Alapon

ব্যতিক্রমী ছাত্রসংগঠনঃইসলামি ছাত্রশিবির



ব্যতিক্রমী ছাত্রসংগঠন:ইসলামি ছাত্রশিবির

#শহীদি কাফেলা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এক অনন্য কাফেলার নাম।প্রতিষ্ঠা কালীন সময় থেকে আজ পর্যন্ত যে নজরানা পেশ করেছে তা সত্যিই প্রসংশাজনক।তাই তো শহীদি বাংলার সকল শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে প্রিয় কাফেলায় পরিণত হয়েছে।শুধু ছাত্রসমাজই নয়,এদেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের কাফেলায় স্থান নিয়েছে।গতানুগতিক কোন ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির নয়।বাংলাদেশে আজ পর্যন্ত অনেক সংগঠনের ব্যাপক মাঠ ছিল তৈরী হয়েছিল,আবার এখন দেখা যায় তাদের কোণ অস্তিত্ব নেই।সব মিলিয়ে বলা যায়,ইসলামী ছাত্রশিবিরই এমন এমন এক ব্যতিক্রমী কাফেলা, যার শুরু থেকে আজ পর্যন্ত কখনো অস্তিত্ব সংকট হয়নি;বরঞ্চ ছাত্রসমাজের হৃদয়ের কাফেলা হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। শত নির্যাতন জেল,জুলুম,গুম, খুন আর শাহাদাতের দিশা পেতে ও আপোষ করেনি কোন নেতা বা তৃণমূল কর্মী।যুগ যুগ ধরে এ কাফেলা এগিয়ে যাবে সেই প্রত্যাশা কামনা করি।

#বর্তমানে বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে প্রথম সারির সংগঠন ইসলামি ছাত্রশিবির।এদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির। এক সময় ছাত্র ইউনিয়ন/বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর গ্রহনযোগ্যতা থাকলে ও তা এখন বিলিনের পথে।এ ছাডাও বেশ কিছু ছাত্র সংগঠন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।তাদের মধ্যে কিছু হলো,
ইসলামী ছাত্রআন্দোলন বাংলাদেশ,ছাত্র ফেডারেশন,বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রমজলিস,বাংলাদেশ ছাত্রঅধিকার পরিষদ,ইসলামি ছাত্রসেনা,নাগরিক ছাত্র ঐক্য,ছাত্রমৈত্রী,জাসদছাত্রলীগ,সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্ট,বাংলাদেশ পাত্রপক্ষ ,বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী,বাংলাদেশ ছাত্রমিশন,জাতীয় ছাত্রসমাজ সহ শতাধিক ছাত্র সংগঠন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠার পুর্বে এদেশে ইসলামী কোণ ছাত্রসংগঠন ছিলো না।ইসলামী ছাত্রশিবিরই একমাত্র ছাত্রসংগঠন যা সকল শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছে।অনেক গুলো ছাত্রসংগঠন রয়েছে যেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ও শহরে ছাড়া আর কোন জায়গায় তাদের কার্যক্রম নেই।ইসলামী ছত্রশিবির বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ থেকে শুরু করে শহর,নগর গ্রামে পৌঁছতে পেরেছে আলহামদুলিল্লাহ। ইসলামী ছাত্রশিবির যে শৃঙ্খলা দেখাতে পেরেছে তা আজ পর্যন্ত কোণ ছাত্র সংগঠন দেখাতে পারেনি।বরং ছাত্ররাজনীতির নামে ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষার মান কলুষিত করেছে।ইসলমাী ছাত্রশিবিরের বেশ কিছু ব্যাতিক্রমি বৈশিষ্ট্য রয়েছে,তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ-

#স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ
ছাত্রশিবির শুধু মাত্র ছাত্র সংগঠন হিসেবে নয়,আগামী দিনের সকল চ্যালেন্জ মোকাবিলা করার জন্য স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর কার্যকরি ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। শুধু মাত্র ছাত্র রাজনীতি নয়,সৎ,যোগ্য ও দক্ষ জনশক্তি তৈরীতে ছাত্রশিবির যে ভুমিকা পালন করছে,তা সত্যিই প্রশংসা যোগ্য।এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের আদর্শিক মানুষ হিসেবে গড়তে নিরলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যা আমার মতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর চাইতে বেশী ভুমিকা রাখছে বলে মনে হয়।একজন ছাত্রকে আদর্শবান মানুষ গড়ার জন্য শিবিরের রয়েছে সমৃদ্ধ সাহিত্য ভান্ডার,বেশ কয়েকটি পত্রিকা। অনলাইন লাইব্রেরির পাশাপাশি রয়েছে দেশের সকল থানা,ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে অসংখ্য পাঠাগার।এ সকল পাঠাগার গুলো কুরআন,হাদীস, তাফসির,ইলমূল ফিকহ,অর্থনীতি,রাজনৈতি,সমরনীতি,বিজ্ঞান,সংস্কৃতি ও ইতিহাসের জ্ঞানে পরিপূর্ণ। যা আলোকিত করছে লাখ লাখ ছাত্রসমাজ ও সাধারণ মানুষ কে।

