হাসিনার সম্ভাব্য প্রবাসী সরকার এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি
তারিখঃ ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:২৭
এক দানব বিতারিত হয়েছে। ভয়ানক এক দানব। সেই দানবের মাথার নাম ছিলো হাসিনা আর সেই দানবের মাথায় দুটি শিং ছিলো। এক শিঙের নাম ছিলো ওবায়দুল কাদের আর আরেক শিঙের নাম ছিলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান। এই দানব বিগত ১৬-১৭ বছর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। সাথে ছিলো পুলিশ। আমি নিউজ চ্যানেল গুলোর প্রতিবেদন দেখতাম আর অবাক হতাম। স্বৈরাচারের আমলেও অনেক নির্যাতনের নিউজ ভাইরাল হতো, আমি ভাবতাম দেশের অবস্থা বাস্তবিক অর্থে আরো ভয়াবহ!!
যাইহোক, হাসিনার ক্ষমতার লোভ যে কতটা ছিলো সেটা ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে আলেম উলামার উপর গণহত্যা এবং ২০২৪ সালের ছাত্রজনতার উপর গণহত্যা! -- মানে হাসিনার মতবাদ ছিলো হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাক তাতে তার কিছু যায় আসে না, তার শুধু ক্ষমতাই চাই। কবরে/চিতায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত সে বাংলাদেশের ক্ষমতায় একক ভাবে থাকতে চেয়েছিলো। যেমনটা চেয়েছিলো তার বাবা শেখ মুজিব।
আর এই আওয়ামিলীগই এতো এতো মানুষ মারার পর কোন অনুতাপ তো নাইই, উপরন্তু তারা হুমকি দিয়েই যাচ্ছে। তারা ক্ষমতায় গেলে ড. ইউনুসকে জেলে পাঠাবে। সমন্বয়কদের দেখে নিবে। সরকার পতনের যাদের ভূমিকা ছিলো তাদের দেখে নিবে। মানে এমন কোন হুমকি নেই যা তারা দিচ্ছে না। তাদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে একদল ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক। তারা ক্ষমতায় যেতে ভারতে বসে বিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত। তাদের সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে ভারতের 'র'।
আওয়ামিলীগের প্রবাসী সরকার গঠনের জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বর্তমান অস্থায়ী সরকারকে কাউন্টার দিয়ে তারা প্রবাসী সরকার গঠন করবে, এরপর তারা ভারতের প্রেসক্রিপশনে দেশে তাদের দলীয় কার্যক্রম চালাবে। সত্যি বলতে বিষয়টা ঘটার সমূহ সম্ভাবনা দেখতে পারছি আমি। কারন অনেক আওয়ামিলীগ এর নেতা এসে এসে স্যারেন্ডার করছে। অনেক বিদেশে পালিয়ে থাকা ছাত্রলীগ নেতা দেখলাম দেশে এসে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। চট্টগ্রামে তো দেখলাম ছাত্রলীগের সাথে ছাত্রদল, ছাত্র শিবিরের সংঘর্ষও হয়েছে। এদের বর্তমান অবস্থা দেখে মনে হয় না যে ২ মাস আগে এরা গণহত্যা সংগঠনকারী দল। এমন দাপুটে অবস্থান, এমন আগ্রাসী মনোভাব এক ভয়াবহ সময়ের দিকে ইঙ্গিত করে।
