Alapon

পর্ন, রেডিট, পমপম, টেলিগ্রাম



লেখাঃ তাসাউফ

আপনি যদি রেডিট ইউজার হয়ে থাকেন, আপনার জানা থাকবে যে কয়েক বছর আগ পর্যন্তও রেডিটে কিছু সাবরেডিট ছিল (কিছু নতুন ছোট সাবরেডিট এখনো আছে) যেগুলোতে মূলত ননকন্সেন্সুয়াল পর্ন শেয়ার হইত। অর্থাৎ যার সেন্সিটিভ ছবি/ভিডিও, তার পারমিশন ছাড়াই সেই কনটেন্টগুলো ছড়ানো হইত।

(পরিষ্কার করা দরকার যে, এইখানে কোন পর্ন একট্রেসের কথা বলা হচ্ছে না, ভিকটিমরা বেশিরভাগই খুবই সাধারণ মানুষজন। হয়ত তারা কোন বয়ফ্রেন্ডকে বিশ্বাস করে কোন সেন্সিটিভ কনটেন্ট দিয়েছেন, নাহয় তাদের অজান্তেই তাদেরকে রেকর্ড করা হয়েছে, অথবা মোবাইল/ফেসবুক আইডি হ্যাকের মাধ্যমে তাদের কোন সেন্সিটিভ ছবি লিক হয়েছে।)
সাবরেডিটগুলোতে ঢুকলেই আপনি দেখতে পারতেন অসংখ্য পোস্ট, কোন না কোন ছেলে এনোনিমাস একাউন্ট থেকে কোন মেয়ের ফেসবুক/ইন্সটাগ্রাম থেকে ছবি নিয়ে আপলোড করে জানতে চাচ্ছে ঐ মেয়ের সেন্সিটিভ ছবি/ভিডিও কারো কাছে আছে কিনা। কমেন্ট সেকশনে গেলে এইটাও দেখা যাইত যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আসলেই রেস্পন্স আসছে পরবর্তীতে তারা ইনবক্সে সেই কনটেন্ট শেয়ার/কেনাবেচা করত।

এই কালচারটা এত ছড়িয়ে গিয়েছিল যে আপনি যদি র‍্যান্ডমলি কোন মেয়ের নাম ধরে ঐ গ্রুপগুলাতে সার্চ দেন, তাহলে দেখবেন কেউ না কেউ এনোনিমাস একাউন্ট খুলে ঐ গ্রুপে যেয়ে ঐ মেয়েটার ন্যুড খুজতেসে আর নাইলে কয়েকজন মিলে ঐ মেয়েটার নামে রগরগে ডিস্কাশন চালিয়ে যাচ্ছে।

এইখানে সাপ্লায়ারদের ক্যাটাগরি ছিল দুই ধরণের।
১- যারা অনেকদিন ধরে সময় নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে লিকড হওয়া সেন্সিটিভ কনটেন্ট কালেক্ট করে একটা কালেকশন বানিয়েছে, মূলত সেগুলো কমার্শিয়ালি বেচাকেনার জন্য,
২- প্রতিশোধ নিতে চাওয়া কোন এক্স বয়ফ্রেন্ড যারা অনেকক্ষেত্রে রিজেকশন বা ব্রেকাপের কারণে প্রাক্তনের কাছ থেকে পাওয়া কোন সেন্সিটিভ কনটেন্ট লিক করে দিত ক্ষতি করার জন্য।

রেডিটের এই গ্রুপগুলো আমার নজরে আসে আমার ফ্রেন্ডলিস্টের একজন ভিকটিম হওয়ার পরে। ঐ মেয়েটাকে হঠাত তার ফ্রেন্ড জানায় যে তার এক ছবি নাকি ঐরকম একটা গ্রুপে গিয়ে ন্যুড খোজা হচ্ছে, এরপরে তিনি ঐ গ্রুপে গিয়ে দেখেন যে ঐদিন দুপুরেই উনি এক রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিলেন, সেই সময় তার অজান্তে কেউ তার ছবি তুলে নিয়ে সেই ছবিই গ্রুপে পোস্ট দিয়েছে।

