Alapon

ঠাকুর কোন ভাবেই সৃষ্টিকর্তা না

যেসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ।

যেমন:- 'খাল' শব্দটি তামিল ভাষার 'কাল' থেকে এসেছে। 'কাল' সংস্কৃতে হয় 'খল্প'।  প্রাকৃতে হয় 'খল্ল'।  বাংলায় হয় খাল। আবার দাম এটি একটি অতিপরিচিত শব্দ আমাদের যেটা আমরা প্রতিদিনই ব্যবহার করি।  দাম শব্দটি এসেছে গ্রিক ভাষার 'দ্রাখ্মে' ( একরকম মুদ্রা, টাকা)  থেকে।  'দ্রাখ্মে' সংস্কৃতে হয় 'দ্রম্য'।  প্রাকৃতে হয় 'দম্ম'।  এরপরে বাংলায় এসে হয় 'দাম'।

এবার মূল কথায় আসি। আমরা সবাই আল্লার নিরানব্বুইটি নামের কথা জানি ।  যে নামগুল প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত পরিবর্তন হয়নি । পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে এ নাম পরিবর্তন হয়নি হবেও না।  সৃষ্টিকর্তার অনেক নাম থাকতে পারে কিন্তু সেগুল হবে সৃষ্টিকর্তার নিজের নির্ধারন করা নাম। মানব জাতি তার নাম দিতে পারবে না। অন্য শব্দ থেকে উৎপন্ন নাম সৃষ্টিকর্তার নাম হতে পারে না।

কোন কিছুর নাম তদ্ভব শব্দ হতে পারে না। কেননা নাম তো বিবর্তনের ধারা মানে না।নাম অন্য ভাষার কোন শব্দ থেকে পরিবর্তন হয়ে, বিবর্তনের ধারয় আরেক শব্দপর মাধ্যমে উৎপন্ন হয় না। মনুষের নামই যেখানে তদ্ভব শব্দ হতে পারে না সেখানে সৃষ্টিকর্তারটা বাদই দিতে পারি। 

আমার জানা মতে হিন্দুরা তাদের সকল ভগবানের মধ্যে বড় মানে ঠাকুরকে। তাদের সকল চাওয়া-পাওয়া ঠাকুরের কাছে। তারা যেকোন কাজে ঠাকুরের নাম জপে। সব মিলিয়ে ঠাকুরই তাদের সব। আসলে ঠাকুর কি কোন নাম? ঠাকুর কি হিন্দুদের   কোন ধর্মগ্রহন্তে লেখা আছে? 

আসলে ঠাকুর কোন নাম না আর এটা হিন্দুদের কোন ধর্মগ্রহন্তে লেখা নেই। ঠাকুর একটি তদ্ভব শব্দ। 

ঠাকুর শব্দটি ছিলো তুর্কি ভাষায় 'তিগির'।  সংস্কৃত ও প্রাকৃতে হয়ে যায় 'ঠক্কুর'। এরপর বাংলায় এসে হয় 'ঠাকুর'। সুতারাং 'ঠাকুর' একটি তদ্ভব শব্দ।

তাহলে ঠাকুর নামটি মানুষের বানানো। সৃষ্টিকর্তার নাম মানুষ দিতে পারে না। দ্বিতীয় ঠাকুর যেহেতু তদ্ভব শব্দ তাই এটা কোন নাম হতে পারে না।  সুতারাং ঠাকুর কোন সৃষ্টিকর্তার নাম না এবং ঠাকুর নাম কোন সৃষ্টিকর্তা নাম না।

পঠিত : ২০০৯ বার

মন্তব্য: ০