Alapon

নৈতিক মূল্যবোধ ও শিক্ষা

বিদ্যা মানে জ্ঞান, শিক্ষা মানে আচরণে পরিবর্তন। সব শিক্ষাই বিদ্যা কিন্তু সব বিদ্যা শিক্ষা নয়; যদি তা কার্যকরী বা বাস্তবায়ন করা না হয়। জ্ঞান যেকোনো মাধ্যমেই অর্জন করা যায়, অধ্যয়ন জ্ঞানার্জনের একটি পন্থা মাত্র। অধ্যয়ন তথা জ্ঞানচর্চা বা বিদ্যার্জন সব সময় শিক্ষার সমার্থক নয়। ইসলামে শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো আদম সন্তানকে মানুষরূপে গড়ে তোলা। যে শিক্ষা আত্মপরিচয় দান করে, মানুষকে সৎ ও সুনাগরিক হিসেবে গঠন করে এবং পরোপকারী, কল্যাণকামী ও আল্লাহর প্রতি অনুরাগী হতে সাহায্য করে, সে শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা। শিক্ষা মানুষের অন্তরকে আলোকিত করে, অন্তর্দৃষ্টি উন্মোচিত করে, দূরদর্শিতা সৃষ্টি করে। তাই আল্লাহ তাআলা বাবা আদম (আ.) কে সৃষ্টি করে প্রথমে তাঁর শিক্ষাব্যবস্থা করলেন। কোরআনের বর্ণনায়, ‘আর আল্লাহ তাআলা আদমকে সকল বস্তুর পরিণতি শেখালেন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ৩১)। যে জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষের অন্তর হিংসা, বিদ্বেষ ও ঘৃণা থেকে মুক্ত হয়ে ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হয়, তা–ই ইসলামি শিক্ষা।মহান আল্লাহ ইসলামকে একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে দিয়েছেন।যেমন তিনি বলেছেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ (সূরা মায়েদা : ৩)। সেইসঙ্গে মানব জীবনের জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে নাযিলকৃত পবিত্র কোরআনে সকল বিষয়ে নির্দেশনাও দিয়েছেন। যেমন ইরশাদ করেন, ‘আসমান ও জমিনের মধ্যে এমন কোনো বিষয় নেই যে বিষয়ে এই স্পষ্ট কিতাবে বর্ণনা করা হয়নি’।(সূরা নামল : ৭৫)। অন্য আয়াতে আল্লাহপাক আরো বলেন, ‘আমি এই কিতাবে কোনো বিষয়ই (লিপিবদ্ধ করতে) বাদ দেইনি।’ (সূরা আনআম : ৩৮)।  সুতরাং ধর্মের মৌলিক অনুসরণসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তথা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে  সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য কুরআন-হাদীস থেকে জ্ঞানার্জন তথা ইসলাম শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
             
                 
ইসলাম শিক্ষা একটি অধ্যয়নের ক্ষেত্র, যা প্রাসঙ্গিক বিষয় হিসাবে বিবেচিত হয়, যদি আমরা এটিকে একটি পাঠ্য বিষয় হিসাবে গ্রহণ করি, তাহলে এটিকে কেবল ইসলামিক বিজ্ঞান অধ্যয়ন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে, তবে ইসলামিক শিক্ষা অনেক বিস্তৃত অধ্যয়নের ক্ষেত্র। এটাই শুধু ধর্ম হিসেবে ইসলামের উচ্চশিক্ষায়তন ইতিহাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, ইসলামিক ধর্মতত্ত্ব থেকে ইসলামিক আইনশাস্ত্র বিজ্ঞানের পুরো ছাতা এর অন্তর্ভুক্ত, ইসলামিক আইনশাস্ত্রের ধর্মতত্ত্ব, আইনশাস্ত্রের নীতি, ইসলামী সভ্যতা, ইসলামী মানুষ, ইসলামী দেশ, ইসলামী ইতিহাস, ইসলামী সংস্কৃতি, ইসলামী ভাষা সাহিত্য, ধর্ম, বিশ্বদর্শন এবং সভ্যতা হিসাবে মুসলিম এবং অমুসলিম পণ্ডিতদের দ্বারা উচ্চশিক্ষায়তন পদ্ধতিতে ইসলামের ব্যাপক অধ্যয়নের জন্য নিবেদিত, যার মধ্যে এর ধর্মগ্রন্থ (কোরআন) অধ্যয়নের পাশাপাশি, ইতিহাস জুড়ে দর্শন, আইনশাস্ত্র এবং মুসলিম সমাজ অধ্যয়নও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে ধর্মীয় চিন্তার সকল প্রথাগত ধরন রয়েছে যেমন তফসীর (কুরআনের ব্যাখ্যা), হাদীস (নবীর ঐতিহ্য), কালাম (ইসলামী দর্শন), ফিকহ্ (ইসলামী আইনশাস্ত্র), তাসাউফ (সুফিবাদ)।     
      
