Alapon

বাঙালি নাস্তিকরা মূলত পুরোপুরিভাবে নাস্তিক হইতে পারে না!

বাঙালি নাস্তিকরা মূলত পুরোপুরিভাবে নাস্তিক হইতে পারে না। এই না হইতে পারায় তাদের জীবন মূলত প্যারাময় হয়ে ওঠে কিংবা ওঠার কথা। (তাদের অবস্থা হইলো, "লা-তামুতু ওয়ালা ইয়াহইয়া।" অর্থাৎ না জীবিত, আর না মৃত।) বিভ্রান্তি, অশান্তি এবং ভোগান্তি-- এই তিন আন্তিই তাদের একমাত্র এবং কেবলমাত্র প্রাপ্য হইতেছে। এই জায়গায় উন্নতি করতে হইলে তাদের বিকল্প আভাসভূমির কথা ভাবা লাগে। অর্থাৎ এই দেশের ধার্মিক হিন্দু-মুসলমান এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষের বিচরণভূমি থেকে আলাদা হওয়া লাগবে। এইটা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে তাদের অবস্থা এখন যাচ্ছেতাই। ধরেন, তাদের কেউ আপনাকে কিছু বিশ্বাস করাতে চাইছে অথচ আপনি বিশ্বাস করছেন না; এসময় সে কসম কাটবে এবং বলবে, 'খোদার কসম, আমি নিজের চোখে এইটা দেখছি। ইত্যাদি ইত্যাদি।' পরক্ষণেই হয়তো তার মনে হবে, 'হায় রে, কী বললাম এইটা! খোদার কসম বললাম কেন? আমি তো নাস্তিক! আস্তাগফিরুল্লাহ আস্তাগফিরুল্লাহ...!'

খেয়াল করেন, সে নাস্তিক, তাই ভুলক্রমে 'খোদার কসম' বলার কাফফারা দিতেছে 'আস্তাগফিরুল্লাহ' বলে! অথচ এই আস্তাগফিরুল্লাহর ভেতরও আল্লাহ আছেন। এই লোকটি বুঝতে পারলেও এবং না পারলেও অস্বস্তিতে ভুগতে থাকার কথা। তার সব পড়াশোনা, যুক্তিতর্ক এবং তার আন্দোলন কোথায় যেন গিয়ে মার খেয়ে যাচ্ছে। এদের অবস্থাটা উপলব্ধি করেই কবি নজরুল লিখেছেন,
"তর্ক করে দুঃখ ছাড়া কী পেয়েছিস অবিশ্বাসী?
কী পাওয়া যায় দেখ না বারেক
হযরতে মোর ভালোবাসি।"

এই অবিশ্বাসীরা গোটা সৃষ্টিজগতে কেবল আল্লাহর অস্তিত্ব অস্বীকার করার মতো যুক্তি ও উপায়-উপাদান খুঁজতে থাকে। তারা বলে, মরে যাওয়ার পর আমাদের আর কোনো জীবন নেই। আর জীবন যেহেতু একটাই, সুতরাং এইটাকে এনজয় করো। মরার পর আমরা পচেগলে যাবো। তখন কেউ আর আমাদের পুনর্গঠিত করতে পারবে না। তাছাড়া এতো এতো মানুষ-প্রাণী কেউই সৃষ্টি করেনি এবং কোনো একক সত্ত্বার পক্ষে সম্ভব নয়। ইত্যাদি ইত্যাদি। এইসব যুক্তিবাদী মুর্খদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলে রেখেছেন, "আ-আনতুম আশাদ্দু খালকান, আ-মিস-সামউ বানাহা?" (বলো, তোমাদের সৃষ্টি করা কঠিন, নাকি ওই বিশাল আকাশটা?) অর্থাৎ যিনি এইসব পেরেছেন, তিনি তোমাদের মৃত্যুর পরও পুনরায় জীবিত করতে পারবেন। তবুও অবিশ্বাস হলে, "ফাতারাব্বাসু হাত্তা ইয়া'তিয়াল্লাহু বি-আমরিহী।" (আল্লাহর সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে থাকো।)

লিখেছেন: মোস্তফা মাহাথির

পঠিত : ১৩১১ বার

মন্তব্য: ০