Alapon

নতুন শিক্ষাব্যাবস্থা বনাম আমাদের চিন্তাভাবনা


আগামী বছর থেকে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম হবে ফিনল্যান্ডের মতো করে!
খুবই ভালো কথা!

কিন্তু ওদের মতো ফার্স্ট ওয়ার্ল্ডকে কান্ট্রিকে ফলো করে আমাদের মতো ৩য় বিশ্বের জনগণ কতটা লাভবান হবে এটাই ভাববার বিষয়। যেখানে বাংলাদেশের ৯০% মানুষ মনে করে যে সরকারি চাকরি না পাইলে তার দাম নাই। দেশের ১ নম্বর চাকরি বিসিএস। বিসিএস এর উপর জব নাই। তার উপর বেকারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মক্ষেত্রের স্কোপ কম। একটা ছেলে ইংরেজিতে পড়াশোনা করে ভাবে, "যাক টিউশানি করে বাকি জীবনটা আরামে চলে যাবে।" আর সিজি একটু বেশি হলে বিদেশ ...... এই হলো কালচার।সেখানে এই আল্ট্রা মডার্ন পদ্ধতিতে পড়াশোনা করে আদতে শিক্ষার্থীরা কতটা লাভবান হবে সেটাই বিবাদের বিষয়। তার উপর আমাদের শিক্ষকরাও প্রিপেয়ার্ড না।

প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা থাকবে না বলে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ৫ম ও ৮ম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষাও তুলে দেওয়া হবে। বর্তমানের ‘পরীক্ষানির্ভর’ মূল্যায়ন পদ্ধতি থেকে শিক্ষাকে বের করে আনার জন্য আরও কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে। পরীক্ষার পরিবর্তে ‘দক্ষতাভিত্তিক ধারাবাহিক মূল্যায়ন’ চালু হতে যাচ্ছে। প্রতি বিষয়ে পূর্ণমান ১০০ নম্বর থাকলেও চূড়ান্ত পরীক্ষায় বিষয় ও শ্রেণিভেদে ৪০ থেকে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে। বাকি নম্বরের ‘শিখনকালীন’ মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা। নতুন এ পদ্ধতি চালুর জন্য খোল নলচে বদলে ফেলা হচ্ছে বিদ্যমান শিক্ষাক্রম। আমরা কেন জানি ভুলে যাচ্ছি আমাদের দেশটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডা নয়। এখানে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত কাম্য স্তরে নেই। শিক্ষকরাও অনেকে জানেন না ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যাপারটি কী।
যেখানে প্রাথমিক বা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গড় হাজির থাকার অভ্যাস বিদ্যমান, সেখানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন কতটা কার্যকর হবে? নতুন এ পদ্ধতি নতুন ধরনের দুর্নীতির জন্ম দেবে। স্বজনপ্রীতি এবং বিশেষ বিশেষ শিক্ষার্থীর প্রতি দুর্বলতার কালচার ধারাবাহিক মূল্যায়নকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করবে। আমার মনে হয়, মূল্যায়ন সম্পর্কে আরও চিন্তাভাবনার প্রয়োজন আছে। অনেক সময় ক্ষমতাবান অভিভাবকদের দাপটও ধারাবাহিক মূল্যায়নকে কলঙ্কিত করে তুলবে। প্রস্তাবিত সংস্কারের প্রধান দিকগুলো গ্রহণযোগ্য, কিন্তু মূল্যায়ন সংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাংলাদেশের কালচার ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তবে পদ্ধতিটা খারাপ না। পদ্ধতি ১০০% জোস! আমরা পরিচিত না, আর এই শিক্ষা পদ্ধতি এপ্লাই করার মতো মনমানসিকতা বা চিন্তা ধারা আমাদের নেই। যদি চালু করতেই হবে, তবে আমাদের আগে এই ব্যাবস্থার সাথে আগে ভালোভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়া উচিত। বিশেষ করে গ্রাম সাইটের দিকে।

অবিভাবকেরা আন্দোলন করছেন দেখলাম। তাদের বলি... আপনারা ঘরে ফিরে যান। সরকার এমনিই এই শিক্ষা পদ্ধতি বাদ দিবে। যখন দেখবে দেশের শিক্ষার পরিবেশ উগান্ডার আর শিক্ষা পদ্ধতি ফিনল্যান্ডের।

পঠিত : ১৯১ বার

মন্তব্য: ০