  
"পড়, তোমার রবের নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।" এখানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তার মহাগ্রন্থ আল কুরআনের নাযিলের শুরুতেই বলে দিয়েছেন ইসলামী শিক্ষা অর্জনের কথা।  নীতিবোধ ছাড়া শিক্ষা সমাজের কাছে ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে। তাই আজ ইউরোপ থেকে আমেরিকা সবখানে একই আওয়াজ 'Back to the religion'। ইসলাম ধর্মই মানুষের স্বস্তি ও শান্তির একমাত্র ঠিকানা। প্রত্যেকের জন্য ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিত। জন হাপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট স্টিভেন মুলার বলেন- "বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অতীব দক্ষ বর্বর তৈরি করছে। কারণ আমরা তরুণদের কোন ধর্মীয় শিক্ষা দিচ্ছি না। যদিও তারা ক্রমাগত সেই মূল্যবোধের অনুসন্ধান করে চলেছে।"  ইংল্যান্ডের শিক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান Stim lihi বলেছেন "If you teach your children three R's(reading, writing and arithmetic)। এবং যদি তুমি তোমার ছেলেকে চতুর্থ আরেকটি R শিক্ষা দিতে ভুলে যাও, সেটি হলো religious । তবে তুমি তোমার সেই ধর্মহীন ছেলেটার কাছ থেকে পঞ্চম আর একটি R পাবে। যেটা হলো resculity অর্থাৎ বর্বরতা।" যেখানে ইসরাইলের মত অবৈধ, ঘৃণ্য , বর্বররা পর্যন্ত তাদের শিক্ষা ব্যাবস্থায় স্নাতক পর্যন্ত ওল্ড টেস্টামেন্টের একটি অংশ পড়া বাধ্যতামূলক করেছে। সেখানে বাংলাদেশ ধর্মীয় চেতনা সমৃদ্ধ একটি মুসলিম দেশ হয়েও কেন সেখানে ইসলামী শিক্ষা থাকবে না? আমি সাম্প্রতিক সময়ের কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করছি। প্রথম ঘটনা দেশের প্রথিতযশা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর। জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মৃত নবজাতকের লাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাস্টবিনে নবজাতকের লাশ! দ্বিতীয় ঘটনা হচ্ছে ঢাকার মিরপুর এলাকায় একটি কাক ডাকা ভোরে রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে একটি নবজাতকের লাশ। দেখে মনে হলো এইমাত্র ভূমিষ্ঠ হওয়া। তৃতীয় ঘটনা হলো ঢাকার একটি বিখ্যাত মেডিকেলের বেডে বিয়ে হচ্ছে। ডেলিভারি কেইস! নয়ন বন্ডের পৃষ্ঠপোষকদের মাদক কেলেঙ্কারি আড়াল করতেই মিন্নিকে বলির পাঠা করা হয়েছে।২০২০ এর ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামীর সঙ্গে সিলেটের এমসি কলেজে বেড়াতে যাওয়া এক নববধূকে ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়।  কিছুদিন পরপর শোনা যায় দেশের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তরুণ মেধাবীরা মাদক রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছে, রেপ, ধর্ষণ, হত্যা নির্দ্বিধায় ঘটছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এসব কেন ঘটছে? আর এর উত্তর একটাই আমাদের মধ্যে ইসলামী ভাবাদর্শ, ইসলামী শিক্ষা নেই। আমাদের মাঝে যদি ইসলামী শিক্ষা থাকতো তাহলে আজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বর্বর তৈরি হতো না। আমাদের মাঝে যদি ইসলামী শিক্ষা থাকতো তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাস্টবিনে নবজাতকের লাশ আর অভিজাত শহরের রাস্তায় নবজাতকের লাশ পাওয়া যেত না।  ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে আজ বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বেডে বিয়ে হচ্ছে। যদি ইসলামী শিক্ষা থাকতো তাহলে তরুণ প্রজন্ম জানত জেনার শাস্তি কি ব্যভিচারের শাস্তি কি। ফলে তারা এসব থেকে দূরে থাকতো, তাদের মাঝে আখেরাতের চিন্তা থাকতো। তাই দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, জাতির ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় আমাদের অবশ্যই অবশ্যই ইসলামী শিক্ষা অনস্বীকার্য এবং সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা দরকার।
    
