Alapon

নিম্নবিত্ত

সকালে ঘুম ভাঙলো বৃষ্টির শব্দে। ঘুম থেকে উঠে দেখি মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। হাত-মুখ ধুয়ে বসে রইলাম ঘরের সামনে। বসে থাকতে বেশ ভালোই লাগছিলো বৃষ্টির শব্দ, বাতাসে দোলছে গাছ, বৃষ্টির পানি পেয়ে গাছ হয়েছে সতেজ। গাছের সবুজ পাতা দেখতে দেখতে স্কুলের সময় হয়ে গেল কিন্তু বৃষ্টি এখনও থামেনি। ছাতা মাথায় রওনা দিলাম স্কুলে। কাদামাখা পায়ে আধাভেজা অবস্থায় পৌছালাম স্কুলে। স্কুলে তেমন ক্লাশ হলো না। বৃষ্টির দিন পেয়ে স্যাররা অলস হয়ে গেছেন। তাঁরা খুব আনন্দ বৃষ্টি উপভোগ করতে আছেন। আর এদিকে আমরা মেতে উঠেছি দুষ্টামিতে।

দুপুর নামলো, স্কুল ছুটি হলো কিন্তু বৃষ্টি এখনও থামেনি। ছাতা মাথায় আবার রওনা দিলাম বাড়ির দিকে। পথের মাঝে এসে খুব বৃষ্টি নামলো। ছাতায় এ বমষৃটির পানি ঠেকাতে পারছে না। আমি আশ্রয় নিলাম বারেক মিয়ার ঘরে। একচালা ছোট একটা ঘর। বারেক মিয়া প্রতিদিন বাজারে শাক-সবজি বিক্রি করেন। তাঁর ঘরের বাজার দিনেরটা দিনে হয়। যেদিন বেঁচা-কিনা ভালো সেদিন ভালো খাবার কপালে জুটে আর যেদিন বেঁচা-কিনা ভালো না সেদিন কোন মতে চলে। আমি ঘরে উঠে দেখি বারেক চাচা ঘরের সামনে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন। তাঁর স্ত্রী ঘরের খাটে শোয়া, ছোট মপয়েটা কাঁদছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম ও কাঁদে কেন? চাচি বললো ক্ষুধা পেলে সবাই কাঁদে। আমি আমার ব্যাগ থেকে এক প্যাকেট বিস্কট দিলাম মেয়েটাকে। মেয়েটা কিছুই বললো না একটা হাসি দিয়ে খাওয়া শুরু করলো। আমি বললাম চাচি ওরে ভাত খাওয়ান এক প্যাকেট বিষ্কুটে কি হবে? চাচি বললো ঘরে ভাত নেই।

আমি বললাম নেই মানে কি? চাচি বললো ওর বাপ আজ বাজারে কোন বেঁচা কিনা করতে পারেনি। বৃষ্টিতে বাজার তলিয়ে গিয়েছে। কিছু টাকা বেঁচা-কিনা করছিল তা মহব্বত মিয়া রেখে দিয়েছে। বাকিতে সদায় চাইছিল দেয় নায়। তাই আজ আর কপালে খাবারও জুটে নায়।
অনুগল্প-
নিম্নবিত্ত

পঠিত : ৮৭৭ বার

মন্তব্য: ০