Alapon

বাবা ও ভাইয়ের সাথেও পর্দা করুন, যদি সে সেকুলার নাস্তিক হয়ে থাকে........




অস্ত্বিত্বগত ও বস্তুগত দিক থেকে স্ত্রী-মা-খালা-বোন সকলেই নারী, কিন্তু একজন মানুষ কেবল তার ভাবনা ভিন্ন হওয়ার কারণে প্রত্যেকের প্রতি ভিন্ন রকম আকর্ষণ অনুভব করে কীভাবে?

আপনার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আপনি ভালোবাসার সাথে একটা জৈবিকতাও অনুভব করেন; কিন্তু বোনের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসার সাথে অনুভব করেন পূর্ণ নির্মলতা। মা-খালার দিকে তাকিয়ে ভালোবাসার সাথে অনুভব করেন কেবলই নির্মল স্নেহ-মমতার। বস্তুগত বিবেচনায় এই নারীদের মধ্যে কিন্তু কোনো তফাৎ নেই, তাদের শারীরিক কাঠামো মৌলিকভাবে একই রকম; আপনার স্ত্রীর কাছে যা আছে, আপনার বোনের কাছেও তা আছে; কিন্তু আপনার বিশ্বাসের কারণে আপনার অনুভবে আকাশ-পাতাল পার্থক্য সূচিত হয়।

একজন সুস্থ মানুষের জীবনে স্ত্রীর জৈবিকতাপূর্ণ ভালোবাসা যেমন অপরিহার্য, তেমনি মায়ের মমতাপূর্ণ আর বোনের নির্মলতায় ভরা ভালোবাসাও খুবই প্রয়োজন।

প্রশ্ন হলো—একজন মানুষের চিন্তায় এই পার্থক্য কিভাবে সূচীত হয় এবং কী কারণে সে এটিকে রক্ষা করে?

সম্পর্কের মধ্যে এই যে পার্থক্য, এর সূচনাই হলো ধর্ম থেকে। ধর্মই মানুষের মাঝে হালাল-হারামের বিধিবিধান ও পারিবারিক বোধের প্রবর্তন করেছে; পারিবারিক সম্পর্ক, পরিবার গঠন ও পারিবারিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করেছে। পারিবারিক বন্ধনের এই সূত্র, এই মূল্যবোধ যদি হারিয়ে যায়, তাহলে পরিবার হারিয়ে যাবে; যদি পরিবার হারিয়ে যায়, সভ্যতা হারিয়ে যাবে; যদি সভ্যতা হারিয়ে যায় তাহলে মানুষ আর জন্তু-জানোয়ারের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য থাকবে না।

সেক্যুলারিজমকে আমরা যেসব কারণে জংলী অসভ্যতা হিসেবে শনাক্ত করতে পারি, তার মধ্যে একটি হলো—সেক্যুলারজিম স্রষ্টার অস্ত্বিত্বকে অস্বীকার করার চেইন রিঅ্যাকশন হিসেবে মানুষকে একটি উন্নত জন্তু বৈ কিছু ভাবে না। উন্নত যতই ভাবুক, মৌলিকভাবে যেহেতু সে জন্তু-জানোয়ারই রয়ে গেছে, সেহেতু তার জীবনধারায় এর প্রভাব খুব স্পষ্টই থাকে।

যেহেতু বর্তমান পৃথিবীর ক্ষমতা তাদেরই নিয়ন্ত্রণাধীন—তাই পৃথিবীর ধার্মিক মানুষগুলোকে তাদেরই মতো জন্তু-জানোয়ারে রূপান্তরিত করার জন্য তাদের বিলিয়ন ডলারের অসংখ্য প্রকল্প রয়েছে। এইসব প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি হলো অযাচার প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে তারা অযাচারকে নর্মালাইজ করার জন্য নানারকম কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অবাধ যৌনাচারের চর্চা-সংবলিত অসংখ্য চটি বই, হাজার হাজার পর্ণগ্রাফি তারা ছড়িয়ে দিয়েছে। এসব কন্টেন্ট যে সাধারণত দু পেয়ে জন্তুগুলোই তৈরি করে থাকে, তার একটি জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ হলো—এদেশের এক বিখ্যাত নাস্তিককে মানুষ চিনতই ‘চটি…’ নামে।