    
বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষার ভিত্তিতে সৎ, দক্ষ, দেশ প্রেমিক নাগরিক তৈরীর উদ্দেশ্যে একটি ইসলামী শিক্ষা আন্দোলন চলমান রয়েছে। এই ইসলামী শিক্ষা আন্দোলনের সূচনা হয় ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব শহীদ আব্দুল মালেক ভাইয়ের শাহাদাতের মধ্য দিয়ে। তিনি ১৯৬৯ সালের ১৫ই আগস্ট শাহাদাত বরণ করেন। আর তার শাহাদাত দিবস এখন ইসলামী শিক্ষা দিবস হিসেবে পালিত হয়। দেশ ব্রিটিশ উপনিবেশ মুক্ত হওয়ার পর দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হবে এ নিয়ে একটি আলোচনা সভা হয় । সেখানে শহীদ আব্দুল মালেক ভাইয়ের মেধা, যোগ্যতা , বুদ্ধির কাছে হেরে গিয়ে কথিত সমাজতন্ত্রের কিছু সন্ত্রাসী পাষণ্ডরা ভাইকে হত্যা করে। শহীদ আব্দুল মালেক ভাই চলে গেছেন কিন্তু রেখে গেছেন তার শুরু করা সেই ইসলামী শিক্ষা আন্দোলন। যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশে ইসলামী শিক্ষা বাস্তবায়ন হবে। তরুণ সমাজ অনৈতিকতা এবং কুলষতা মুক্ত সমাজ বিনির্মাণ করতে সক্ষম হবে। তার রেখে যাওয়া আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশে ইসলাম বাস্তবায়ন হবে, শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে , ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।
   

