Alapon

আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস,প্রেক্ষিতঃ বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্ব!



আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস,প্রেক্ষিতঃ বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্ব!

১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস হলে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন কিন্তু আজ ও বন্ধ হয়নি। সম্প্রতি আজ সকাল ১০.০০ রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা গুম,খুন,হামলা মামলার প্রতিবাদে একটি মানববন্ধন করে।মানবন্ধনে বক্তব্য দেন,মহানগরীর নায়েবে আমীর এডভোকেট ড.মোঃহেলাল উদ্দিন,সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সহ নেতৃবৃন্দ। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলে ও সত্য যে মানববন্ধন শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশের আওয়ামী পুলিশ লীগ হামলা চালিয়ে মানববন্ধন পন্ড করে দেয়। এসময় পুলিশ মানববন্ধনের ব্যানার ও জাতীয় পতাকা সহ বেশ কয়েকজন কে গ্রেফতার করে। যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন। মানবাধিকার দিবসে ও বাংলাদেশের বিরোধী মতের মানুষের কেন মানবাধিকার থাকবে না!গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৬,৩৭,৩৮ ধারা অনুযায়ী সকলের সভা-সমাবেশ ও মতপ্রকাশের কথা থাকলে ও সংবিধান বিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে সরকার মানবাধিকার এর চূড়ান্ত লঙ্ঘন করছে।

১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। ১৯৫০ সালে জাতিসংঘ এ দিবস ঘোষণা করে।তখন থেকেই প্রতিবছর মানবাধিকার দিবস পালন হয়ে আসছিল।সারা বিশ্বে মানবাধিকার দিবস পালন হলে ও সূষম মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না।মানবাধিকার দিবস কি শুধু পালনের জন্য!নাকি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।জাতিসংঘ মানবাধিকার দিবস ঘোষণা করলে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি!

মানবাধিকার বনাম মুসলিম বিশ্বঃ

সারা বিশ্বে আজ মুসলমান জনগোষ্ঠী নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত। কিন্তু জাতিসংঘ শক্ত প্রতিরোধ নিচ্ছে না!মুসলমানদের কি মানবাধিকার নেই?তাহলে কেন জাতিসংঘ মানবাধিকার দিবস ঘোষণা করেছে?মায়ানমার,ফিলিস্তিনে আজ নিজ ভূমি থেকে অন্যায় ভাবে মুসলিম জনগোষ্ঠী কে উৎখাত করা হচ্ছে। চীনের উইঘুর,ভারতের কাশ্মীরে মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। গাজার সড়কে চোখ হাত বাধা ফিলিস্তিন নাগরিকরা।(দৈনিক প্রথম আলো)হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ দীর্ঘ দুই মাস পেরিয়ে গেলে ও জাতিসংঘ এবং বিশ্ব নেতারা নির্যাতিত নিপিড়ীত ফিলিস্তিনের জন্য কি ভূমিকা রেখেছেন?দখলদার ইসরাইলিদের হাতে এই পর্যন্ত ১৮ হাজার ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু নিহত হয়েছে।
২৩ লক্ষ গাজাবাসীরা খাবার,জ্বালানি ও পানি সংকটে।কিন্তু তারা নূন্যতম মানবাধিকার ও পাচ্ছে না।দখলদার ইসরায়েল সম্পূর্ণ যুদ্ধের নিয়ম ভঙ্গ করে যুদ্বাপরাধ চালাচ্ছে
।অথচ বিশ্ব নেতারা ও জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে হামাস নির্মূলে নেমেছে।হামাস কে সন্ত্রাস আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। মুসলমানরা নিজ মানবাধিকার এর জন্য যুদ্ধ করলে সেটা সন্ত্রাসী কিংবা জঙ্গি কার্যক্রম। আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চললে ও তা সন্ত্রাসী কার্যক্রম নয়!চলমান যুদ্ধে কোটি কোটি মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। সারা বিশ্বে দুর্ভিক্ষের আশংকায়। এর পর ও কি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক কমিনিউনিটি ঘুমিয়ে থাকবে।অবিলম্বে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ বন্ধ হোক।ফিলিস্তিনিদের তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

