Alapon

ইসলামিক কর্মীদের জন্য কিছু কথা



ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ইসলামের একজন দুর্দান্ত শত্রু ছিলেন । যিনি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লামকেও হত্যা করতে উদ্ধত হয়েছিলেন । আল্লাহ রাসুল উনার হেদায়েতের জন্য দোয়া করলেন । রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম এর দোয়ায় উনি হেদায়েত প্রাপ্ত হলেন । ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ধর্মে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত হযরত মুহাম্মদ সাঃ বিভিন্ন ইসলামিক কর্মকান্ড গোপনে করতেন । তখনকার স্বৈরাশাসক ও ইসলামবিদ্বেষীদের কারণে প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দিতে পারতেন না । এমনকি কাবা গৃহে জামাতে নামাজ পড়া ছিল অসম্ভব কাজ । কিন্তু যখনই ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ইসলামের প্রবেশ করলেন তখনই উনি এক বাক্যে বলে দিলেন, আজ থেকে ইসলাম প্রকাশ্যে পালন করা হবে । মুসলমানরা কাবা গৃহে জামাতে নামাজ পড়ার সুযোগ পেলেন । ইসলামী সংগঠনটি তখন হয়ে ওঠে অনেক শক্তিশালী । ইসলামী দাওয়াতের প্রচার ও প্রসার বাড়তে থাকে ।

আমাদের বাংলাদেশে এখন অনেক ইসলামিক সংগঠন হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ । যারা এত বছর স্বৈরাচার ও বাতিলের কারণে ইসলামের দাওয়াত উন্মুক্তভাবে দিতে পারত না । হক কথা বলতে গেলেই হাজারো বাঁধার সম্মুখীন হতে হতো । বাতিলের বিপক্ষে কথা বলে শত শত আলেম-ওলামা দিনের পর দিন কারাবন্দি হয়ে কাটিয়েছেন । উদ্ভব হয়ে আয়না ঘরের ।

পরিবার-পরিজন ছাড়া মাসের পর মাস বাতিলের জিঞ্জিরে কাটিয়েছে হকপন্থী ইসলামী দলের অনেক নেতাকর্মী । শত বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন দাঁড়িয়ে অনেক কর্মী নিজেদেরকে আত্মগোপনে রেখেছে । তবুও ইসলামী দাওয়াত থেকে বিমুখ হয়নি । গোপনে আল্লাহর দাওয়াত পৌঁছে দিয়েছে বিপথে চলা মানুষের দ্বারে দ্বারে।
দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবি পরিহিত একজন ছেলেকে দেখলেই জঙ্গি হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো । ভার্সিটির কোন ছেলে দাড়ি লম্বা করলেই তাকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠতো । সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই আবরারের মত নির্মমভাবে হত্যা করা হতো ।
যে কারণে অনেক নেতাকর্মীরা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নতগুলো পালনে সতর্ক থাকতেন । কেউ কেউ দাড়ি ছোট রাখতেন, কেউবা পাঞ্জাবি না পড়ে সালাত আদায় করতেন । তবুও তারা দ্বীন থেকে বিচ্যুত হতো না ।

আজ দেশ স্বাধীন । স্বৈরাচারের পতন হয়েছে । বাকশক্তি উন্মুক্ত । ইসলামের দাওয়াত এখন প্রসারিত হয়েছে । মানুষ এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে । হক কথা উৎফুল্ল চিত্তে মানুষের কর্ণ কুহরে পৌঁছে দেওয়ার শক্তি আল্লাহ প্রদত্ত দেওয়া হয়েছে । হক-বাতিলের দ্বন্দ্ব কখনোই শেষ হবে না । তবে সত্যিকারের মানুষ সর্বদাই বাতিলের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াবে । ইসলামের ঝাণ্ডা উড়িয়ে সত্যের বাণী পৌঁছে দেবে প্রতিটা মানুষের অন্তরে ।

তাই আমি অনেক দিক বিবেচনা করে দেখেছি, যে দ্বীনি ভাইগুলো এতদিন বাতিলের অশুভ দৃষ্টি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দাড়ি ছোট রেখেছেন, টুপি ছাড়া নামাজ পড়েছেন । তাদের আজ কোন বাতিলের ভয় নেই ।
ওমরের মত উন্মুক্ত চিত্তে এখন ইসলামের দাওয়াত দিতে হবে । প্রোগ্রাম করতে হবে নির্দ্বিধায় । ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে হলে একাগ্রতার সাথে ইসলামী নীতি-নৈতিকতা মেনে চলতে হবে । ফরজের পাশাপাশি সুন্নত কেউ গুরুত্ব দিতে হবে । চরিত্র গঠনে নবীজির আদর্শ একান্ত প্রয়োজন । যে আদর্শ অর্জন, আমাদেরকে সকল মানুষের মনে একজন আদর্শিক নেতা হিসেবে পরিচিত হবার পথ বিনির্মাণ করে দিবেন । ইনশাআল্লাহ ।
আল্লাহ আমাদের সহায় হোন । আমিন ।

পঠিত : ৬৮ বার

মন্তব্য: ০