Alapon

মুসলিম সভ্যতা পতনের কারণ এবং কিছু কথা...

মুসলিম সম্প্রদায় ও সভ্যতার পতনের অন্যতম কারণ গুলোর ভিতর একটি কারণ হলো মুসলিমদের আত্নপ্রীতি ও আত্নকেন্দ্রীক চিন্তা চেতনা।
মৌলিকত্ব থেকে গাঁ বাচিয়ে পরকালীন জীবন ব্যবস্থার ঊর্ধ্বে দুনিয়াকেই প্রাধান্য দেওয়া মানুষগুলো নিজেকে মুসলিম দাবী করলেও আর যাইহোক তারা আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব এবং দাসত্ব থেকে নিজেকে মুক্ত মনে করে এবং তাঁর হুশিয়ারী কে দুনিয়ার চেয়ে কম মূল্যায়ন আমি এটা নিশ্চিত। 
আর তাদের অবস্থা হচ্ছে সেই সন্তানদের মত যারা বাবা এবং মায়ের আদরেই বড় হয় অতঃপর তাদেরকেই বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে,
আত্নপ্রীতি ও আত্নকেন্দ্রীকতা যৌগিক বিষয়। যা লালন করার ফলে মূলত ইচ্ছাকৃত অথবা অনিচ্ছাকৃত ভাবে হলেও ইসলামের সুমহান জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার যে দাবীসমূহ তা পুরণ করা সম্ভব হয় না।
কিন্তু একজন মানুষ যখন মন ও মস্তিস্কে আল্লাহর ভয় ও প্রণয় লালন করে তখন সে আল্লাহর গোলামে(মুসলিম) উন্নীত হয় তাছাড়া নয়।
এ কথানুযায়ী বাংলাদেশে কতজন মুসলিম রয়েছে সেটা আন্দাজ করতেই একটু ভ্রু কোচকাতে হয়,
তার কারণ, আমি যা দেখি সে অনুযায়ী বাংলাদেশে সিজনাল মুসলিমের সংখ্যা অনেক বেশি।
যেমন ধরেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ কিন্তু এসব নামাজে মসজিদে তেমন লোকজন নেই,কিন্তু জুমুআর দিন মসজিদে জায়গা ফাঁকা থাকে না।
রমজানের সময়,বিশেষ কোন দিনে সিজনাল মুসলিমদের আত্নপ্রকাশ ঘটে থাকে।
এর ভিতরে আর এক প্রকৃতির লোকও(বিশেষ করে পুরুষ) রয়েছে যারা ব্যক্তিগত জিবনে ইসলামকে খাতা কলমেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন, কিন্তু সম্পদ বণ্টণের ক্ষেত্রে ইসলামের সুমহান আদর্শ থেকে তারা এক চুল পরিমাণ পিছপা হবেন না,জেল জুলুম যাই হোক না কেন।
অপ্রাসঙ্গিক আলোচণার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি,
যা বলছিলাম যে বাংলাদেশে সিজনাল মুসলিম এর সংখ্যা বেশি।
আমি নামাজ আদায় করি আল্লাহর নির্দেশে কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে আল্লাহর নির্দেশের সাথে সাংঘর্ষিক কোন বিষয়কে যখন আমি সমর্থন করি তখন আমার পরিচয়ের পরিণত কি?
প্রশ্ন করুন নিজেকে...
আবার ধরুন আমি মসজিদে যাই নামাজ আদায় করতে, 
কিন্তু যখন কোন কনসার্টে বা নাচগানের আসরে নিমন্ত্রণ পাই তখন আমার ভূমিকা কি?

আল্লাহ পাক মানুষকে তারই ইবাদাত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন
অন্যকোন কিছুর ইবাদাত করার জন্য নয় (সুরা জারিয়াত ৫৬)।
আল্লাহ পাক মানুষকে যে সময় নির্ধারণ করেছেন তার পাই পাই হিসেব কি নেওয়া হবে না?
নামাজ, রোযা, হজ্জ,যাকাত(অল্পসংখ্যক মুসলিমই দিয়ে থাকেন) আল্লাহর নির্দেশ তাই আদায় করি,কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কি রাজনৈতিক নির্দেশনা দেন নি?
সাংস্কৃতিক নির্দেশনা কি দেন নি?
অর্থনৈতিক নির্দেশনা কি দেন নি?

তবে কেন নামাজ,রোযা,হজ্জ,যাকাত কে ইবাদাত মনে করে অন্যান্য নির্দেশগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছি আমরা?
কেন নিজেকে মুসলিম দাবী করে ধর্মনিরপেক্ষতা কে রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করছি?
কেন নিজেকে মুসলিম দাবী করে অপসংস্কৃতির স্রোতে গা ভাসিয়ে দিচ্ছি?
দ্বীনের ব্যাপারে উত্তম কথা বলেও নিজে অসদুপায়(সুদ,ঘোষ) অবলম্বন করছি?
কেউ না বুঝে এরূপ করছি,আবার কেউ বুঝে..।
যারা বুঝে এরূপ করছি তাদের জন্য ভয়ানক ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, আর তারাই মূলত আত্নকেন্দ্রীক চিন্তা ভাবনার ধারক বাহক।
যদি তারা এমন পরিস্থিতির শিকার হয় যেখানে নামাজ পড়া বিপজ্জনক অথবা অপছন্দনীয় সেখানে তারা নামাজও পড়বে না, ঠিক প্রতিটি ইবাদাতের ক্ষেত্রে তারা এমনই করে থাকে।
আর যেখানে যেটায় সুবিধা সেখানে সেটাই করবে।
অর্থাৎ পরিবেশের সাথে তাল দিয়ে চলে, যেন নিজের ক্ষতি না হয়।
স্বার্থকে প্রাধন্য দিয়ে চলে।
ইসলাম অনুযায়ী রাজনীতি করলে চাকরী চলে যেতে পারে, জেল জুলুম হতে পারে।
ইসলাম অনুযায়ী অর্থনৈতিক তৎপরতার কথা বললে জিবনের ঝুঁকি আসতে পারে ইত্যাদি।
অপরদিকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইচ্ছেমত খাও দাও ফুর্তি করো।
দুনিয়াকেই জান্নাত বানিয়ে নাও,আর সুবিধাবাদী ব্যক্তিরাই এরূপ করে থাকেন।
আর যারা না বুঝেও বুঝার চেষ্টা করছি না,
এ ক্ষেত্রে আমাদের উচিৎ কোরআনকে বুঝার চেষ্টা করা।
রাসুলের জিবনী থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা।

মুসলিম হতে হলে ব্যক্তিগত,সামাজিক,রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সকল দিক থেকেই মুসলিম হতে হবে।কারণ ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জিবন বিধান, 
এমন কিছু নেই যার নির্দেশনা ইসলামে নেই।
সর্বশেষ বলতে চাই,
আসুন ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে,নিজেকে রঙিন করুন ইসলামের রঙে।

সংগৃহিত

পঠিত : ১৩৩৮ বার

মন্তব্য: ০