Alapon

সরি! এখন আর লাশ দেখে চোখে পানি আসে না...

সরি, এখন আর চোখে পানি আসে না। আমি একজন স্ত্রী এবং মা হয়েও একরামুল হত্যার অডিও শুনে চোখে পানি আসে নাই। আমার মধ্যে এসব ফিলিংস এখন আর কাজ করে না।



বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিরুধিতা অনেক দিন ধরে করে আসছি। মুজিব আমলের সমালোচনা করেছি, বিএনপি এর সমালোচনা করেছি, আর এখন হাসিনা আমলে তীব্র প্রতিবাদ করে যাচ্ছি।


কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না। এদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় কলহ করতে ওস্তাদ, সমালোচনা করতে অভ্যস্ত, কিন্তু রাজপথে নেমে কোন আন্দোলন নয়। আমরা ভয় পাই। আমরা ফিলিস্তিনিদের-কাশ্মিরিদের দেখেও শিখিনা। আমাদের মেরুদন্ড সোজা হয় না। আমরা দরকার হলে তেলেপোকার মত মানসম্মানহীন শত বছর বেচে থাকতে চাই, কিন্তু আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঘের মতন লড়াই করে মরতে চাইনা। আমরা হলাম মেনি মাছের মতন, লিডারশীপের বড়ই অভাব । আমরা ভেড়ার মত কারো পিছন পিছন চলতে পারি কিন্তু নিজ থেকে নেতৃত্ব দিয়ে পুরা পঙ্গপালকে এগিয়ে নিতে জানি না।


এবারেও দেখবেন তিনদিনেই মানুষ সব ভুলে যাবে। ঠিক যেমন ভুলে গেছেন জনী, নিরব আর শত ছেলের হত্যাকান্ডকে। আর্তনাদ ফার্তনাদ তখন আর কানেও বাজবে না। আবারও ক্রিকেট-বলিউড নিয়ে মেতে উঠবেন। সাংবাদিকরা হাসিনাকে তেল দিবে। সুশিল সমাজ খালেদা জিয়া কেন প্রণব বাবুর সাথে দেখা করে নাই সেই সমালোচনা করবে, কোকোর মৃত্যুর দিন হাসিনাকে কেন গেইট থেকে ফিরিয়ে দেয়া হলো সেই সমালোচনা করবে। কিন্তু শেখ হাসিনা যে দেশের সকল ইন্সটিট্যুশানকে ধ্বংস করে ফেলেছে তা নিয়ে কেউ মুখ খুলবে না। তারা মুখে ফুলঝুড়ি ছোটাবে 'আপা আপনি মহান...।'


আমি ফেড আপ। আমি সবার উপরে ক্ষুব্ধ। এই তেল মারা, তোষামোদ করা রাজনীতি করার কারনে হিটলার মনোভাবের নেত্রী এখন বনে গেছে মানবতার মানসকন্যা। তথাকথিত উন্নয়নের লন্ঠন হাতে এগিয়ে যাওয়া ভয়ঙ্কর এক প্রলয়ঙ্কারি ঝড়। জিদের বসে স্যাটেলাইট উড়াচ্ছে, পদ্মা সেতু বানাচ্ছে আর যাকে অপছন্দ তাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। আইন আদালত বিচারের ধারও ধারছে না।


এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং করে এরা এভাবেই চিরদিনের জন্য ক্ষমতায় বসে থাকতে চায়। বসেও থাকে কিছু দিন। গত আট বছরে কত যে বিএনপি আর জামায়াতের ছেলে লাশ হোল এখন আর নামও মনে রাখতে পারি না। একরামুল আর এক সংযোজন সেই লিস্টে। এই লিস্ট দিন দিন লম্বা হবে। সরকারী দলের যাকেই অপছন্দ হবে, দরকারে তাকেই শেষ করে দিবে। হোক সে বিএনপি-জামায়াত কিংবা আওয়ামী লিগের। অথবা কোন ব্যবসায়িক শত্রু কিংবা লোভ লালসার শিকার।


কিপ দিস ইন মাইন্ড, রাজনৈতিক মানুষজনের পর আসবে সাধারন মানুষের পালা, এর থেকে মাফ পাবেনা আওয়ামী সমর্থকেরাও। এত অনিয়ম আর অত্যাচার নিজের চোখে দেখে সয়ে যাওয়ার মাসুল আপনারাও দিবেন।


বিএনপি-জামায়াতকে মেরে মেরে এরা হাত পাকিয়েছে, বিবেক খুইয়েছে, মানুষের কাছে এসব ঘটনাকে সহনিয় মাত্রায় নিয়ে গেছে। আপনারা কিছই করবেন না, আর বসে বসে প্রশ্ন করবেন আমাদের কিই বা আর করার ছিল? আফসোস করে বলবেন ইশশশ... শুধু যদি একজন নেতা থাকত? ভাবখানা এমন যেন নেতা এসে ডাকলেই সব ঝাপিয়ে পড়তেন। আসলে কিছুই করতেন না।


এত কিছু দেখে যেখানে সয়ে গেছেন, বলার পরেও যেখানে হুশ ফেরাতে পারিনি, ওয়ার্নিং দিলেও সেখানে আর কাজ হবে বলে মনে হচ্ছে না।


তাই এখন আর কান্না আসে না। খালি রাগ উঠে।

পঠিত : ৭৫৬ বার

মন্তব্য: ০