Alapon

চাই না উন্নয়ন, চাই নিরাপদে বাঁচার অধিকার।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু,হানিফ ফ্লাইওভার ও মেট্রোরেল এসব দেশের চোখ ধাঁধানো উন্নয়ন একমাত্র মানুষের জন্য। মানুষ প্রতি পাঁচ বছর পর পর দেশের একজন সরকার প্রধান কে নির্বাচিত করে, যার মূল কারন শান্তিতে ও নিরাপদে বেঁচে থাকার আশা।সরকার মানুষকে নিরাপদে রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ দিয়েছে ,এতো কিছুর পরও প্রতি দিন গড়ে আট থেকে নয় জন মানুষ শুধুমাত্র পরিবহণ সেক্টরের অবহেলা মারা যাচ্ছে। তাহলে এমন প্রশ্ন তো থেকেই যায়, উন্নয়ন হচ্ছে কোথায়?

কখনো গাড়ি মানুষদেরকে ছাপা দিচ্ছে, কখনো মানুষ গাড়ির চাকার নিছে পড়ে পিষ্ট হচ্ছে,কখনো ফ্লাইওভার থেকে যাত্রী নিয়ে গাড়ি নিছে পড়ে যাচ্ছে এবং কখনো গাড়ি অতিরিক্ত স্পীড নিয়ে রাস্তার নিছে পড়ে মারা যাচ্ছে মানুষ।এই যেন মানুষ মারার প্রতিযোগিতার খেলায় নেমেছে গাড়ির ড্রাইভার গুলো! দেশে আইন আদালত উভয়টা রয়েছে কিন্তু সঠিক প্রয়োগের কি আদৌ উন্নয়ন হয়েছে?জনরোষের কারনে মামলা হয়,মাঝেমধ্যে অপরাধীরা গ্রেপ্তার ও হয় কিন্তু মামলার তদন্তের রিপোর্ট আদৌ প্রকাশ হয়না।কেন হয়না সে প্রশ্নও জাতির কাছে অজানা নয়!

এতো ঝমকালো উন্নয়ন একমাত্র মানুষের জন্য,যদি মানুষই বেঁচে না থাকে তাহলে এমন উন্নয়ন দিয়ে কি হবে? মানুষ বেঁচে থাকলে উন্নয়ন একদিন হবেই। আগে দরকার খাদ্য তারপর বস্ত্র।

সরকারকে সবার আগে মানুষের বেঁচে থাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, দেশ পরিচালনার জন্য প্রধান শর্ত হল জনগণ কারন জনগণ ছাড়া কোন দেশের কথা চিন্তাও করা যায়না। প্রতিটি ক্ষেত্রে ও সর্ব অবস্থা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধাপ বাই ধাপ মানুষের কল্যাণে উন্নয়নে এগিয়ে যাওয়াটাই হল প্রকৃত পক্ষে উন্নয়ন।

কাল রাস্তা জ্যামের কারনে আসাদ গেইট থেকে রামপুরা হেঁটে এসেছি, তাতে বিন্দুমাত্রও খারাপ লাগেনি। মাঝেমধ্যে স্কুল বালকদের আগামী দিনের সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার মিছিলে অংশগ্রহণ করেছি। এই ছাত্ররা থাকার কথা ছিল ক্লাসরুমে কিন্তু বাধ্য হয়ে নিজের অধিকার ও বাঁচার নিরাপত্তার জন্য আজ রাস্তা নামতে হয়েছে। এটা কিন্তু তাদের দায়িত্ব না,এই দায়িত্বের জন্য তারা টেক্স দিচ্ছে সরকার কে। সরকার যদি আন্তরিক হয়ে এসব অপরাধীদের সঠিক ভাবে বিচারের মুখামুখি করতেন তাহলে আজ রাস্তাতে নামার কথা ছিলনা। প্রতিটি দেশে দুর্ঘটনা হয় কিন্তু কয়টা দেশের সাধারণ জনগণ বিচারের জন্য রাস্তা নামতে হয়েছে?

বাংলাদেশের পরিবহণ সেক্টর হল সম্পূর্ণ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের নিয়ন্ত্রণে।ছোট একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে পারবেন কতটা সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজী হয় এই সেক্টরে। রামপুরা টিভিভবন থেকে হাতিরঝিল হয়ে কাওরানবাজার পর্যন্ত মাক্রোবাস চলাচল করে, প্রতিদিন এসব মাক্রোবাস ২৫০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়।টাকা না দিলে গাড়ি চলেনা। আবার জনগণ ও কিছু বলার সুযোগ নেই, তাদের রয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী। পরিবহণ মন্ত্রণালয় যারা দায়িত্বে রয়েছে তাদেরকে বিচারের মুখামুখি করতে পারলে অনেকাংশে হত্যা কমে যাবে। অযোগ্য লোক গুলোকে বহিষ্কার করে যোগ্য লোক নিয়োগের মাধ্যমে আগামীর প্রজন্মের জন্য সুন্দর একটি পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

পঠিত : ১৬৯৪ বার

মন্তব্য: ০