আমি তখন কিছুদিন ঘাটাঘাটি করে দেখেছিলাম এই কালপ্রিটদের পরিচয় কোনভাবে বের করা যায় না, কিন্তু সম্ভব হয় নাই। এইসব গ্রুপের এডমিনরা যথেষ্ট সাবধান ছিল।
কিছুদিন পরে রেডিট ক্র্যাকডাউন করে এই গ্রুপগুলোর উপরে, আর আস্তে আস্তে এই গ্রুপগুলো মুভ করে টেলিগ্রামে, যেখানে তারা আরো সেফলি এই কাজগুলো করে যেতে পারে টাকার বিনিময়ে।

এই জায়গাতেই আসে টেলিগ্রাম, পমপম গ্রুপ।
‘পমপম’ নামে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের মূলহোতাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে হাজার হাজার কিশোরী-তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল করে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও আদায়ের পাশাপাশি অর্থ দাবি করতো। এছাড়া এসব ছবি-ভিডিও বিক্রি করে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও দাবি করেছে সিআইডির।

রেডিটের জায়গায় টেলিগ্রাম কেন?
টেলিগ্রামে পর্ন শেয়ারিং আরো বেশি সিকিউর। গ্রুপগুলোতে শুধুমাত্র এডমিনরাই কাউকে এড করতে পারে মডারেশনের মাধ্যমে যেইটা রেডিটে সম্ভব ছিল না, আর টেলিগ্রামে এডমিন এবং মেম্বাররা আরো সহজে নিজেদের পরিচয় লুকিয়েই এসব করে যেতে পারে ধরা পড়ার ভয় ছাড়া। ফলে পুলিশ বা কোন স্পাই এই গ্রুপগুলোতে ঢুকতে পারত না, আর কেউ ঢুকতে পারলেও এডমিনদের পরিচয় জানতে পারত না।

পমপম এবং অন্যন্য গ্রুপগুলোর মডেলটা একটু এক্সপ্লেইন করি।
এদের সোর্স এবং স্ট্র্যাটেজি কয়েক ধরণের।
১- কোন মেয়ের সাথে ব্রেকাপের পরে নিজে থেকেই কোন ছেলে তার এক্সের ন্যুড বা ভিডিও শেয়ার করত, সেই কনটেন্ট নিয়ে ২০-৩০ সেকেন্ডের প্রমো বানিয়ে "টিজার" বানাইত এডমিনরা, সেই টিজার দেখে যারা ফুল ভিডিও/কনটেন্ট দেখতে চাইত তাদের কাছ থেকে সাবস্ক্রিপশন ফি নিয়ে তাদেরকে সেই কনটেন্টের এক্সেস দেয়া হইত।

২- কারো সাথে প্রেমের অভিনয় করে কোন না কোনভাবে তার ন্যুড বা সেন্সিটিভ কোন কনটেন্টের এক্সেস নেয়া।

৩- কোন মেয়ের ফেসবুক/ইন্সটাগ্রাম হ্যাক করে চ্যাট হিস্টোরি বা অন্য কোন উপায়ে সেন্সিটিভ কনটেন্ট এক্সেস করা। এইক্ষেত্রে পমপম গ্রুপ একটা পদ্ধতির কথা স্বীকার করেছে, ফেসবুকে আইডি রিকভারির জন্য কোন আইডেন্টিফিকেশন ডকুমেন্ট সাবমিট করে আইডি রিকভারির সুযোগ আছে।

এই গ্রুপ কোন মেয়ের ফেক এনআইডি (NID) বানিয়ে সেইটা দিয়ে ফেসবুকে ঐ মেয়ের আইডি রিকভারির এপ্লিকেশন দিয়ে আইডি হ্যাক করে তার সেন্সিটিভ কোন কনটেন্টের এক্সেস নিত। এছাড়াও সম্ভবত আরো কিছু উপায়ে তারা মেয়েদের আইডি হ্যাক করত।
৪- কারো ফোন চুরি হইলে অথবা ফোন দোকানে ঠিক করতে দিলে সেইখান থেকে ফোনের স্টোরেজ থেকে সেন্সিটিভ কনটেন্ট এক্সেস করা।

