Alapon

বিশ্বকাপের অজানা একুশ

(১) ২০১৮ সালের রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপটি ফিফা বিশ্বকাপের ২১ তম আসর। ৮৮ বছর আগে উরুগুয়েতে ১৯৩০ সালে প্রথম এই আসর অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এবারই প্রথম এটি রাশিয়াতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
 
(২) রাশিয়া ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ এর মাস্কট হল একটি নেকড়ে যার নাম জাবিভাকা যার অর্থ “সে যে স্কোর করে”।
 
(৩) রাশিয়া বিশ্বকাপের অফিশিয়াল বল এর নাম টেলস্টার ১৮ যার ডিজাইন করেছে অ্যাডিডাস। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল জয়ী লিওনেল মেসির উপস্থিতিতে ২০১৭ সালের ৯ ডিসেম্বরের এক অনুষ্ঠানে এই নাম দেয়া হয়।
 
(৪) যেই ৩২ দল এই রাশিয়া ফিফা বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে তাদের মধ্যে পানামা এবং আইসল্যান্ড এবারই প্রথম। নিজেদের প্রথম আসরেই বিশ্বকাপের গ্রুপ স্টেজ পার হতে পারা শেষ দল ছিল স্লোভাকিয়া যারা প্রথম অংশ নিয়েছিল ২০১০ সালে এবং গ্রুপ স্টেজ পার করে।
 
(৫) রাশিয়া ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ রাশিয়ার ১১টি শহরের ১২টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যার মধ্যে মস্কো একমাত্র শহর যেখানের দুটি ভিন্ন স্টেডিয়াম- লুঝনিকি এবং স্পার্টাক এ বিশ্বকাপের খেলা হবে।
 
(৬) ১৯৮৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিবার বিশ্বকাপ জয়ী দল গ্রুপ স্টেজে নিজ গ্রুপের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
 
(৭) এখন পর্যন্ত সকল বিশ্বকাপ, হয় ইউরোপিয়ান না হয় দক্ষিণ আমেরিকান কোনো দল জিতেছে। এর মধ্যে ১১টি কাপ গেছে ইউরোপে এবং বাকি ৯টি দক্ষিণ আমেরিকায়।
 
(৮) এখন পর্যন্ত ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যতীত স্বাগতিক সকল দলই প্রতিটি আসরে দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত পৌঁছেছে। এর মধ্যে স্বাগতিক দলের বিশ্বকাপ জেতার হার ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ২০টি আসরের মধ্যে ৬টি কাপ গেছে স্বাগতিক দলের ঝুলিতে। সর্বশেষ এই তালিকায় ফ্রান্স ১৯৯৮ সালে নিজেদের যুক্ত করে।
 
(৯) ফিফা বিশ্বকাপ আসরের সবচাইতে সফল দল ব্রাজিল। ২০টি আসরের মধ্যে ৫টিতেই জয় লাভ করেছে ব্রাজিল। অর্থাৎ তাদের বিশ্বকাপ জেতার হার ২৫ শতাংশ। এবং তারাই একমাত্র দল যারা এবারের রাশিয়া ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ সহ ২১ টি আসরেই অংশ নিতে পেরেছে।

(১০) ২০টি আসরের মধ্যে মাত্র ৪বার কোনো টিম বিশ্বকাপে খেলা সকল ম্যাচে জিতেছে। এর মধ্যে উরুগুয়ে ১৯৩০ সালে ৪ ম্যাচ খেলে ৪টিতেই জিতেছে, ইতালি ১৯৩৮ সালে ৪ ম্যাচ খেলে ৪টিতেই জিতেছে। এরপর ব্রাজিল ১৯৭০ সালে ৬টি ম্যাচের ৬টিতেই এবং ২০০২ সালে ৭টি ম্যাচের ৭টিতেই জয় লাভ করে।
 
