১. history. Com
২. khanacademy. Org

পঠিত : ৩৪২ বার

মন্তব্য: ০