#সুসৃঙ্খল ছাত্রসংগঠনঃ
ইসলামী ছাত্রশিবির জাতীয় ও ছাত্ররাজনীতি তে এক ব্যাতিক্রমী সংসগঠন।এত বেশী সুসৃংঙ্খলতা অন্য কোণ সংগঠন দেখাতে পারেনি,যেটি ইসলামী ছাত্রশিবির দেখাতে পেরেছে।দীর্ঘ ৪৬ বছরের পথচলায় সম্রাজ্রবাদী, জালিমের হাজার ও চাকচিক্য আর লোভ লালসা এ কাফেলার সহযাত্রীদের সুশৃঙ্খলা থেকে সরাতে পারেনি এবং ভবিষ্যতে পারবে না। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সুসংঙ্খলতার যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জাতিকে উপহার দিয়েছে,তা আগামীতে থাকবে বলে ও আমাদের প্রত্যাশা।ইসলামি ছাত্রশিবির কে ছাত্র রাজনীতিতে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে সরকার এবং কতিপয় ছাত্রসংগঠন নামের রক্তপিপাসু ফেরাউন এর দোষর গণ যে স্টিম রোলার চালিয়েছে তা এদের ছাত্রসমাজ আজীবন মনে রাখবে।মূলত আলোচনার প্রতিপাদ্য হলো-এত নির্যাতন,জুলুমের পর ও এ কাফেলার সহযাত্রীরা বিন্দুমাত্র উশৃংখল হয় নি।

সামাজিক কার্যক্রমঃ
ইসলামী ছাত্রশিবির একটি ছাত্র সংগঠন হওয়া সত্ত্বে ও সামাজিক ও জনকল্যান মূলক কাজ থেকে পিছিয়ে নেই।বড় বড় রাজনৈতিক দল সমূহ মানুষের বিপদে,প্রাকৃতিক দূর্যোগে ও দুর্ভোগে তাদের পাশে না দাডালে ও শহীদি ছাত্রসংগঠন সামাজিক কার্যক্রম এর মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে সকল প্রকার সমস্যা সমাধানে নিরলসভাবে সমাজ কল্যানমুলক কাজে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সমাজসেবা মুলক কাজ করা ইসলামী ছাত্রশিবির এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো সেই কাফেলা ইসলামী ছাত্রশিবির।

#ক্যাডারভিত্তিক জনশক্তিঃ

ইসলামী ছাত্রশিবির এর রয়েছে ক্যাডার ভিত্তিক জনশক্তি পন্থা।অন্য ছাত্রসংগঠন গুলোতে ক্যাডারভিত্তিক জনশক্তি তেমন একটা দেখা যায় না।ইসলামী ছাত্রশিবির ক্যাডার ভিত্তিক কর্মী বাহিনী তৈরীর মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে আর একধাপ এগিয়ে যাবে,ইনশাআল্লাহ। এর মাধ্যমে সংগঠনের সকল জনশক্তিদের ভালো ভাবে পরিচর্চা করা ও মানসম্মত ভাবে লোক তৈরি তে ভুমিকা রাখছে।ছাত্রশিবিরের স্থর সমূহ হলো-সদস্য,সাথী,কর্মী ও সমর্থক।ছাত্রশিবিরের প্রতিটি স্থরের কর্মীদের জন্য রয়েছে একটি সমন্বিত সিলেবাস ও নিয়মিত ব্যক্তিগত রিপোর্ট বই সংরক্ষণের নিয়মাবলি। যার মাধ্যমে ছাত্রশিবিরের প্রত্যেক জনশক্তি নিজের যুগোপযোগী ও সময়-জ্ঞানে উপযুক্ত করতে সাহয্য করছে।

#শহীদি কাফেলা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ছাত্রসমাজ থেকে শুরু করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। শতাধিক ছাত্রসংগঠন এর মধ্যে ইসলামী ছাত্রশিবির ব্যাতিক্রমি সংগঠন হয়ে সকল প্রকার বাধা বিপত্তি ছাডিয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে আলহামদুলিল্লাহ। সংগঠনের প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন,তাদের শাহাদাত এর মর্যাদা কামনা করি।ইসলামী ছাত্রশিবির সকল ছাত্রদের কর্ণকুহরে দ্বীনের সুমহান দাওয়াত পৌঁছানোর মাধ্যমে নৈতিকতা,সততা ও দক্ষতায় ভরপূর ছাত্রসমাজ তৈরী করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বিশেষ ভুমিকা রাখবে,ইনশাআল্লাহ।

বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রশিবিরের জনশক্তিদের কে জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ ও শুভেচ্ছা।

বিঃদ্রঃ আমার এই নিবন্ধ টি নোয়াখালী শহর থেকে প্রকাশিত তৈমাসিক রেনেসাঁ পত্রিকায় জানু-মার্চ ২০২৩ সংখ্যায়
প্রচ্ছদ রচনা হিসেবে প্রকাশ হয়েছিল। সংযোজন ও বিয়োজন করে ব্লগ সাইটে পাবলিশ করা হলো।

[email protected]

পঠিত : ৬৭৮ বার

মন্তব্য: ০