ইসলামী শিক্ষা না থাকার পরিণতি খুবই ভয়াবহ আমি কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করছি।
•আরো অনেক আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলে একজন নাইট গার্ড থাকতেন। তার একটা ছেলে ছিল সে পড়াশোনায় মোটামুটি ভালো। তো একদিন তিনি রাতে ডিউটি করার পর সকালবেলা পিঠা  বিক্রি করতেছেন, এটা দেখে সকলে থেকে জিজ্ঞাসা করল যে আপনি এত কষ্ট কেন করছেন রাতে পরিশ্রম করেছেন এখন আবার সকালে কাজ করছেন? তখন তিনি বললেন-" যে আমার ছেলে এসএসসি এবং এইচএসসিতে এ প্লাস পেয়েছে এখন তাকে মেডিকেলে ভর্তি করাতে হবে এজন্য কোচিং এ ভর্তি হবে তাই কিছু টাকা দরকার এজন্য একটু কষ্ট করছি। এর কিছুদিন পর দেখা গেল তিন দুপুর বেলা তরমুজ বিক্রি করতেছেন। সকলে অবাক হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করল যে আপনি রাত্রে কাজ করেন সকালে পিঠে বিক্রি করেন এখন আবার দুপুরবেলা তরমুজ বিক্রি করেন এত পরিশ্রম কেন? তখন তিনি উত্তর দেন-" যে আমার ছেলে কিছু দিনের মধ্যে মেডিকেলে চান্স পাবে আর সে চান্স পাওয়ার পর আমার আর কোন কষ্ট থাকবে না। এখন তার পড়াশোনার জন্য একটু না হয় কষ্ট করছি" তো একজন তাকে জিজ্ঞাসা করল আপনার ছেলে তো পড়াশোনা ভালো তাকে কি আপনি ধর্মীয় শিক্ষা দিচ্ছেন, সে কি নামাজ পড়ে, কোরআন অধ্যায়ন করে ? তিনি বলেন- আমার ছেলে ফিজিক্স , কেমিস্ট্রি নিয়ে আপাতত ব্যস্ত । সে এখন নামাজ, কোরআন পড়ে না। তবে আমার ছেলে খুব ভালো। আর এসবতো পরেও করা যাবে। হঠাৎ একদিন তিনি সকলকে মিষ্টি খাওয়ালেন এবং বললেন যে আমার ছেলে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে, তিনি তো খুব খুশি । কিন্তু কিছুদিন যাওয়ার পর ঘটলো ভিন্নধর্মী ঘটনা তিনি খুব বিষন্ন মন নিয়ে বসে আছেন এখন একজন তাকে জিজ্ঞাসা করল যে আপনি একজন ডাক্তারে বাবা  আপনি এমন ভাবে বসে আছেন কেন ? তখন তিনি বলেন যে-" আমার ছেলে মেডিকেলে পড়ে এটা ঠিক কিন্তু সে বাসায় এসে ইয়াবা খাওয়ার জন্য, গাজা খাওয়ার জন্য আমার কাছে টাকা চায় কিন্তু আমি দিতে না পারায় ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে তার মায়ের গায়ে হাত তোলে। আমার এই রকম ছেলের কোন দরকার নেই। সে ডাক্তার না হয়ে আমার সাথে নাইট গার্ড হলেও ভালো হতো। ( তথ্যটি সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সংগৃহীত )
• আজকে ইসলাম না থাকার কারণে ইউরোপ আমেরিকা একটি পশুর সমাজে পরিণত হয়েছে। আমেরিকাতে প্রতি সাতাশ সেকেন্ডে একজন করে মেয়ে ধর্ষণ হয়। প্রতি ৪৩ শতাংশ মানুষ জারজ সন্তান হয়। অহরহ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।
• আজ ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে গ্রহণ বর্জনের মাপকাঠি হারিয়ে গেছে। এক সময় মানুষ গ্রহণ বর্জনের মাপকাঠি হিসেবে গ্রহণ করত ভালো-মন্দ, নৈতিক -অনৈতিক, হালাল-হারামের বিষয়কে। আজ এসবকে ভাববাদ আখ্যা দিয়ে বাস্তববাদের নামে অন্যায়, অনৈতিক, হারাম বিষয়গুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। সুদ, ঘুষ এখন যেন অনুমোদিত। শোষনের হাতিয়ার সুদ আর অন্যায়ের হাতিয়ার ঘুষ সকলের কাছে সহনীয় হয়ে উঠেছে। এসবের বিরুদ্ধে মানুষের মনকে তৈরি করার কোন উদ্যোগ নেই।
•ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বেড়ে গেছে এবং শুরু হয়েছে কুৎসিত নারী ব্যবসা। ১৯৬৯ সালে নিউজ উইক এক সমীক্ষায় দেখিয়েছে পৃথিবীর দুই বিলিয়ন নরনারী এক কুৎসিত ugglist business এ জড়িয়ে পড়েছে যার নাম দেহ ব্যবসা। ডিশ কেবলের দ্বারা আক্রান্ত যুবক-যুবতিদের অবৈধ ক্ষুদা নিবারণের জন্য আজ হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে বিপরীত শ্রেণীর লোক। এভাবে এটিকে ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের যুব সমাজের নৈতিক মান খুঁজে নেওয়ার পাক্কা ব্যবস্থা করা হয়েছে। এবং এর সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে ব্লাক মেইলিং ও প্রতারণা। ধ্বংস  হতে যাচ্ছে শতাব্দীর কারিগরেরা।
• আজ ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে আমাদের তরুণ তরুণীরা ব্যাপক হারে অনৈতিকতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। তারা পর্নোগ্রাফি সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। ধ্বংস হতে চলেছে আগামীর বাংলার কান্ডারী শুধুমাত্র ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে।
• ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে অতীতে অনেক জাতি নিজেদেরকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। আর এর জলজ্যান্ত উদাহরণ ফিলিফাইন এবং স্পেন। একটা সময় এই দুটি দেশ মুসলমানদের করায়াত্তে ছিল কিন্তু ইসলামী শিক্ষা থেকে নিজেদেরকে দূরে সরিয়ে রাখার কারণে আজ তারা হারিয়ে গেছে সময়ের পরিবর্তনে। আজ ফিলিপাইন এবং স্পেন এ মুসলমানদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
তাই পরিশেষে বলতে চাই আমাদেরকে একটি সমৃদ্ধ জাতি তৈরি করতে ইসলামী শিক্ষার বিকল্প নাই।
                    