মানবাধিকার প্রেক্ষিতঃ বাংলাদেশ

বাংলাদেশ মুসলিম সর্ববৃহৎ দেশ হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান সময়ে ইসলামপন্থি রাজনৈতিক আলেম উলামা ও নেতৃবৃন্দের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তাদের অন্যায় ভাবে অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। টেলিভিশন ও সংবাদপত্র বন্ধ করা হয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী রাজনৈতিক দল,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক নিবন্ধন অন্যায় ভাবে বাতিল করা হয়েছে।স্বাভাবিক কার্যক্রম ও পরিচালনা করতে দিচ্ছে না।নাশকতা তকমা দিয়ে গ্রেপ্তার নির্যাতন করা হচ্ছে। জামায়াতে সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে অন্যায় ভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে।জামায়াতে ইসলামীর সংবাদ সম্মেলনের তথ্যমতে গত ২৫ অক্টোবর থেকে ৭ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের নিহত ৩জন,আহত ৫৬৫ জন,গ্রেফতার ২৯৪১জন,গুপ্ত হামলা ২২টি ও গুলিবিদ্ধ ২ জন।এখনো জেলে ইসলামপন্থি অসংখ্য আলেমকে কারাগারে অন্যায় ভাবে আটক রাখা হচ্ছে। অনেক আলেমগন দেশ ছাডা হচ্ছেন।মুসলিম প্রধান দেশে ইসলামপন্থিদের উপর এ ধরণের ক্র্যাকডাউন মানবাধিকার দিবসে আমাদের কাম্য নয়।

রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বাংলাদেশঃ

বিগত পনের বছরে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তাদের দীর্ঘ পনের বছরের শাসন আমলে চলছে বিরোধী দমন পীড়ন। গতকাল ৯ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন,সরকার কথা বলতে ও বাধা দিচ্ছে।(দৈনিক সংগ্রাম)।প্রধান বিরোধী দলের চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া,মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অন্যতম প্রধান বিরোধী দল,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর,আমীর ডা.শফিকুর রহমান,সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সহ শীর্ষ নেতাদের জেলে রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাসায় হামলা,হয়রানি করে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। প্রধান বিরোধী বিএনপি-জামায়াতের হাজার হাজার সিনিয়র-জুনিয়র নেতাকর্মীদের কারাগারে রেখে জাতীয় নির্বাচন করতে যাচ্ছে সরকার। কারাগারে বিরোধী দলের কয়েক নেতাকর্মী মারা গিয়েছেন।হাসপাতালে ও ডান্ডাভেরি পরিয়ে তারপর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যা মানবাধিকার এর চরম লঙ্গন।

লন্ডনে মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানববন্ধনে"বাংলাদেশীজ এলায়েন্স ফর হিউম্যান রাইটস"এর নেতৃবৃন্দ বলেন,বিরোধী দলের ২০ হাজার নেতাকর্মীদের বন্দি রেখে বাংলাদেশ একদলীয় নির্বাচনের ষড়যন্ত্র চলছে।মৃত নেতাকর্মীদের কে ও মামলা দেওয়া হচ্ছে।(দৈনিক সংগ্রাম ১০ ডিসেম্বর) ইংরেজি দৈনিক দ্যা,ডেইলি স্টার এর বাংলা বিভাগের একটি সংবাদে দেখা যায়,মৃত আসামীকে দৌড়ে পালাতে দেখল পুলিশ!এই হলো অবস্থা।

৯ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মায়ের ডাকের আয়োজনে মানববন্ধনে গুম হওয়া পারভেজ হোসেনের মেয়ে হৃদি বলেন,১০ বছর হয়ে গেল,আমি পাপ্পাকে দেখি না।আমরা যখন এসব বলতে রাস্তায় দাড়ায় তখন পুলিশ আমাদের তাড়িয়ে দেয়।পুলিশ এতো নির্দয় কেন?আমি তো পাপ্পাকে চাইতে এসেছি। আমার পাপ্পাকে ফিরিয়ে দিন।
তথ্য সুত্রঃবিএনপির অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেল।

[q]
বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক অধিকার ও মানবাধিকার খর্ব করা হচ্ছে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হউক এটাই কামানা করি।


পরামর্শ ও অভিযোগ জানাতেঃ
[email protected]

পঠিত : ৭৫০ বার

মন্তব্য: ২

২০২৩-১২-১০ ১১:২৩

২০২৩-১২-১২ ২০:৫০

User
Md. Abdul Ohab Babul

আমরা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন দেখি

submit