Alapon

ইসলাম ও আমাদের মানসিকতা; একটি গল্প

এক মদ্যপায়ী এক আলেমে দ্বীনকে প্রশ্ন করল-আচ্ছা বলুন তো যদি আমি খেজুর খাই তাহলে কি এতে ইসলামে কোন নিষেধ আছে?
আলেম- না, কোনো নিষেধ নেই।
মদ্যপায়ী- এর সাথে যদি কোন ঔষধী বৃক্ষের মূল মিশিয়ে খাই তাতে কি কোন সমস্যা আছে?
আলেম- না,নেই।
মদ্যপায়ী- এর সাথে যদি আমি পানি মিশিয়ে খাই তাহলে?
আলেম- তৃপ্তি সহকারে খাও।
মদ্যপায়ী- যখন এ সমস্ত জিনিসই জায়েয এবং হালাল, তাইল মদকে কেন হারাম বলে। অথচ এর মধ্যে তা ঐ বস্তু সমূহই রয়েছে যাকে খেতে ও পান করতে আপনি নির্দেশ দিতেছেন। অর্থাৎ খেজুর, পানি আর কিছু ঔষধী বৃক্ষের মূল।
আলেম- যদি তোমার উপর পানি নিক্ষেপ করা হয় এতে কি তোমার কোন সমস্যা হবে?
মদ্যপায়ী- না কখনো না। পানি পরলে কি সমস্যা হবে!
আলেম- আচ্ছা ঐ পানির সাথে যদি মাটি গুলিয়ে দেয়া হয় তাহলে কি তুমি মরে যাবে?
মদ্যপায়ী- জনাব কাদার আঘাতে কাউকে কোন দিন মরতে দেখি নাই।
আলেম- যদি মাটি, পানি এক সাথে করে একটা ইট বানিয়ে তাকে শুকিয়ে তোমার উপর মারি, তাতে কি তোমার কোনো সমস্যা হবে?
মদ্যপায়ী- জনাব এতে তো আপনি আমাকে কতল করে ফেলবেন।
আলেম- মদেরও একই অবস্থা।

উপর্যুক্ত ঘটনার মতো আমাদের দেশে ইসলামের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলাটা খুবই সহজ একটি বিষয়। অনেক সময় মনে হয় এটাই বুঝি সবচেয়ে সহজ কাজ! যে যার মতো ইসলাম নিয়ে কথা বলে যাচ্ছে, যে যেভাবে ইসলামকে বুঝতে পারছে সেইভাবেই ইসলামকে ব্যাখ্যা করছে আর তার ব্যাখ্যাটিকেই সঠিক বলে মেনে নিচ্ছে। কেউ একজন কুরআন পড়ল আর সে তার মস্তিষ্ক চাষ করে যা বুঝতে পারল তাই ইসলাম বলে চালিয়ে দিচ্ছে। ইসলাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে কিন্তু অধিকাংশ লেখাতেই নেই কোন রেফারেন্স, যে যতটুকু বুঝতে পারল সেইভাবেই সে ততটুকু তুলে ধরছে। সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের সুযোগ কিংবা সময় কিংবা ইচ্ছা তাদের হচ্ছে না। আচ্ছা বিষয়টিকি এতটাই সহজ? আমরা যারা ইসলাম নিয়ে লিখে থাকি তাদের সর্বপ্রথম খেয়াল রাখতে হবে- ‘ইসলাম’ অহি’র মাধ্যমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসেছে, কারো মস্তিষ্ক চাষ করা কোন মতবাদ নয়, যে যেভাবে বলবে বা ব্যাখ্যা করবে তাই ইসলাম নয়।

লোকদের নিকট ইসলামের কথা, হকের বাণী পৌছাতে হবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ‘ইসলাম’ সম্পর্কিত সব কিছুই এসেছে ‘অহি’ আকারে তিনি নিজের থেকে কোন কিছু বানিয়ে বলেন নি।

“আর সে মনগড়া কথা বলে না। তাতো কেবল ওহী, যা তার প্রতি ওহীরূপে প্রেরণ করা হয়।” (সূরা নাজমঃ ৩-৪)


এখন, ইসলাম সম্পর্কে কেউ এমন ব্যাখ্যা দিলো, মিথ্যা, জাল কিংবা বানোয়াট কিছু হাদিসের নামে চালিয়ে দিলো, কুরআন সম্পর্কে তথা আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে এমন বক্তব্য বা ব্যাখ্যা পেশ করলো যা প্রকারন্তরে মিথ্যা বলার নামান্তর তাহলে সওয়াব অর্জন তো দূরে থাক জাহান্নাম মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া যায়।

পঠিত : ১৯১ বার

মন্তব্য: ০