Alapon

দয়া করে আওয়ামিলীগের উষ্কানিতে পা দিবেন না



ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার ২ দিন পরেই হিন্দুরা ঢালাও ভাবে গনসমাবেশ করলো। তাদের মহা দাবি। তারা নাকি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারা নাকি তুরুপের তাস। তাই তাদের সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। অথচ বিগত আওয়ামী আমলে আমরা দেখেছি রাষ্ট্রের হেন কোন জায়গা নেই যেখানে তারা অগ্রাধিকার পায়নি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে মাদ্রাসা বোর্ডের পরিচালকও হিন্দু ছিলো। আর কি বলবেন বলেন?

২৪শের আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের মাঝে অনেক হিন্দুও আছেন। তারা দেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়েছেন। জীবনের মায়া করেন নি। অনেকটা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সিলেটের জগজ্জোতি দাসের মতো। সবার আগে দেশকে দেখেছেন তিনি। তাইতো ভারতীয় আর্মিদের হাতে তাঁকে প্রাণ দিতে হয় কিন্তু তৎকালীন আওয়ামী মিডিয়া এটাকে পাকিস্তানিদের হাতে হত্যা বলে চালিয়ে দিয়েছিলো। এইসব দেশপ্রেমিক হিন্দুর বড়ই অভাব দেশে।

ইদানিং উগ্রবাদী সংগঠন ইস্কনের মদদে চট্টগ্রাম হয়ে গেলো বিশাল গেরুয়া সম্মেলন। ওখানে অনেক যুবলীগের নেতা-কর্মীদেরও দেখা গেছে। ইস্কন কেমন সংগঠন সেটা জাতি জানে। ইমাম হত্যা, মুসলিমদের বসতি দখল, উষ্কানি মূলক কর্ম কান্ড সহ বহুবিধ অভিযোগ আছে ওদের বিরুদ্ধে। এদের ঘাটি হলো চট্টগ্রাম। কিছুদিন আগে উপজাতিদের মন্দির ভাঙা হয়েছিলো। এর কাছেই ছিলো হিন্দু বসতি। তারাই বলেছিলো যে হামলা ওখান থেকে হয়েছিলো। ওখানে ইস্কনের হার্ডক্যোর একটিভিটি দেখা যায়। এই ইস্কন কিন্তু মূলৎ মডারেট হিন্দু ধর্মের প্রবর্তন করছে। হিন্দু ধর্মে যেসব বিষয়ের সাথে তাদের অসঙ্গতি আছে, সেইসকল বিষয় গুলোকে তারা মডারেশন করে বেদ পুনঃরায় পাবলিশ করে। এজন্য অনেক হিন্দুই এই ইস্কনকে পছন্দ করে না। অনেকেই তাদের বিরোধী। দুনিয়া ব্যাপী হিন্দু ধর্মের লেবাস ধরে মূলত ভারতের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নে মূখ্য ভূমিকা পালন করে।

সাথে আছে বাংলাদেশে চরম সাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ। এই হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ নিয়ে একবার হিন্দু মহাজোটের প্রধান গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেছিলেন যে এই প্রতিষ্ঠান মূলত আওয়ামিলীগ ও ভারতের ফান্ডিং এ গঠিত প্রতিষ্ঠন। যাদের দিয়ে মূলত আওয়ামিলীগ ধর্ম ভিত্তিক নোংরা রাজনীতি গুলো করে।

ইদানিং হিন্দুদের এই মহা আন্দোলন দেখে একটা কথাই বলবো, তারা অধিকার আদায় নয় বরং আওয়ামিলীগ এর পক্ষে পরোক্ষ আন্দোলন করেছে। আমার এটাই মনে হচ্ছে। বিগত আওয়ামিলীগের আমলে কোন হিন্দুকে দেখিনাই আন্দোলন করতে। অথচ তখনও তাদের উপর যথেষ্ট হামলা-নির্যাতন হয়েছে। তখন আওয়ামী পান্ডারা এসব করতো আর তারা এগুলোকে সুইট পেইন হিসেবে নিয়ে ভুলে যেত। কারন অধিকাংশ হিন্দুই দেশের খেয়ে দেশের পরে শেষ বয়সে ভারতে গিয়ে স্যাটেল হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আমার পাশের বাসায় এক বন্ধু। তারা স্বপরিবারে ভারতে স্যাটেল। কলকাতার সল্টলেক না কি যেন এরিয়া ওখানে তাদের নিজেদের বাসা আছে। বাংলাদেশেও টাকার অভাব নেই কিন্তু স্যাটেল তারা ভারতে। ছোটবেলায় এক ব্যাক্তিকে নানা বলে ডাকতাম। তারা বাংলাদেশে সব কিছু বিক্রি করে দিয়ে স্বপরিবারে ভারতে স্যাটেল। তবে বর্তমানে শুনেছি অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছে। তাও বাংলাদেশে ফিরবে না। তারা মনেপ্রাণে ভারতকে ভালোবাসে।

আর তাইতো আওয়ামিলীগের আমলে নির্যাতন হলেও তারা সেগুলোকে সুইট পেইন হিসেবে নিতো। কারন আওয়ামিলীগ ভারতের স্বার্থকে বাংলাদেশের উর্ধ্বে প্রাধান্য দিতো। আর ভারতের স্বার্থ মানে হিন্দুদের স্বার্থ। তবে সবাই না। দেশ প্রেমিক হিন্দুর সংখ্যাও বোধ করি কম না। যেমন জামায়াতের হিন্দু শাখা বা মনেপ্রাণে বিএনপি করা সনাতনী ভাই-বোনেরা।

বর্তমানে ইস্কন ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে দেশকে অস্থিতিশীল ও আওয়ামিলীগকে রিস্টোর করার যে পায়তারা চলছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কোন কারন নেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দলন করার। তারা সরকারের বিরুদ্ধে লংমার্চ করবে, সরকার পতন ঘটাবে। কিন্তু কেন? আওয়ামিলীগের বিচার করছে বলে নাকি অধিকার আদায়। যদি অধিকার আদায়ের কথা বলেন তবে বলবো এই সরকার এমন কোন আইন জারি করেনাই যাতে করে আপনাদের অধিকার হরন হয়। সবার জন্য উন্মুক্ত। যোগ্যতা প্রমাণ করে চাকরি পেতে হবে। সংখ্যালঘু বলে মুখে তুলে খাইয়ে দিতে হবে এমন আইন কোন দেশে নেই। আপনারা এই আন্দোলন মূলত মুসলিমদের বিরুদ্ধে করছেন। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার উষ্কানি দিতেই করছেন যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এখন সরকারের উচিত হবে হিন্দুদের আন্দোলন করতে দেয়া। শুধু চারিদিকে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে দেয়া যাতে কোন প্রকার অস্থিতিশীল পরিবেশ কেউ তৈরি করতে না পারে। বাইরে থেকেও আওয়ামিলীগ হামলা করে কোন সমস্যার সৃষ্টি করতে না পারে।

পঠিত : ৩২৩ বার

মন্তব্য: ০