Alapon

কুরআন-হাদীসের আলোকে ”মাহে রমযান” সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন: রমযানের রোযা রাখার বিধান কি?
উত্তর: ঈমানদারগণের উপর রোযা রাখা ফরজ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে: হে ঈমানদারগণ ! তোমাদের ওপর রোযা ফরজ করে দেয়া হয়েছে যেমন, তোমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অনুসারীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল। এ থেকে আশা করা যায়, তোমাদের মধ্যে তাকওয়ার গুনাবলী সৃষ্টি হয়ে যাবে । সূরা আল বাকারা - ১৮৩ ।
প্রশ্ন: কোন মাসে জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেওয়া হয়?
উত্তর: হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: যখন রমযান মাস আসে তখন জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেওয়া হয়। সহীহ বুখারী - ১৭৭৭
প্রশ্ন: সাহরী ও ফজরের সালাতের মাঝে সময়ের ব্যবধান কত?
উত্তর: যায়েদ ইবনে সাবিত (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূল (সা.) এর সঙ্গে সাহরী খাই এরপর তিনি সালাতে দাঁড়ান। ফজরের সালাত ও সাহরীর মাঝে পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করা পরিমাণ সময় ব্যবধান ছিল । বুখারী শরীফ ১৭৯৯
প্রশ্ন: সফর অবস্থায় রোযা পালন করার বিধান কি ?
উত্তর: হযরত আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন আমি রাসূল (সা.) কে বললাম, আমি সফরেও কি সাওম পালন করতে পারি ? নবী (সা.) বললেন: ইচ্ছা করলে তুমি সাওম পালন করতে পারো, আবার ইচ্ছা করলে ছেড়ে দিতে পারো। সহীহ বুখারী - ১৮১৯
প্রশ্ন: রমযানে রাতে রাসূল (সা.) কিভাবে সালাত আদায় করতেন?
উত্তর: আয়িশা (রা.) েেক বর্ণিত রাসূল (সা.) গভীর রাতে বের হয়ে মসজিদে সালাত আদায় করেন, কিছু সংখ্যক পুরুষ তার পিছনে সালাত আদায় করেন। সকালে লোকেরা এ সম্পর্কে আলোচনা করেন। ফলে লোকেরা অধিক সংখ্যাক সমবেত হন। তিনি সালাত আদায় করেন এবং লোকেরা অধিক সংখ্যক সালাত আদায় করেন। সকালে তারা এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তৃতীয় রাতে মসজিদে মুসল্লীর সংখ্যা আরো বেড়ে যায়। এরপর রাসূল (সা.) বের হয়ে সালাত আদায় করেন। চর্তু রাতে মসজিদে মুসল্লির সংকুলন হয় না, কিন্তু তিনি রাতে আর বের না হয়ে ফজরের সালাতে বেরিয়ে আসেলেন এবং সালাত শেষে লোকদের দিকে ফিরে প্রথমে তাওহীদ ও রিসালাতের সাক্ষ্য দেওয়ার পর বললেন: শোন! তোমাদের (গতরাতের অবস্থান আমার অজানা ছিলনা,কিন্তু আমি এ সালাত তোমাদের ওপর ফরজ হয়ে যাবার আশংকা করছি (বিধায় বের হই নাই)। কেননা তোমরা তা আদায় করায় অপারগ হয়ে পড়তে। সহীহ বুখারী - ১৮৮৫
আবূ সালামা ইবনে আব্দুর রহমান (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আয়িশা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করেন যে, রমযানে রাসূল (সা.) এর সালাত কিরুপ ছিল? তিনি বলেন: রমযান মাসে ও রমযান ছাড়া অন্য সময়ে (রাতে) তিনি এগারো রাকা’আত হতে বৃদ্বি করতেন না। তিনি চার রাকা’আত সালাত আদায় করতেন, তার সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য ছিল প্রশ্নাতীত। এরপর চার রাকা’আত সালাত আদায় করতেন, তার সৌন্দর্য ও দৈর্ঘ্য ছিল প্রশ্নাতীত। এরপর তিন রাকা’আত সালাত আদায় করতেন। আমি (আয়িশা রা.) বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি বিতর আদায়ের আগে ঘুমিয়ে যাবেন? তিনি বলেন: হে আয়িশা আমার দু-চোখ ঘুমায় বটে কিন্তু আমার কালব নিদ্রাভিভ’ত হয় না। সহীহ বুখারী - ১৮৮৬
প্রশ্ন: সাওম পালন কারীদের জান্নাতের কোন দরজা দিয়ে প্রবেশের আহŸান করবে?
উত্তর: সাহাল (রা.) বলেন মহানবী (সা.) বলেছেন, জান্নাতে রাইয়ান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সাওম পালন কারীরাই প্রবেশ করবে। সাওম পালন কারীরা ছাড়া কেহ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। সহীহ আল বুখারী - ১৭৭৫
প্রশ্ন: কোন ব্যক্তির সাওম পালন করা দরকার নেই?
উত্তর: আবু হুরায়রা (রা.) েেক বর্ণিত রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ম্যিা কথা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করা (রোযা রাখা) আল্লাহর কাছে কোন প্রয়োজন নেই। সহীহ বুখারী - ১৭৮২

মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে মাহে রমাযানের হক্ব আদায় করে রোযা রাখা ও গুনাহ মাফ করার তাওফিক দান করুক। আমীন

পঠিত : ২০৫ বার

মন্তব্য: ০