সেক্যুলারিজমকে কেন জংলী অসভ্যতা বলা আবশ্যক—তার একটি প্রমাণ পাবেন কুকুর শ্রেণির জন্তু-জানোয়ারদের জীবন থেকে। এই জন্তু-জানোয়ারগুলো সাধারণত দুই বছর পর্যন্ত তার জন্মদাতা, গর্ভধারিনী ও সহদরদেরকে শনাক্ত করতে পারে। এরপর তার কাছে সেই সন্তান, পিতামাতা কিংবা ভাইবোন—সবাই-ই আর অন্য পাঁচটা প্রাণির মতোই গণ্য হয়। তাই এই জন্তু-জানোয়ারগুলো এরপর নিজ ভাইবোন, কিংবা পিতামাতার সাথে যৌনাচারে লিপ্ত হতে পারে।

সেক্যুলাররা যেহেতু মানুষকে জন্তু-জানোয়ারই মনে করে, তাই তারাও এমন অযাচারকে স্বাভাবিক মনে করে।

আমরা মানব ইতিহাসের খুবই জটিল একটি সময় পার করছি। প্রায় গোটা পৃথিবীর ক্ষমতা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই দু’পেয়ে জানোয়ারদের হাতে। সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্র আজ নাস্তিকতা ও অশ্লীলতার জোয়ার বইছে। ট্রেডিশনাল মুসলিম পরিবারের ছেলেমেয়েরাও আজকাল সেক্যুলারিজম প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে সেক্যুলার নাস্তিক হয়ে যাচ্ছে—কেউ গোপনে, কেউ প্রকাশ্যে।

আমাদের মুসলিম পরিবারের সচেতন সদস্যদের উচিত—এ-ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা। বিশেষ করে আমাদের মা-বোনদের জন্য এই সাবধানতা আরও বেশি জরুরি।

আপনার পিতা কিংবা ভাই যদি সেক্যুলারিজমে বিশ্বাসী হয়, তাহলে আপনার সতীত্ব তার কাছে নিরাপদ নাও হতে পারে। কারণ, মহান আল্লাহর দেওয়া যে-ধর্মের কারণে মা কিংবা বোন একটা বিশেষ পবিত্রতার বন্ধনের আবদ্ধ হয়, আপনার সেক্যুলার পিতা কিংবা ভাই সেই স্রষ্টাকে এবং তাঁর দেওয়া ধর্মকেই স্বীকার করে না। আর এর অবধারিত পরিণতি হলো আপনি তার কাছে আর অন্য পাঁচজন নারীর মতোই যৌনভাবে আকর্ষণীয় ও কাঙ্ক্ষিত হয়ে উঠবেন।

বিশ্বাসগত দিক থেকে আমাদের সমাজে অসংখ্য মানুষ সেক্যুলার হয়ে গেলেও সামাজিক দিক থেকে নানা ঐতিহাসিক এখনো অনেকটা রক্ষণশীলতা বজায় আছে। সেক্যুলারগুলো হয়তো এই সামাজিক চাপে তাদের ঘৃণ্য লিপ্সা চরিতার্থ করতে পারে না; কিন্তু আমাদেরকে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পারিবারিক পরিবেশে আমরা অনেক সময় একটু খোলামেলা পরিবেশে থাকি। ঈদ-কুরবানি, বিয়েশাদি কিংবা বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানাদির সময় স্থান সংকুলানে কষ্ট হলে অনেক সময় অনেকে এদেরকে একই বিছানায় হয়তো ঘুমাতেও দিয়ে থাকে। এসব ক্ষেত্রে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

এগুলো তো গেল শারীরিকভাবে যেন আমাদের মুসলিম মা-বোনেরা পরিবারের সেক্যুলার নাস্তিকদের হাতে হেনস্তার শিকার না হন সেই প্রসঙ্গ। এমনিতেও কোনো ব্যক্তি যদি সেক্যুলার আদর্শ গ্রহণ করে নেয়, সেক্ষেত্রে সে আর ইসলামের গণ্ডির মধ্যে থাকে না। তারপর সে জন্মসূত্রে কারও ভাই হোক কিংবা পিতা, কিংবা নিকটাত্মীয়— তার সাথে একজন বিধর্মীর মতোই পর্দা রক্ষা করে চলা আবশ্যক।

পঠিত : ২৭০ বার

মন্তব্য: ০