আবুল হাসান খারকানি রহ. এর ঘটনা
তারিখঃ ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১৫:১০
শাহ আবুল হাসান খারকানি রহ. এক বুজুর্গ ছিলেন। সাহেবে কারামত ছিলেন। এক হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আসলো তাঁর মুরিদ হওয়ার জন্য। আর শাইখ তখন জঙ্গলে গিয়েছেন লাকড়ি কুড়িয়ে আনার জন্য। লোকটি শাহ আবুল হাসানের বাড়ির বাইরে থেকেই জিজ্ঞেস করলেন, শাইখ কোথায়। তার আহলিয়া জবাব দিলো ভিতর থেকে, আরে সে শায়খ হলো কবে থেকে? সে বুজুর্গ না। খামোখা তোমরা তার পিছনে ঘুরে বেড়াচ্ছ। রাতদিন তো আমি তার সঙ্গে থাকি, আমি তো জানি সবকিছু, তোমরা কিছুই জানো না। এখন এই বেচারা কাঁদতে শুরু করল আর বলল, হে আল্লাহ! আমি এক হাজার মাইল সফর করে এসেছি তাকে বুজুর্গ মনে করে অথচ এই নারী কী যা তা বলছে? মহল্লাবাসী বলল যে, এই নারী অভদ্র অশিষ্ট। এ হচ্ছে ওই বুজুর্গের বিজ্ঞতা ও চাতুর্যতা যে, তিনি এই নারীকে সহ্য করছেন। তারা বলল, যাও জঙ্গলে গিয়ে শায়খকে তালাশ করো। জঙ্গলে গিয়ে দেখতে পেলেন যে, শাহ আবুল হাসান খারক্বানি রহ. বাঘের পিঠে চড়ে আসছে আর লাকড়ির বোঝাও রয়েছে বাঘের পিঠে চাপানো এবং তার সাপ দিয়ে বানিয়েছেন চাবুক।
লোকটিকে দেখে শাহ আবুল হাসান বললেন, মনে হচ্ছে তুমি আমার ঘর হয়ে এসেছ, তোমার চেহারা মলিন দেখেই বুঝে গেছি যে, আমার স্ত্রীর অভিযোগ শুনেছ হয়তো। সেদিকে খেয়াল করো না। তারই বরকতে আল্লাহ তা’আলা আমাকে এই কারামাত দিয়েছেন যে, এই বাঘকে আমার অধীনস্ত করে দিয়েছেন আর আমি তার মাধ্যমে কাজ নিচ্ছি। দৈনিক তার পিঠে লাকড়ির বোঝা চাপিয়ে নিয়ে আসি আর সাপকে আল্লাহ তাআলা আমার চাবুক বানিয়ে দিয়েছেন। বাঘ যখন চলে না থেমে যায় তখন আমি সাপের চাবুক দিয়ে আঘাত করি।
মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি রহ. মসনবি শরিফের মধ্যে এই ঘটনা বর্ণনা করেন এবং সেখানে একটি শে’র (কবিতা) লিখেন। হজরত মাওলানা শাহ আবদুল গনি সাহেব রহ. কবিতাটি খুব আনন্দ চিত্তে পড়তেন:
گر نہ صبرم می کشیدے بارزن کے کشیدے شیر نر بے گار من
আমার ধৈর্য যদি এই তিক্তভাষী মহিলাকে সহ্য করতে না পারে তবে আমার ধৈর্য এই মহিলার তিক্ততার ভার বহন করবে না। তাহলে কি এই বাঘ আমার বোঝা বহন করার কাজ করত, আমার মজদুরি করত? আল্লাহ তা’আলা এই সম্মান আমাকে তার বরকতে দিয়েছেন। [ওয়াজ, হুক্বুক্বুন নিসা: ৪২]
মন্তব্য: ০