একজন মানুষ পরিপূর্ণ শিক্ষিত হতে হলে তাকে তিনটি গুণ অর্জন করতে হবে। নৈতিক মূল্যবোধ, সামাজিক মূল্যবোধ এবং আদর্শিক মূল্যবোধ। এই তিনটি মূল্যবোধের মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো আদর্শিক মূল্যবোধ। আর এই আদর্শিক মূল্যবোধের জন্য চাই ইসলামী শিক্ষা । আজ বাংলাদেশে জনসংখ্যার কোন অভাব নেই কিন্তু অভাব মানুষের।
আমাদের ডাক্তারের অভাব নেই, ইঞ্জিনিয়ারের অভাব নেই, অধ্যাপকের অভাব নেই, সাংবাদিকের অভাব নেই, রাজনীতিবিদদের অভাব নেই। কিন্তু অভাব নৈতিকতা সম্পন্ন ডাক্তারের, নৈতিকতা সম্পন্ন ইঞ্জিনিয়ারের, নৈতিকতা সম্পন্ন অধ্যাপকের, নৈতিকতা সম্পন্ন সাংবাদিকের, নৈতিকতা সম্পন্ন রাজনীতিবিদের। আর এর জন্য চাই ইসলামী শিক্ষা‌। ইসলামী শিক্ষা ব্যতীত নৈতিকতা সম্পন্ন জনশক্তি তৈরি করা সম্ভব নয়। সর্বোপরি বলতে চাই সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, স্বাধীনতাকামী মানুষের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, একটি রাজনৈতিক নিপীড়ন মুক্ত, সাংস্কৃতিক গোলামী মুক্ত, অর্থনৈতিক শোষণ মুক্ত সমাজ গঠনের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই অবশ্যই ইসলামী শিক্ষা প্রসার প্রচার ঘটাতে হবে। ইসলামী শিক্ষা ব্যতীত শিক্ষা অসম্পূর্ণ। আজ জাতি গঠনের জন্য ইসলামী শিক্ষা অতীব প্রয়োজনীয়।।।
                           
লেখক:
মুশিউর রহমান, শিক্ষার্থী ও সংগঠক ।।

পঠিত : ১৮২ বার

মন্তব্য: ০