প্রতিকায় যখন নিউজটি পড়ি আমি শিউরে উঠেছি। বার বার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছিল। এও কি সম্ভব! আমাদের বাংলাদেশেও এমন জঘণ্য কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে! 

বাংলাদেশে পরিবার সমাজ ইত্যাদির গুরুত্ব অনেক বেশি। আমাদের পারিবারিক বন্ধনগুলোও খুব মজবুত। পশ্চিমা কালচার আমাদের পরিবার ভেঙ্গে দিতে চাইলেও সেটা সম্ভব নয়। আমরা প্রকৃতিগতভাবেই সামাজিক। 

কিন্তু এর মধ্যেই ঘটে যাচ্ছে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। পরকীয়া জনিত খুন হচ্ছে খুব। বাবা সন্তানকে খুন করছে, মা সন্তানকে খুন করছে। প্রচুর ডিভোর্স হচ্ছে। যেসব সন্তানদের বাবা-মায়ের ডিভোর্স হচ্ছে তাদের জীবন হয়ে উঠছে বেপরোয়া। সব মিলে বাংলাদেশে প্রায় পরিবারগুলোতে চলছে ভয়ংকর রকমের অস্থিরতা। 

এর মধ্যেই গতকাল ঢাকায় ঘটে গেলো ভয়ংকর ঘটনা। মায়ের নির্দেশে বাবাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছেলে ও তার তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে রাজধানীর উত্তর মানিকনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাবার নাম রফিকুল ইসলাম।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বীথি , ছেলে রাব্বী এবং রাব্বীর তিন বন্ধুকে আটক করেছে মুগদা থানা পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রফিকুলের মরদেহ নিয়ে গেছেন তার স্বজনরা।

মুগদা থানার উপ-পরিদর্শক রহিদুল ইসলাম জানান, ৫৮/ডি/২ নম্বর উত্তর মানিকনগরে জয়নালের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন নিহত রফিকুল ও তার পরিবার। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট সদরের বেসতগাতি গ্রামে। বুধবার রাত ৯টার পর স্ত্রী বীথির প্ররোচনায় তার ছেলে রাব্বী ও তার তিন বন্ধু বাসায় আসে।

রফিকুলকে একা পেয়ে রাব্বী ও তার বন্ধুরা গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার ঘটনা যাতে কেউ টের না পায়, সেজন্য বাইরে থেকে ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়ে সামনেই হাঁটাহাঁটি করছিলেন বীথি। আর এতেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তারা বীথিকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে নিহত রফিকুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে। একই সঙ্গে বীথি, ছেলে রাব্বী ও তার তিন বন্ধুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

নিহতের আত্মীয় রানা জানান, রফিকুল মুগদা স্টেডিয়ামের সামনে শরবত বিক্রি করতেন। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। তাদের সংসারে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। তার স্ত্রীর কারণে ছেলে দুটি বখাটে হয়েছে। ঘটনার কিছু দিন আগে বীথি তার বাবার বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন। রফিকুল তাকে ফিরিয়ে আনতে গেলেও তিনি ফেরেননি। পরে নিজেই ফিরে আসেন। বীথির ফিরে আসার কয়েক দিনের মধ্যে রফিকুলকে হত্যা করা হয়।