উপরে ২,৩,৪ নাম্বার উপায়ে যেসব মেয়ের সেন্সিটিভ ছবি/ভিডিওর এক্সেস তারা পায় পারমিশন ছাড়া সেই মেয়েদেরকে পরে তারা কন্ট্যাক্ট করে, এবং ভয় দেখায় যে টাকা দিতে না পারলে সেইসব ছবি/ভিডিও ভাইরাল করে দিবে।

যদি কোন মেয়ে টাকা দিতে না পারে তাহলে তাদেরকে বাধ্য করা হইত ভিডিওকলে এসে আপত্তিকর দৃশ্য ধারণ করতে, নাইলে থ্রেট দেয়া হইত যে তাদের ছবি/ভিডিও লাখ লাখ সাবস্ক্রাইবারের টেলিগ্রাম গ্রুপগুলোতে আর পর্ন সাইটগুলোতে ছেড়ে দেয়া হবে।
যারা রাজি হইত তাদের ভিডিও রেকর্ড করে এই গ্রুপগুলো বিক্রি করত, আর যারা রাজি হইত না তাদের সেন্সিটিভ কনটেন্ট পারসোনাল ইনফরমেশনসহ ঐ গ্রুপগুলোতে ছেড়ে দেয়া হইত। যেহেতু আমার আপনার আশেপাশের অনেক মানুষই এই গ্রুপগুলায় যুক্ত, তারা তাদের পরিচিত কোন মেয়ের ছবি/ভিডিও ঐসব গ্রুপে দেখলে আস্তে আস্তে মেয়েটার পরিচিত বেশিরভাগ মানুষই সেগুলোর এক্সেস পেয়ে যাইত বা জেনে যাইত, মোদ্দা কথায় মেয়েটার জীবন জাহান্নাম হয়ে যাইত। এইটার ভয়েই বেশিরভাগ ভিকটিম রাজি হইত টাকা দিতে নাহয় ভিডিওকলে আসতে। আর মেয়েটার পরিচিত কেউ ঐ গ্রুপে না থাকলেও, যেহেতু পারসোনাল ইনফরমেশন, ফেসবুক আইডি সহ লিক করা হইত, ঐ গ্রুপের মানুষজনের জন্যেও সহজ ছিল ঐ মেয়েকে খুজে পাওয়া।

আমাদের পুলিশের যেই ট্র্যাক রেকর্ড আর এফিশিয়েন্সি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই মেয়েদের অনেকে পুলিশের সাহায্য নেয়ার সাহত পাইত না।

এইসব গ্রুপের কাস্টমার শুধু বাংলাদেশি ছিল না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে তাদেরকে "প্রিমিয়াম" কনটেন্ট সাপ্লাই দিয়ে টাকা কামাই করত এই গ্রুপগুলোর এডমিনরা।

এখানে উল্লেখ করা দরকার, ভিকটিমদের অনেকের বয়সই ১২-১৮ বছরের মধ্যে। যেহেতু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে চাইল্ড পর্ন পেডলিং এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়া হয়, বিভিন্ন দেশের অনেকেই তাই বাংলাদেশের এই টেলিগ্রাম গ্রুপের এডমিনদের কাছ থেকে অপ্রাপ্তবয়ষ্ক মেয়েদের ন্যুড/ভিডিও কিনে দেখত বা সংরক্ষণ করত।

