এবার একটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন হবে কি?
তারিখঃ ৩০ নভেম্বর, -০০০১, ০০:০০
মিরপুর ১২ নম্বরের ইলিয়াস মোল্লা বস্তিতে গত রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আগুন লাগে। পরে তা দ্রুত পুরো বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সোমবার সকাল সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আগুনে মিরপুর ১২ নম্বরের বস্তির অন্তত ৫ হাজার ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। এসব ঘরে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি মানুষ থাকতো। আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে বস্তিবাসীর দাবি, নাশকতা করে কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
মিরপুর ১২ নম্বরের প্রায় ৭ বিঘা জমির ওপর চারটি বস্তি ছিল। এগুলো হলো, হারুনাবাদ, কবির মোল্লা, সাত্তার মোল্লা ও নাগর আলী মাতব্বর বস্তি। মূলত এমপি ইলিয়াস মোল্লার বাবা-চাচাদের জমিতে ৭৬ সাল থেকে এই বস্তি গড়ে ওঠে। ৩৫ বছরের পুরনো এ চার বস্তিতে ৫০০০ হাজার ঘর ছিল। এখানে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ বাস করতো।
যাইহোক, এ ঘটনা নিয়ে ঘুরে ফিরে যার নাম আসছে তিনি স্থানীয় সাংসদ ইলিয়াস আলী মোল্লা। যদিও তিনি ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী তার একটি নির্মাণাধীন মার্কেটে বাস্তুহারা এসব মানুষের একাংশের থাকার ব্যবস্থা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের আঙ্গুলও তারই দিকে।
আশ্চার্য্যজনক হলেও সত্য প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বাসস্থান রাতের আঁধারে পুড়িয়ে দেয়া হলেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সেদিকে নজর নেই বললেই চলে। এক রাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগান, সিরিয়া কিংবা ইরাকের মত দেশেও এতগুলো লোক একসাথে বাস্তুহারা হয়নি। কিন্তু মিডিয়ার রহস্যজনক নীরবতায় ক্ষতিগ্রস্তরা আরও অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘটনার ভয়াবহতা দেশবাসীর কাছে স্পষ্ট না হওয়ায় সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে যেমন কোন উল্লেখযোগ্য ত্রাণ তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আর সরকারের পক্ষ থেকেও কতটুকু কি সাহায্য করা হচ্ছে কি হচ্ছে না তাও জানা যাচ্ছে না।
আর মর্মান্তিক ঘটনার নেপথ্যের কোন কুচক্রী মহল তাও দেশের মানুষ স্পষ্টভাবে জানতে পারছে না। সাংবাদিক ভাইয়েরা সারাদেশে সারাবছর কত শত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনই না তৈরী করেন। এবার কি তারা পারবেন একটা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী করতে? খুলে দিন না কুচক্রীর মুখোশ! একটু হলেও পাশে দাঁড়ান অসহায় মেহনতি মানুষের...
মন্তব্য: ০