Alapon

স্বাস্থ্যখাত ও আমাদের বর্জন কর্মসূচি



সত্যি বলতে লেখতে ইচ্ছা করেনা। কারন মতামত যাই দেই মানুষ পড়ে না। আর নয়তো সাড়া পাই না। যাইহোক, একটা বিষয় মাথায় আসলো তাই লেখতে বসলাম। সেটা হলো আমাদের স্বাস্থ্য খাত।

সবটা লেখা পড়ে তারপর মন্তব্য করবেন।

আমি পিনাকি ভট্টাচার্যের সব ভিডিওই দেখি। অনেক ইনফর্মেটিভ। উনি মানুষ হিসেবেও অনেক দূরদর্শী। তো উনার ভিডিওতে উনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন যে বাংলাদেশি ডাক্তারদের কাছে পাঠাতে মন চায় না উনার। কারনটা সবারই জানা। এরপরেও ভারত বর্জনের সমাধান স্বরুপ উনি থাইল্যান্ড অথবা মালয়েশিয়ায় যেতে বলেছেন।

আসুন দেখে নেই। বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডের ট্রাভেল কস্ট কত? আমি ডলারে দেখাচ্ছি আপনারা টাকায় কনভার্ট করে নিয়েন। উল্লেখ্যা গুগলের হিসাব মতে ১ ডলার = ১০৯.৭৪ টাকা।

বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড বাস বা ট্রেইন সুবিধা নেই। বিমান বা নৌ পথ। নৌ পথে রোগী আনা নেয়া করাটা বিপজ্জনক। আর বীমানে শুধু যেতেই লাগে $300। শুধু যেতেই এই টাকা। আর আসা যাওয়া মিলিয়ে ৬০০ থেকে ১০০০ ডলার। এটা মিনিমাম কস্ট। আরো বেশিও লাগতে পারে। আমি শুধু সৌদি আরব ভ্রমণ করেছি। সেখানে একটা মিনিমাম আইডিয়া করে রিয়াল নিয়েছিলাম। আল্লাহর রহমতে আমার সমস্যা হয় নাই, কিন্তু আমার সাথী অনেকেরই লেগেছিলো। সফরকালে খরচ একটা গুরুত্বপূর্ন বিষয়। খুবই খুবই খুবই গুরুত্বপূর্ন। (৩ বার লেখলাম)। ৩০০ ডলার মানে অনেক টাকা। ৩২,০০০ এর মতো। এর উপর সেখানে থাকা খাওয়া তো আছেই।

এবার আসুন দেখি ভারতে যেতে কত লাগে! শুধু বীমানে যেতে লাগে $67 এর মতো। আর আসা যাওয়া তে ১৬০ ডলারের মাঝে কমপ্লিট হয়ে যায়। আর শুনেছি সেখানে দেবিশেঠি নাকি বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটানিদের জন্য কোটা দিয়ে রাখছে। বাংলাদেশিরা না গিয়ে তো উপায় নেই।

আরো একটা বিষয় হলো বাংলাদেশ আর ভারতে স্থলপথে সরাসরি যাতায়াত সুবিধা আছে। আর এতে বীমানের তুলনায় খরচ কম লাগে। বাস বা ট্রেন দুই সুবিধাই আছে।

আমরা যদি বলি সেখানে খারাপ কি? বলবো তাদের ব্যাবহার। তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য আচরণ। আপনি তাদের অনেক এয়ারপোর্টে বাংলাদেশি মানি এক্সচেঞ্জ এর সুবিধা পাবেন না কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দী পাকিস্তানি রুপি এক্সচেঞ্জ এর সুবিধা আছে!!! খারাপ ব্যাবহার তো আছেই!!!

বাংলাদেশের মানুষ হিন্দি বুঝে সহজেই। আর পশ্চিম বঙ্গের কলকাতা বা মুর্শিদাবাদে তো অনেকের আত্মীয়ও থাকে দেখেছি। আমার ভার্সিটি লাইফের রুম মেট এর দাদার বাড়ি মুর্শিদাবাদে!!!

এতো সব সুযোগ সুবিধা ফেলে মানুষ থাইল্যান্ড বা মালয়েশিয়াতে কি যাবে আদৌ? আর স্বাস্থ্য খাতের এতো অনিয়ম আর চারিদিকে ভুয়া ডাক্তারের ছড়াছড়িতে আমরা যাবো কোথায়? "সর্বাঙ্গে ব্যাথ্যা! ওষুধ দিবো কোথা?"। আপনারা ইউনাইটেড হাসপাতালের ঘটনা দেখলেন। কিছুদিন আগে এক বেসরকারি হাসপাতালের ম্যানেজারের আচরণ দেখলাম। ভয়াবহ ছিলো! এখন উপায় কি?

শুধু তো হিন্দুরা যায় না ভারতে! মুসলিমরাও যায়। যাওয়ার কারনও আছে!! আমার ফ্রেন্ডের বাবার হার্টে ব্লক ৪ কি ৫ হবে। একটা ৭৪% অন্যটা ৪২% এমন করে ছিলো। বাংলাদেশের হার্ট ফাউন্ডেশনের ডিক্লেয়ার দিয়ে দিসে, রিং পড়াতেই হবে। রেডিও হয়ে গেছে সবাই। ডেট দিয়ে দিসে। এরপর আত্মীয়দের আলোচনায় তারা দেবিষেঠির কাছে যায়। ১ মাস অবজার্ভেশনে রেখে হাই পাওয়ারি ওষুধ দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন আগে কথা হলো, উনি সুস্থ। খরচ যেটা হয়েছে, রিং পড়ালে এর চেয়েও বেশি খরচ লাগতো!

আমি ভারতের প্রশংসা করছি না। আমি আমার দেশের অবস্থা তুলে ধরেছি। এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি?

আমার এক ফ্রেন্ডের বাবা টেইলার্স চালায়। মোটামুটি একটা ক্রাইসিসে থাকে তারা সারাবছরই! উনিও দেখলাম ভারতেই গেলেন। ৩ মাস থাকলেন! উনারা চললেন কিভাবে?

ভারত না গিয়ে তাহলে উপায় কি? দেশে এতো ক্রাইসিস!



সমাধান আছে।

ভাই, দেশে অনেক মহান ডাক্তার আছেন। তারা আন্ডাররেটেড। অনেক সফল ডাক্তার তারা। টাকার চিন্তাও করেন না। তাদের খুঁজে বেড় করতে হবে। আমাদের দেশে মেধা খুঁজে বেড় করার প্রবনতা কম। এটা বাড়াতে হবে। এসব ডাক্তারদের ফ্রন্ট লাইনে আনতে হবে। তাদের প্র্যাকটিসিং এর সুযোগ বাড়াতে হবে। প্রতিটা ক্ষেত্রে এমন মেধা বেড় করতে হবে। কি মেডিসিন, কি গাইনোকোলজি, কি হৃদরোগ, কি শিশু! যেটাই বলেন না কেন.... বেড় করতে হবে। এই দ্বায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। আমি আপনি আমরা এমনটা করতেই পারি। তাহলে সমস্যা হয়তোবা কিছুটা সমাধান হতেও পারে। ১০০% সমাধান হবে কিনা বলা যায় না! এটা বাংলাদেশ!

তো যাইহোক, আমার মতামত দিলাম। আরো সমাধান থাকলে বলতে পারেন, অথবা নিজে লিখে সেয়ার দিতে পারেন।

সময় নিয়ে পড়ার জন্য জাযাকাল্লাহ।

পঠিত : ৭৮১ বার

মন্তব্য: ০