একজন ভিকটিমের কাছ থেকে পাওয়া একটা বিকাশ নাম্বারেএ মাধ্যমে এক সন্দেহভাজনের খোজ পাওয়া যায়, সেই এডমিনকে তল্লাশি করার সময় তার একটা ডিভাইসে মার্ক সাকারবার্গ (পমপম গ্রুপের এডমিনের ইউজার নেম) আইডি লগড ইন অবস্থায় পায় পুলিশ। এরপরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী আরো কয়েক এডমিনকে চট্টগ্রাম থেকে এরেস্ট করে পুলিশ। এরপরে গ্রুপের যেসব এডমিন ঢাকায় তাদের জন্য এরেস্ট হওয়া এডমিনদের আইডি দিয়ে টোপ ফেলা হয় ঐ গ্রুপের এডমিনদের একটা গেট টুগেদারের কথা বলে। বেইলি রোডের একটা রেস্টুরেন্ট ঐ গেট টুগেদার এটেন্ড করতে আসা বান্দাদের এরেস্ট করে সিআইডি। এই পর্যন্ত এরেস্টেড হয়েছে ১৯ জন।

এদের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেইলিং, সাইবারসিকিউরিটি এক্ট, ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট আর পর্নোগ্রাফিক এক্ট ছাড়াও মানি লন্ডারিং এক্টেও মামলা হচ্ছে, কারণ এরা বিভিন্ন মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করে এসেছে এতদিন ধরে।

কিন্তু এখনো অনেকটা পথ বাকি আছে। এই এক পমপম গ্রুপেই এক্টিভ মেম্বার ছিল লাখ লাখ বাংলাদেশি যারা রেগুলারলি ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে পাওয়া এইসব কনটেন্ট এঞ্জয় করত, এরকম আরো অনেক টেলিগ্রাম গ্রুপ আছে, সেগুলোকেও রুট আউট করতে হবে। বাইরের কিছু দেশের মত পুলিশের উচিত একটা আলাদা সেল এস্টাব্লিশ করা এইসব ভিকটিমদের সাপোর্টের জন্য, যাদের কনসেন্ট ছাড়া কোন সেন্সিটিভ কনটেন্টের এক্সেস নিয়ে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে অথবা কোন গ্রুপ/ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। পুলিশ বা কোন অর্গানাইজেশনের সাহায্য ছাড়া কোন ভিকটিমের পক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নেয়া প্রায় অসম্ভব।

এত লম্বা পোস্ট পড়ে আসলে আপনাদের প্রতি কিছু অনুরোধ/পরামর্শ আছে আমার।

১- এই ধরণের পার্ভারশন থেকে দূরে থাকেন। যদি আপনার মনে হয় আপনার পেডোফিলিয়া আছে বা এভাবে নন কনসেন্সুয়াল পর্ন দেখার টেন্ডেন্সি আছে, সাইকোলজিকাল হেল্প নেন। কিন্তু নিজের পার্ভার্শনের জন্য ডিরেক্টলি বা ইনডিরেক্টলি কোন মেয়ে/শিশুর ক্ষতি করবেন না।

২- আপনার কোন বন্ধু যদি আপনার সাথে এমন কোন গ্রুপ/ নন কন্সেন্সুয়াল কনটেন্ট শেয়ার করে, হয় সেই বন্ধুকে শোধরানোর চেষ্টা করেন আর নাইলে সেই বন্ধু থেকে সাবধান থাকেন। যদি কোনভাবে এসব গ্রুপের এডমিন কারো হদিশ পান, পুলিশের সাথে তার পরিচয় শেয়ার করেন।

৩- এমন কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হওয়ার দুর্ভাগ্য আমার হয়েছে যারা মনে করে কোন মেয়ে যদি বয়ফ্রেন্ডকে দেয়ার জন্য ন্যুড রেকর্ড করে, তাহলে সেই মেয়ের ন্যুড বাকি সবার দেখাও জায়েজ, কারণ মেয়েটা "নষ্ট", সে যেহেতু ন্যুড রেকর্ডই করেছে, তাইলে সেইটা অন্যরা দেখলেও বা সমস্যা কই! এমন জাস্টিফিকেশনও শুনার সৌভাগ্য হইসে যে মেয়েদের ন্যুড লিক করা আসলে ভাল কাজ কারণ তাইলে কোন ছেলে মেয়েদের সাথে প্রেম/বিয়ের আগে সার্চ দিয়ে দেখতে পারে মেয়ের কোন অতীত আছে কিনা।

