Alapon

সেক্যুলারিজম: উম্মুল কুফুর



আজ সবাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গলা ফাটায়, কিন্তু খুব কম মানুষই সেই বিষবৃক্ষের মূল আঘাত করে, যার গর্ভ থেকে ফ্যাসিবাদ জন্ম নেয়। সেই বিষবৃক্ষ-মূলের নাম— সেক্যুলারিজম।

সেক্যুলারিজম হলো উম্মুল কুফুর। আধুনিক সকল কুফুরের মা এই সেক্যুলারিজম। জাতীয়তাবাদ, মানবতাবাদ, লিবারালিজম, কমিউনিজম, ফ্যাসিবাদ— সব তারই সন্তান।

তাই মাকে রেখে, বাচ্চাদের গালি দেওয়া অর্থহীন। শুধু ফ্যাসিস্টদের গালি দেওয়া অর্থহীন। মাকে অক্ষত রেখে গর্ভের সন্তানের বিরুদ্ধে লড়াই হলো আত্মপ্রবঞ্চনা।

আমাদেরকে বুঝতে হবে— সেক্যুলারিজম কেবল ব্যক্তিকেই পথভ্রষ্ট করে না, সে ভেঙে ফেলে সমাজব্যবস্থার মূলভিত্তি, ধ্বংস করে এক সুন্দর জনপদ, চূর্ণ-বিচূর্ণ করে আল্লাহভীতির ওপর দাঁড়ানো সভ্যতার ভিত।

এ কারণেই নবীগণ (আ.) কখনোই কেবল ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়েননি; তাদের জিহাদ ছিল সভ্যতা কেন্দ্রীক, সিস্টেমের বিরুদ্ধে। পুরো কওম, পুরো জনপদকে কেন্দ্র করে। তাদের ডাক ছিল একটাই—

يٰقَوْمِ اعْبُدُوا اللّٰهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلٰهٍ غَيْرُهُ

“হে আমার কওম! আল্লাহর ইবাদত করো। তাঁর বাইরে তোমাদের আর কোনো উপাস্য নেই। আরাধনাযোগ্য অন্য কেউ নেই, কিছু নেই।”

এটাই নবীদের যুদ্ধের সারকথা— আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বাদে সকল প্রকার মিথ্যা প্রভু এবং সব ধরনের গায়রুল্লাহর দাসত্ব ভেঙে ফেলা।

আর আজকের দিনে সেই গায়রুল্লাহর পতাকা হাতে তুলে দাঁড়িয়ে আছে সেক্যুলারিজম।

তাই এখন মিনমিনে সুরে ও হীনমন্যতা প্রদর্শন না করে বরং স্পষ্ট করেই বলতে হবে— তাওহিদ আর শিরক, ঈমান আর কুফুর, ইসলামী সভ্যতা আর সেক্যুলার সভ্যতা— কখনোই এক হতে পারে না। কখনো এক ছিলও না।

যে ব্যক্তি, যে দল, যে গোষ্ঠীই সেক্যুলারিজমের পতাকা বহন করবে, সে অবধারিতভাবেই কুফুরির অপরাধে অপরাধী হবে।

সে যে নাম আর যত পরিচয়েই আসুক— “ডেমোক্র্যাট”, “ন্যাশনালিস্ট”, “হিউম্যানিস্ট”, কিংবা “ফ্যাসিস্ট”— সে আল্লাহর দুশমন।

এই ক্ষেত্রে, এসব বিষয়ে উচিত না নরমভাবে কথা বলা। বরং এসব ক্ষেত্রে উচিত হলো ধারালো ছুরির মতো সত্য উচ্চারণ করা—

• সেক্যুলারিজমকে আঁকড়ে ধরা মানেই কুফুরির তাবুতে আশ্রয় নেওয়া।

• আর কুফুরিকে ভালোবাসা মানেই আল্লাহকে শত্রু বানানো।

• তাওহিদের পতাকা আর সেক্যুলারিজমের পতাকা— একই মাঠে, একই সাথে, একই সময়ে উড়তে পারে না।

সাইয়েদ কুতুব তো পড়েছেন। তিনি ইসলাম আর জাহিলিয়াতের স্পষ্ট বিভাজন টেনে দেওয়ার একটা আইডিয়া দিয়েছেন।

সমাজকে এই ইসলাম আর জাহিলিয়াত, তাওহিদ আর শিরক, ঈমান বনাম কুফুর— এসবের ভিত্তিতে মেরুকরণের কাজ করতে হবে।

সুতরাং, এই মৌলিক চিন্তা মাথায় রেখেই চলতে হবে। তাই আজকের লড়াই শুধু ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে করলেই হবে না। বরং সেই ফ্যাসিসমের মায়ের বিরুদ্ধেই করতে হবে— যার নাম সেক্যুলারিজম।

আমাদের স্পষ্ট করে বুঝতে হবে— ঈমান বনাম কুফুর যুদ্ধের মাঝামাঝি কোনো জায়গা নেই। কখনো ছিলও না।

~রেদওয়ান রাওয়াহা

পঠিত : ৮২ বার

মন্তব্য: ০