বর্তমান রাষ্ট্রপতিও দেখলাম এই বর্তমান বিপ্লবী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মিথ্যাচার করলেন। আমি মনে করি এই কাজটা পরিকল্পিত। হাসিনার প্রবাসী সরকার গঠনের কথা চারিদিকে চাওর হওয়ার দিনের মাথায় তিনি হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে মিথ্যাচার করলেন। এর সাথে যোগসাজশ অবশ্যই আছে। আরো একটা মজার বিষয়, বাংলার বিখ্যাত চাপাবাজ ব্যারিস্টার সুমনও বিদেশ থেকে বাংলাদেশে এসে ধরা দিয়েছে। আস্তে আস্তে গর্তে লুকিয়ে থাকা আওয়ামীলিগের সব পান্ডারাই সামনে আসছে। দেশের পরিস্থিতি আবার বিতর্কিত করতেই ওদের পায়তারা। যখন দেখছে তারা নিষিদ্ধ হওয়ার পথে ঠিক তখনই তারা আবার ফ্রন্টলাইনে আসতে শুরু করেছে। আর সাথে মদদ দিচ্ছে মতি ভায়ের প্রথম আলো আর মাফুজ আনামের ডেইলি স্টার। ওরা বরাবরই ভারতের মদদপুষ্ট।
এখন বিষয় হচ্ছে আওয়ামিলীগ বরাবরই হিংস্র প্রকৃতীর। ওরা কেমন হিংস্র এটা বর্তমান সোস্যালমিডিয়া ঘাটলেই বুঝা যায়। জেনোসাইড ঘটানোর পরেও বিন্দু পরিমান অনুতপ্ত তো হয়ই নাই, উপরন্তু দেশের মানুষকে ওরা হুমকিই দিয়ে যাচ্ছে যে সামনে ক্ষমতায় গেলে ওরা সবাইকে দেখে নিবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের মানুষ তো আওয়ামিলীগকে ভোট দিবে না, তাহলে ওরা এতো আত্মবিশ্বাসের সাথে কিভাবে বলে যে ওরা ক্ষমতায় যাবে আর প্রতিশোধ নিবে!?
ঠিক এই সময় আসে আওয়ামিলীগ ও র এর জয়েন্টভেঞ্চারে প্রতিষ্ঠিত সম্ভাব্য এবং সম্ভাব্য প্রবাসী সরকার। আর এতে ওদের সহযোগী হতে পারে হাসিনাপন্থী একদল পুলিশ, সেনাবাহিনীর কিছু অফিসার আর বর্তমানে দেশে ঘাপটি মেরে থাকা একদল আওয়ামী পান্ডা। অবাক করা বিষয় হচ্ছে অনেক আওয়ামী এমপি যারা কোন এক সময় বিদেশে পালিয়েছিলো তারাও দেশে আসছে। আমার পরিচিত এক ছাত্রলীগ নেতা, সে এতোদিন ভারতে থাকলেও এখন সে দেখলাম বাংলাদেশে। মাঝে কিছুদিন ঘুরাঘুরি করলেও আবার গা ঢাকা দিয়েছে দেখলাম।
যদি আওয়ামিলীগের নেতৃত্বে ভারতে প্রবাসী সরকার গঠিত হয়, তবে বাংলাদেশে অনেক ভয়াবহ কিছুই ঘটবে যা আমরা চিন্তাও করতে পারবো না। ইভেন ভারতও অনেক কিছু ঘটাবে যা আমাদের ধারনার বাইরে। কিছুদিন পর পর হিন্দুদের আন্দোলন, এই আন্দোলন, ঐ আন্দোলন -- কত আন্দোলনই তো দেখি যার কোন বাস্তবিক দলিল নেই। এসবের পেছনে কে বা কারা কলকাটি নড়ছে এসবও দেখি।
অতএব জুলাই বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন কোনকিছুই টোলারেট করা যাবে না। বর্তমান রাষ্ট্রপতি নতুন করে শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন, এর গ্যারান্টি কি যে উনি সেটা আওয়ামী মদদের করেন নাই। আবার এর গ্যারান্টিই বা কি যে আওয়ামীলিগ প্রবাসী সরকার গঠন করলে তিনি সেই সরকারের মদদে বর্তমান বিপ্লবী সরকারকে অকেজো করতে তিনি কাজ করবেন না? আসলে এর কোন উত্তর আমাদের জানা নেই।
তাই আমাদের সোচ্চার হতে হবে। সকল চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আওয়ামিলীগকে মিনিমান ৩ নির্বাচনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ছাত্রলীগকে আজীবন নিষিদ্ধ করতে হবে।
এগিয়ে যাক দেশটা আমার।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
মন্তব্য: ০