মুশরিকদের প্রতিনিধিত্বকারী এক হুজুরের কথা!
তারিখঃ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:২০
একজন হুজুর(!) বই লিখেছেন। ফতওয়ার বই। জিহাদবিরোধী ফতওয়া। কেন জিহাদ করা যাবে না? কেন একজন অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে কথা বলা যাবেনা? কেন ভারতের আধিপত্য মেনে নেয়া আমাদের উচিত? ইত্যাদি বিষয়ে সেখানে দারুণ আলাপ আছে নাকি। আমি পড়িনি। তাই নিশ্চিত করতে পারছি না।
আপনারা আবার এটা বলে বসবেন না, একজন মানুষের বিরুদ্ধে নিশ্চিত না জেনে অভিযোগ করা ঠিক না। আসলে রুচি হয়নি ঐ হুজুরের বই পড়তে। যে হুজুর শাহবাগে নাস্তিকদের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতে পারে তার বই আমাকে পড়তে হবে এতটা দৈন্যতা আমাকে এখনো পেয়ে বসে নি।
২০১৮ সালে দেখলাম সেই হুজুরকে পার্শ্ববর্তী মুশরিকদের দপ্তরে তার দুই সন্তানসহ। কৌতুহলী হয়ে উঠলাম। ভাবলাম এটা আবার গুজব কিনা? কারণ আজকাল গুজবের শেষ নাই। যে কেউ এডিট করে অনেক কিছু তৈরি করতে পারে। যেহেতু মুশরিকদের হাইকমিশনারকে দেখা যাচ্ছে তখন বুঝে নিলাম এটা এডিটেড না হয়ে যদি সত্য হয় তবে হাইকমিশনের ফেসবুক পেইজে সেই ছবি থাকবে।
কথা ঠিক, পেয়ে গেলাম আমাদের হুজুর(!)কে সেখানে। তাহলে ঘটনা সত্য। কেউ ভারতীয় দূতের সাথে মিটিং করলেই বাতিল হয়ে যায় না। এটা আমি জানি। তাই জানার চেষ্টা করলাম আমাদের হুজুর(!) কেন সেখানে গেলেন? কোন রাজনৈতিক আলাপ? দ্বিপাক্ষিক রাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়?
হুজুর(!) একটা ক্রেস্ট দিচ্ছেন। ক্রেস্টে লিখা রয়েছে বড় করে 'ফতওয়া'। বাকীটুকু পড়ার আর সুযোগ নেই। অন্তত আমার নেই। কারণ বয়স হয়েছে। চোখ এতো সুক্ষ জিনিস ধরতে পারে না। খবর নেয়ার চেষ্টা করলাম, ব্যাপারখানা কী? জানা গেলো ঐ যে শুরুতে বললাম হুজুর(!) একখানা বই লিখেছেন। সেটাসহ নানান ব্যাপার।
মুশরিকরা হুজুর(!) এর বই পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছেন। তাই তাকে স্বাগত জানিয়েছেন হাইকমিশনে। সুযোগ পেয়ে হুজুর(!) একখানা ক্রেস্ট বানিয়ে নিয়ে গেলেন। সাথে তার গুণধর দুই পুত্রকেও নিয়ে গেলেন।
এই হুজুর(!) এর আরো ব্যাপার রয়েছে। তিনি ভারত স্পন্সরড মুসলিম সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশের একজন সদস্য ছিলেন। ২০০১ থেকে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতীয় মুশরিকরা এই সরকারকে হটানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। এর মধ্যে আওয়ামীলীগের তৎকালীন সেক্রেটারি আব্দুল জলিল ৩০ এপ্রিল ২০০৪ একটি ডেডলাইন দিয়েছিল।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সেই ষড়যন্ত্র নষ্ট হয়ে যায়। এরপর ১৭ মে ২০০৫ সালে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা করে জেএমবি। তারা প্রায় তিন মাস সরকারকে নাজেহাল করে ফেলে। এটাও জোট সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে ও সারাদেশে এই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ তৈরি করে ষড়যন্ত্র রুখে দেয়। আমার মনে আছে বাংলাদেশের প্রতিটি মসজিদ থেকে জেএমবির বিরুদ্ধে মিছিল বের হয়েছিলো।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সেই চৌকস সেনা অফিসারদের এই ভারত আওয়ামীলীগের সহায়তায় হত্যা করে বিডিয়ার বিদ্রোহের নামে। মুশরিকরা প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে আরো অনেক ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক মুশরিকরা তাদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এদেশের ঈমানদারদের হত্যা করিয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের একটি অংশ ছিল শাহবাগে নাস্তিকদের আন্দোলন।
যাই হোক আমরা আবার ফিরে আসি হুজুর(!) এর প্রসঙ্গে। এই হুজুর(!) জেএমবির একজন সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরে অপরাধের ভয়াবহতা প্রমাণ হয়নি বিধায় মুক্তিও মিলেছে। আমি জেএমবির প্রসঙ্গ এইজন্যেই টেনেছিলাম। হুজুর(!) জেএমবিতেও ছিলেন শাহবাগেও ছিলেন। এটা অনেকে মিলাতে পারেন না। অথচ মিলটা কত সোজা! দুইটাই তো মুশরিকদের প্রজেক্ট। হুজুর(!) ভালো খেলেছেন। দুইদিকেই ছিলেন। শাহবাগে নাস্তিক ও শাতিমে রাসূল সা.-এর সমাবেশে গিয়ে তিনি নাকি সবচেয়ে বড় নেককাজ করেছেন!
এই হুজুর(!) অর্থাৎ ফউ মাসুদ ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব করে না। সে মুশরিকদের প্রতিনিধিত্বকারী। অতএব সাবধান থাকুন। তার কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। এদেশের কওমীদের ভয় আর টাকার লোভ একসাথে দেখালে তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে সময় নেয় না।
নতুন বাংলাদেশে সবাই যখন শাহবাগী সন্ত্রাসীদের কবর রচনা করতে শুরু করেছে তখন ইবলিশের চ্যালা আরিফ বিন হাবিব নামের এক সেলিব্রেটি বক্তা নতুন করে মুশরিকদের প্রতিনিধিত্বকারী ফউ মাসুদকে আবার সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। মুরগী কবির আর ফউ মাসুদ একই জিনিস। শুধু লেবাস আর কথা বলার ভঙ্গী আলাদা। আর কিছু নয়। নষ্ট ফউ মাসুদ তো আগেই পঁচেছে। আরিফ বিন হাবিবকে সামনে পেলে ডিম মেরে দিবেন। ছেঁড়া স্যান্ডেলও মারতে পারেন। আপনারা যা ভালো মনে করেন!!!
মন্তব্য: ০