এদেরকেও আপনি শোধরানোর চেষ্টা করে দেখতে পারেন, নাইলে এদের কাছ থেকে ১০০ হাত দূরত্ব বজায় রাখবেন। একটা মেয়ে যদি কোন সময় তার মোবাইলে কোন সেন্সিটিভ কনটেন্ট রেকর্ড করে থাকে তার মানেই এই না দুনিয়াজোড়া সবার সেইটা দেখার অধিকার আছে। অনেকক্ষেত্রেই এইসব কাউকে দেয়ার জন্যে রেকর্ড করা হয় এমনও না, মেয়েদের মোবাইল, সোশাল মিডিয়া হ্যাক করে যে এইসব কনটেন্টের এক্সেস নেয়া হয় সেইটা আমি উপরেই ব্যাখা করেছি।

আপনার যদি মনে হয়েও থাকে যে মেয়েটা ন্যুড রেকর্ড/শেয়ার করার কারণে খারাপ এবং এইসব ডিজার্ভ করে, আপনাকে আমি এইটুকু রিজনেবল ডাউট দেই যে অনেকক্ষেত্রে কোন মেয়ের অজান্তে কোন না কোনভাবে তার সেন্সিটিভ ছবি/ভিডিও রেকর্ড করে সেইটা দিয়েই তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয় নতুন করে ভিডিও রেকর্ড করতে। অতএব এরকম "লিক" হওয়া কোন কন্টেন্ট দেখে কনফিডেন্টলি আপনার মোরাল হাই গ্রাউন্ড নেয়ার কোন সুযোগ নাই যে মেয়েটা আপনার "স্ট্যান্ডার্ড" অনুযায়ী "খারাপ"।

৪- নিজের সোশাল মিডিয়া একাউন্ট আর আপনার রোমান্টিক পার্টনার নিয়ে সাবধান হন।
পার্টনারের সাথে কিছু শেয়ার করলেও সেইটা সেফ কোন মিডিয়ামে শেয়ার করেন, এমন যাতে না হয় পার্টনারের সাথে বাজেভাবে ব্রেকাপের পরে সে আপনার কোন সেন্সিটিভ কনটেন্ট লিক করে দিল প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। আর কারো সাথে রিলেশনে (ইসলামে বিয়ের আগে কোন মেয়ের সাথে সম্পর্ক করা স্পষ্ট হারাম_ তাসাউফ ) যাওয়ার আগে অন্তত চেক করে নিবেন মানুষটা যেই পরিচয় আপনাকে দিচ্ছে সেইটা সঠিক কিনা।
এমন অনেক কেইস আমার কাছে এসেছে যে ঢাবির বা সিএসইর স্টুডেন্ট পরিচয় দিয়ে কোন ছেলে মেয়েদের সাথে প্রেম করেছে বা করার চেষ্টা করেছে এবং পরে মেয়েটার কাছ থেকে ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সার্চ দিলেই এই ধরণের নিউজও পাবেন যে বিসিএস ক্যাডার/পুলিশ পরিচয়ে প্রেমের অভিনয় করে প্রতারণার কাহিনী। বেশিরভাগ মানুষই খালি কিছুক্ষণ মেয়েটা কেন গোল্ডডিগার এই নিয়ে হাসাহাসি করেই এই ইস্যুগুলো স্কিপ করে ফেলেন, যেইটা করা উচিত না।

পমপম গ্রুপের এরেস্টের এই নিউজটাও নিউজপেপারগুলো কিছুটা ক্লিকবেইটের মত ক্যাপশন দিয়ে আপলোড করেছে, ফলে সেইখানেও এত সিরিয়াস একটা ইস্যু নিয়ে হাহার বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

সোশাল মিডিয়া একাউন্টগুলোতে টু ফ্যাক্টর ভেরিফিকেশন ইউজ করেন, পাসওয়ার্ড যতটা সম্ভব ইউনিক রাখেন, মোটামুটি যতটা নিরাপদ রাখা যায় আরকি সব কিছু। ফোনের ফাইন্ড মাই ডিভাইস অন রাখবেন, যাতে ফোন চুরি হইলেও রিমোটলি ফোনের সব ডাটা ইরেজ করে দেয়া যায়।