(১১) এই বিশ্বকাপ জিততে পারলে ১৯৬২ সালের ব্রাজিলের পর জার্মানীই হতো একমাত্র দল যারা পর পর দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে। এই বিশ্বকাপ পেলে জার্মানী কাপ সংখ্যায়ও ব্রাজিলের সমান হতো। বর্তমানে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ ৫টি এবং জার্মানীর ৪টি।
 
(১২) গত দুই আসরেই পূর্ববর্তী আসরের জয়ী দল গ্রুপ স্টেজেই বাদ পড়ে। ২০০৬ সালের জয়ী দল ইতালী ২০১০ সালের বিশ্বকাপে এবং ২০১০ সালের জয়ী দল স্পেন ২০১৪ সালে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ে। এবারও সেই ঘটনাটিই ঘটলো।
 
(১৩) এবার যদি পর্তুগাল এই বিশ্বকাপ জিতে তবে তারা চতুর্থ দল হবে যারা পর পর ইউরো কাপ এবং বিশ্বকাপ জিতে নেয়। এর আগের তিন দল হল জার্মানী ( ১৯৭২ সালের ইউরো এবং ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপ ), ফ্রান্স ( ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০০০ সালের ইউরো ) এবং স্পেন ( ২০০৮ সালের ইউরো, ২০১০ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালের ইউরো )। পর্তুগাল ২০১৬ সালের ইউরো জয়ী।
 
(১৪) এবারের রাশিয়া ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮তে পূর্বের বিশ্বকাপ জয়ী দল গুলোর মধ্যে ৮টি দল অংশগ্রহণ করছে না। এর মধ্যে ইতালী ১৯৫৮ সালের পর এই প্রথম বাদ পড়েছে।
 
(১৫) বিশ্বকাপ না জেতা দলগুলোর মধ্যে মেক্সিকো সর্বোচ্চ ১৬ বার বিশ্বকাপ আসরে অংশ নিয়েছে।

(১৬) সুইজারল্যান্ড একমাত্র দল যারা কোনো গোল হজম না করেই বিশ্বকাপের একটি আসর শেষ করেছে। ২০০৬ সালে তারা ৪টি ম্যাচ খেলে যার একটিতেও তাদের হজম করতে হয়নি কোন গোল।
 
(১৭) ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের ৬২ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতে 0-0 স্কোর নিয়ে ড্র করেছে যা অন্য যে কোনো দলের চাইতে বেশি।
 
(১৮) বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি লাল কার্ড দেখা দল হল ব্রাজিল। ১১ বার কোনো ব্রাজিলিয়ান লাল কার্ড দেখেছেন। এরপরে রয়েছে আর্জেন্টিনা ১০ বার এবং উরুগুয়ে ৯বার করে লাল কার্ড দেখে।
 
(১৯) বিশ্বকাপের এক আসরে সবচাইতে বেশি গোল হয় ১৯৯৮ এবং ২০১৪ সালে। দুবারই ১৭১টি করে গোল হয়। অন্যদিকে, ৬৪ ম্যাচের ফরম্যাটে সবচাইতে কম গোল হয় ২০১০ সালে। সেই আসরে মাত্র ১৪৫টি গোল হয় সর্বসাকুল্যে।
 
(২০) বিশ্বকাপ আসরে অংশগ্রহণ করা সকল আসর মিলিয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক গোলদাতা হলেন মিরোস্লাভ ক্লোসা। মোট ৪ আসরে অংশ নিয়ে ২০ ম্যাচ খেলে ১৬টি গোল করেন। দ্বিতীয় স্থানে আছেন ব্রাজিলের রোনালদো যিনি ৩ আসরে অংশ নিয়ে ১৯ ম্যাচে ১৫ গোল করেছিলেন।
 
(২১) এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ জয়ী সকল দলের বিশ্বকাপ জয়ী কোচ স্বদেশী। বিদেশী কোচ নিয়ে বিশ্বকাপ জেতার রেকর্ড নেই কোনো দলের।

পঠিত : ১০৫৬ বার

মন্তব্য: ০