Alapon

অতিক্রান্ত হচ্ছে রমাদান : নিজের আমলের দিকে নজর দিচ্ছেন তো?



ইমাম ফখরুদ্দিন রাযী (রহ.) একজন মনীষীর উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, একজন বরফওয়ালার কাছ থেকে আমি সূরা আসরের অর্থ বুঝেছি। সে বাজারে জোর গলায় হেঁকে চলছিলো-
"(হে ক্রেতারা! তোমরা) দয়া করো এমন এক ব্যক্তির প্রতি, যার পুঁজি প্রতিনিয়তই গলে
গলে শেষ হয়ে যাচ্ছে!"


তার কথা শুনে আমি বললাম এটিই হচ্ছে (আসলে সূরা আসরের সেই আয়াতের অর্থ, যেখানে বলা হয়েছে)
"সময়ের কসম! নিশ্চয় মানুষ বড়ই ক্ষতির মধ্যে আছে"।

মানুষকে যে হায়াত দেওয়া হয়েছে, তা বরফের গলে যাবার মতো দ্রুতই শেষ হয়ে যাচ্ছে। একে যদি নষ্ট করে ফেলা হয়, অথবা ভুল কাজে ব্যয় করা হয়, তাহলে সেটিই মানুষের জন্য সবচেয়ে বড়ো ক্ষতির কারণ! (তাফহিমুল কুরআন : সূরা আসরের তাফসির থেকে)

এখন খেয়াল করুন, আল্লাহ আমাদেরকে রহমত বরকত এবং নাজাতে ভরপুর এক পবিত্র মাস দিয়েছে। সেই মহা পবিত্র বরকতপূর্ণ মাসটাকে কি আমরা হেলায়-ফেলায় হারিয়ে ফেলতেছি? নাকি তাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি? সময়গুলো ইবাদাত বন্দেগিতে কাটাচ্ছি, নাকি অলসতায় আর অবহেলায় অতিবাহিত করছি? দান সদাকা করছি, নাকি উল্টো অন্যের হক নষ্ট করে যাচ্ছি এখনো? নিজের ভেতর অনেগুলো বদ অভ্যেসে ছিলো না আপনার? সেই বদ অভ্যেসগুলো কি সংশোধন করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন? নাকি এখনো আঁকড়ে ধরে আছেন?

মনে রাখবেন, এই পবিত্র মাহে রমাদান একটা সুযোগ। এই সুযোগটাও বরফের মতো গলে গলে পার হয়ে যাচ্ছে আমাদের কাছ থেকে। একে যদি যথার্থভাবে কাজে লাগাতে না পারি, তাহলে আমরা আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং ফেরেশতা জিবরাঈল আমীনের অভিশাপে অভিশপ্ত হবো।

মুহাম্মাদ ইবনু আবী উমায়রাহ রা: ছিলেন রাসূল ﷺ এর একজন সাহাবি। তিনি বলেন,
“যদি কোনো বান্দা জন্মের পর থেকে বৃদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা পর্যন্ত আল্লাহ তাআলার আনুগত্যে মাথা নত করে থাকে, তবুও তা কিয়ামাতের দিন তার কাছে তুচ্ছ মনে হবে। তার মনে হবে, 'ইশ! যদি দুনিয়ায় ফিরে গিয়ে আরও আমল করতে পারতাম, তা হলে আমার প্রতিদান আরও বেড়ে যেত। " [ আহমদ ৪/১৮৫ ; সহিহ ]



আসুন, আল্লাহর কাছে আমরা ক্ষমা চাই। ইবাদাত ও আমলে সালিহ আরো অধিক মনোনিবেশ করি। আমাদেরকে ক্ষমা করুন। রমজানের রহমত বরকত ও মাগফিরাতকে লুটেপুটে নেবার তাওফিক দান করুন। সময় ক্ষয়ের ক্ষতি থেকে আমাদেরকে হেফাজত করুন। আ-মী-ন!

~রেদওয়ান রাওয়াহা
২২-শে রমাদান।

পঠিত : ১৮৬ বার

মন্তব্য: ০