Alapon

শিশুদের প্রতি ভালোবাসা

পৃথিবীর  খুব কম সংখ্যক মানুষ পাওয়া যাবে যারা শিশুকে দেখে মিষ্টি মুখে কথা বলেন না বা দুষ্টুমি করেন না। হোক সেটা ছেলে কিংবা মেয়ে । আর যারা এমনটি  না করেন, তারা অবশ্য বেশিরভাগ ইসরাইলের সৈন্য । আর না হয় তারা  মানবের কাতারেই পড়ে না ।  

শিশুর সাথে আমাদের ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত । 

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ । সুতরাং শিশু অবস্থায় আপনি তাকে যা যা দিবেন, বড় হলে আপনিও তার কাছ থেকে ঠিক তা-ই তা-ই পাবেন ।এখন আপনিই চিন্তা করুন, শিশু কালে তার সাথে আপনার কতটুকু অনুপম ব্যবহার করা উচিত । অর্থাৎ  সেই ভবিষ্যৎ শিশুকে ভবিষ্যতে  আপনি কেমন দেখতে  চান তা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে তার সাথে আপনার ব্যবহারের ওপর । এব্যাপারে ইসলাম যে শিক্ষা দিচ্ছে তা  আমাদেরকে অবশ্যই অনুসরণ, অনুকরণ করতে হবে ।    

 

ইসলাম বলে, শিশুদের প্রতি রহম দিল হতে। তাদেরর সাথে উত্তম ব্যবহার করতে ।  তাদের আদর করে চুমু খেতে । ভালোবেসে কোলে তুলে নিতে । মিষ্টান্ন জাতীয় দ্রব্য ত কিনে দিতে । যার উজ্জ্বল প্রমাণ আমাদের প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।

শিশুদের প্রতি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে খুব বেশি দরদমাখা ছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না । যা আমরা উনার জীবনী থেকে দেখতে পাই ।  তাই তো  তিনি শিশু সন্তানদের চুমু খেয়ে তা আমাদের জন্য কেয়ামত পর্যন্ত সুন্নত হিসেবে জারি রেখে গেছেন ।  

হাদিস ঘাঁটলে যা পাওয়া যায়;

নবিজি নিজে যেমন শিশুদের আদর করতেন, তার উম্মতকেও বলে গেছেন- শিশুদের আদর করতে। হযরত আবু হুরাইরা রা. বলেন, নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাতি হাসানকে চুমু খেলেন। সেখানে আকরা ইবনে হাবিস নামে এক সাহাবি বসা ছিলেন। হাসানকে চুমু খাওয়া দেখে তিনি বললেন, আমার দশটি সন্তান রয়েছে। আমি তাদের কাউকে চুমু খাইনি। নবিজি তার দিকে তাকিয়ে বললেন, যে দয়া করে না, তার প্রতিও দয়া করা হবে না। -সহিহ বুখারী, হাদিস ৫৬৫১; সহিহ মুসলিম, হাদীস ৬৫; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৫২১৯

নামাজের মতো  মহান ইবাদতেও রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখতেন। তিনি বলেন, আমি নামাজ দীর্ঘ করার ইচ্ছা করি। কিন্তু কোনো শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনে নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ফেলি। কেননা, বাচ্চার কান্নার কারণে মায়ের কষ্ট হয়। -সহিহ বুখারী, হাদিস ৬৭৭ 

আবার এমনও ঘটনা ঘটেছে রাসূল সা. যখন নামাজের সেজদায় যেতেন তখন হুসাইন রা. উনার পিঠে বসে মজা করতেন ।  তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  সেজদা দীর্ঘ করতেন । যাতে হুসাইন না পড়ে যায়। (অপেক্ষা করতেন কখন তারা পিঠ থেকে নামবে)। -সুনানে নাসাঈ, হাদিস ১১৪১; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস ২৭৬৮৮; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস ৪৭৭৫

আবার ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর রা. ও শিশুদের খুব ভালোবাসতেন ।  তাই তো বাজারে যাওয়ার জন্য বাচ্চারা উনাকে আদর করে ডাকলে তিনিও তাদের মিষ্টান্ন কিনে দিয়ে খুশি রাখতেন । 

শিশুদের ক্ষেত্রে সাদা-কালো, ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সবাইকে সমান ভালোবাসা দেয়া উচিত । আর পারলে ঈদে কোনো গরিব শিশুকে অন্তত একটা জামা হলেও আমদের কিনে দেয়ার চেষ্টা করা উচিত  ।

পঠিত : ৭৭৪ বার

মন্তব্য: ০