Alapon

পাঁচ অঙ্গ দিয়ে একসঙ্গে একাধিক ভাষায় লেখেন তপন!

পেশায় স্কুল শিক্ষক৷ তাঁর প্রতিভা দেখলে চক্ষুচড়ক গাছ হতে বাধ্য! স্যারকে সম্মান জানাতে কেউ কেউ তাকে এ যুগের সব্যসাচী বলে সম্বোধন করেন৷ কারো কারো মতে, তিনি সব্যসাচীর চেয়েও বেশি৷

এই শিক্ষকের অনুরাগীরা বলেন, সব্যসাচী তো শুধু দু’হাতে এক সঙ্গে বন্দুক চালাতে পারতেন৷ আর আমাদের তপনস্যার নিজের পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে একই সময়ে একই সঙ্গে একাধিক ভাষায় লিখতে পারেন৷ এদেশে এরকম আর একটি প্রতিভাবান মানুষ খুঁজে দেখান তো?

তাকে নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কলকাতা২৪।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ভারতের উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটের রামকৃষ্ণ পল্লীর বাসিন্দা তথা বসিরহাট নৈহাটি এনসিএম শিক্ষানিকেতনে শিক্ষক তপন দের কাহিনী রূপকথাকেও হার মানায়৷

চুল, নাক, কপাল, মুখ, কান, চোখ দিয়ে লিখতে পারদর্শী তিনি৷ এ ছাড়া দুই হাত ও দুই পা দিয়ে একই সময়ে এবং একই সঙ্গে দুটি আলাদা ভাষাতেও লিখতে পারেন৷ শুধুমাত্র বাংলা, ইংরেজি নয়, হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষাতেও সাবলীলভাবে লিখতে অভ্যস্ত৷

শুরু ১৯৯৫ সাল৷ সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে কিশোর তপন৷ নতুন কিছু করার তাগিদ থেকে বাম হাতে লেখার চেষ্টা শুরু করেন৷ সেই পথ চলা আজও অটুট৷

কিশোর তপন বাম হাতে লেখার অভ্যাস করে ফেলার পর আনন্দে সে কথা গর্বের সঙ্গে জানাতে গিয়েছিল বন্ধুদের৷ বন্ধুরা তো শুনেই অট্টহাসি শুরু করে৷ উপহাসের সুরে তপনকে টিপ্পনি কেটে তাচ্ছিল্যের সুরে সেদিন তারা বলেছিল, এ আর এমনকি ব্যাপার? বাম হাতে লেখার মধ্যে কোনও কৃতিত্ব নেই৷ তুই কি পায়ে লিখতে পারিস? তখন জেদ চেপে যায় তপনের মনে৷

ইচ্ছে থাকলে যে অসাধ্য সাধন করা যায় তা হাতে কলমে করে দেখিয়েছেন তপনবাবু৷ শুধু দুই হাত-পা নয়, চুল, নাক, কপাল, মুখ, কান, চোখ দিয়েও লিখতে পারেন তিনি৷ জানেন একাধিক ভাষাও৷

স্বভাবতই প্রতিবেশী থেকে সহকর্মী, কিংবা আত্মীয়-পরিজন থেকে স্কুলের ছাত্ররা তপনস্যারকে এ যুগের সব্যসাচী বলে ডাকেন৷ করো কারো মতে, উনি সব্যসাচীর চেয়েও বেশি কিছু৷ সেদিনের টিপ্পনি কাটা বন্ধুরাও এখন তপনবাবুকে স্যালুট করেন৷

পরিজন থেকে পড়ুয়া সকলের দাবি মেনে ‘গিনেস বুকে’ স্থান পাওয়ার জন্য লন্ডনের সংশ্লিষ্ট সংস্থায় আবেদন করেছেন৷ সংস্থার পক্ষ থেকে তাকে তার এই অভিনব অনুশীলন ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে৷

ইতিমধ্যেই ২০০৫ সালে ভারতের ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডে’ তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন তিনি৷ এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ripley’s believe it or not এ জায়গা করে নিয়েছেন তিনি৷ দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়ান ট্যালেন্ট শো’তে তিনি সাফল্যের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন৷

পেশায় শিক্ষক তপনবাবু স্বপ্ন দেখেন ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধীদের উৎসাহ দিতে তাদের জন্য তিনি একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চান৷ হাত ছাড়াও সর্বাঙ্গ দিয়ে যে অনায়াসে লেখা যায় সেই অনুশীলন দেবেন ওদের৷

তথ্য সূত্র:যুগান্তর

পঠিত : ৪৯০ বার

মন্তব্য: ০