গরুর মাংস নিষিদ্ধ করা নিয়ে কিছু কথা!
তারিখঃ ১৮ মার্চ, ২০২৪, ০৫:২৬
গরুর মাংস কোথাও নিষিদ্ধ হলেই সেটা যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, এই ধারণা থেকে বেড় হয়ে আসতে হবে। অবশ্যই গরুর গোশত হালাল। কিন্তু পরিহার যোগ্য, কেননা অতিমাত্রায় স্বাস্থ্য ঝঁকি আছে।
আর রাসূল ( সাঃ ) এর জীবনি পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে যে খুব কমই তিনি গরু খেয়েছেন। পড়ুন > (
বিশদ ব্যাখ্যা)
নবিজী (সাঃ) যা যা খেয়েছেন তার মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়ের একটা লিস্ট দিচ্ছি।
১। খরগোশ (তিরমিজি)
২। মোরগ (বুখারী ও মুসলিম)
৩। প্রাণীর বাহুর গোশত (বুখারী ও মুসলিম)
৪। সারিদ (আবু দাউদ)
৫। তরমুজ (আবু দাউদ)
৬। লাউ (তিরমিজি)
৭। কিশমিশ (মুসলিম)
৮। মাখন (আবু দাউদ)
৯। হালুয়া ও মধু (বুখারী ও মুসলিম)
১০। খেজুর (আবু দাউদ)
১১। দুধ ( বুখারী ও মুসলিম)
১২। শসা (মুসলিম)
১৩। জয়তুন (তিরমিজি)
১৪। পনির (আবু দাউদ)
১৫। পেয়াঁজ ( আবু দাউদ)
১৬। সিরকা (মুসনাদে আহমাদ)
এ ছাড়া আরও বিভিন্ন বর্ণনায় জানা যায়, রাসুল সা. মরুভূমির এক ধরনের পাখির গোশত, খাসির পায়া, মাশরুম, গাজর, ডুমুর, আঙুর, ডালিম ও সামুদ্রিক মাছ (আম্বর) ইত্যাদি খেয়েছেন।
গরুর মাংসে সবচেয়ে বেশি ফ্যাট থাকে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। বাংলাদেশে প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছেই। দেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
দেশের ৩৪ শতাংশ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত (
রেফারেন্স)। আরো একটা বিষয় হলো হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ৮০ ভাগ প্রতিরোধযোগ্য (
রেফারেন্স )। তাই অন্তত গরুর মাংসকে ধর্মীয় দোহাই দিয়ে রাজনীতির মানেই হয় না! এর উপর এমন না যে জিনিসটা সহজলভ্য! গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৭০০ টাকা! মানে এক কেজি মাংস কিনতে ৭০০টা টাকা কসাইরে দিয়া দিতে হইবো!
রাবির সাহরীতে গরুর মাংস নিষিদ্ধ করাতে যেমনে প্রতিবাদ হইলো! তা দেইখা রীতিমতো আমি অবাক! আরে ভাই, এতে নাখোশ হওয়ার কিছু নাই। আপনার পাশের হিন্দু সহপাঠী যদি আপনার সাথে সাহরীতে খাবার খায়, এতে ক্ষতি তো কিছু দেখি না। একসাথে সাহরী খেলো, ইফতারে সামিল হলো! আপনিই উদারতা দেখালেন। একজন মুসলিম হিসেবে উদারতা দেখালেন। যেটা আসলে সাচ্চা মুসলিম এর আচরণ!
দেশের কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহরীতে গরুর মাংস নিষিদ্ধ নিয়ে দেশবাসীর রাগ বিদ্বেষ দেখেই আসলে এই লেখা লিখলাম। যেটা আদতে আমাদের ধর্মেরই কোন অংশ না!
সৌদি আরব তাবলীগ জামাত কে নিষিদ্ধ করেছে! যারা কি না নিজেদের টাকা খরচ করে, মসজিদে কষ্ট করে থেকে ইসলামের দাওয়াত দেয়। আমি নিজে তাবলীগে গিয়েছি। আমি জানি তারা কি করে!!! এবার এটা নিয়ে কি বলবেন?
সত্যি বলতে বিদ্বেষ দেখিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম হওয়া যায় না। আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতিও ঠিক না।
অনেকে আমাকে দালাল বলবেন! কিন্তু বিশ্বাস করেন, এমন কোন চিন্তাই আমার ছিলো না। আমি একটা ম্যাসেজ দিতে চেয়েছি! ভুল হলে ক্ষমা করবেন! আর আমি কখনোই দালাল নই। আমার নিজস্ব মতামত, স্বাধীনতা ও সমর্থন আছে।
সম্পূর্ণ লেখা পড়ার জন্য জাযাকাল্লাহ।
সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানের মুবারকবাদ।
আল্লাহ পাক আমাদের বুঝার তাউফিক দান করুন। আমিন।
মন্তব্য: ০