৫- কয়েক বছর আগেও বিখ্যাত পর্ন ওয়েবসাইটগুলোতে এই ধরণের রিভেঞ্জ/নন কন্সেন্সুয়াল পর্ন ছিল অনেক বেশি। অনেক অভিযোগ আর পেমেন্ট গেটওয়েগুলোর প্রেশারে আস্তে আস্তে মেজর ওয়েবসাইটগুলো বাধ্য হইসে কিছু চেক ইন্ট্রোডিউস করতে, যাতে কারো কনসেন্ট ছাড়া তার সেন্সিটিভ কনটেন্ট ঐ সাইটগুলোতে দেয়া না যায়।
ফলে ঐ ওয়েবসাইটগুলোতে এখন নন কন্সেন্সুয়াল পর্ন প্রায় নাই বললেই চলে।
মাথায় রাখবেন যে আপনি যদি টেলিগ্রামের সিক্রেট গ্রুপ বা রেডিটের এরকম কোন সাবরেডিটে গিয়ে পর্ন দেখেন, প্রায় ৯৯% গ্যারান্টির মাধ্যমে বলা যায় যে ঐ ছবি/ভিডিওগুলা নন কন্সেন্সুয়াল।

যদি কঞ্জিউমার না থাকে একটা মার্কেট ফাংশন করে না। ডু নট বি আ কঞ্জিউমার অফ ব্ল্যাকমেইল এন্ড চাইল্ড পর্ন।

৬- ভাংগা রেকর্ডের মত আবার রিপিট করি, সেক্স এডুকেশন বাংলাদেশে চালু করাটা এখন ইমার্জেন্সি। সবাই সেক্স নিয়ে সবকিছুই শিখে পর্ন ওয়েবসাইট বা এইসব টেলিগ্রাম/রেডিট গ্রুপের মাধ্যমে, ছোটবেলা থেকে তাই বেশিরভাগক্ষেত্রেই কাউকে শেখানো হয় না কোনটা করা উচিত আর কোনটা করা উচিত না। তাই যেই ছেলেটার টাকা চুরি করতে গেলে হয়ত হাত কাপবে সেই ছেলেটার কোন মেয়েকে ব্ল্যাকমেইল করতে বা ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে পাওয়া কোন কনটেন্ট এঞ্জয় করতে কোন সমস্যা হয় না। পুলিশ যাদেরকে গ্রেফতার করেছে তাদের অনেকের বয়সই ২০-২২ বছর, ঠিকমত শিক্ষা পাইলে হয়ত তাদের কেউ এমন কোন কাজের সাথে জড়িয়ে পড়ত না। যদি আপনার বাচ্চাকে আপনি নিজে বা আপনার স্কুল এসব না শেখায়, ঐ বাচ্চা যা শেখার সব কিছুই শিখবে এসব ওয়েবসাইট থেকে বা কোন খারাপ বন্ধুর কাছ থেকে। আপনি কি সেই রিস্ক নিতে ইচ্ছুক?
নতুন জেনারেশনের কাছে পর্নের এক্সেস বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব, যেটা করতে হবে তা হচ্ছে নেক্সট জেনারেশনকে শেখানো কীভাবে সাইবারস্পেস হ্যান্ডল করতে হয়, কীভাবে সাবধান থাকতে হয়, কোনটা ঠিক আর কোনটা ঠিক না। নাইলে আপনার নিজের কাছের কোন মানুষই এরকম কোন কেইসে ভিকটিম হয়ে যাইতে পারে, অথবা কালপ্রিট।

পঠিত : ৪০০৯ বার

মন্তব্য: ১

২০২৩-০৫-২৭ ১৮:৪৬

User
Masum Billah Bin Nur

ভয়বহ ব্যাপার!
যখন পড়ছিলাম, মাথা ঘুরে যাচ্ছিল....

পর্দার শিক্ষা প্রসার ও প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব কতখানি তা সহজেই অনুমেয়।

submit