Alapon

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কেন শিবিরকে পাশে চায়?

যা ঘটে যাওয়ার পর নিপীড়ন মাত্রই আত্মহত্যা।

গতকালের পর বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে তার কথা ভেবে সরকারের উচিত শাজাহান খানকে অপসারণ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করা। বিষয়টি হলো ঝিগতলায় আক্রান্ত হওয়ার পর অনেক কান্নারত অসহায় ছেলেমেয়ে বলেছে শিবির কেন তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না।

এই আকুতির অর্থ কি লোকজন বুঝতেছে? অসহায় তরুণ-কিশোররা পুলিশ, আদালত বা প্রগতিশীল কারো সাহায্য না চেয়ে শিবিরের সাহায্য চাচ্ছে। এর মানে হলো তারা এই রাষ্ট্র-রাজনীতি-প্রগতিশীলতার প্রতি সমস্ত বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে।

১৬-১৭ বছরের ছেলেমেয়েদের কে শিখাইল যে শিবিরই তাদের পাশে দাঁড়দনোর প্রকৃত দোসর? আমার কাছে এই প্রশ্নের চেয়ে বড় হলো, এই প্রজন্ম শিবির ছাড়া অন্যদের কথা কেন ভাবল না? এক সময় তো সুশীল সমাজ ও সেনাবাহিনীর কথা বলত লোকজন, কিন্তু এরা কেন শিবিরের কথা বলছে।

সত্যি কথা কি কোটা আন্দোলনের সময় একটা ছেলে রাগ করে নিজেকে রাজাকার ঘোষণা করলে বিষয়টা তারুণ্যের অভিমানের চেয়ে বেশি কিছু মনে করিনি। যদিও এনিয়ে হরহর করে বমির মতো বাজে কথাও বলা হইছে।

কিন্তু আমার কাছে অনেক বড় রাজনৈতিক ব্যাপার মনে হইছে গতকাল অনেকের মধ্যে শিবিরের বিষয়টা আসায়। এটিকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করে নিজেদের বুদ্ধিজীবীতাকে কাজে লাগান। চিন্তা করেন, ভাবেন। আশা করি প্রজ্ঞা শানিত হবে।

আমার মতে ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিবিরের বিষয়টি আসার অনেক বড় মানে আছে। খেয়াল করেন শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ হওয়ার সময় এরা ফাইভে বা সেভেনে পড়ত। এরপর পাঁচ বছরে তারা দেশটার চিত্র দেখেছে। লুটপাট-গুম-হত্যা-নিপীড়নের কত ঘটনা ঘটল এদের চোখের সামনে। রাষ্ট্র-সরকার-প্রশাসন-পুলিশ-আদালতের চরিত্র তাদের কাছে স্পষ্ট। এরা সমাজের সবকিছুকে ঘৃণা করছে, প্রত্যাখ্যান করছে।

আমার মতে বিকল্প বিশ্বাসযোগ্য কিছু না পেয়ে এই কিশোর-তরুণরা শিবিরের কথা বলছে। যার আরেকটা মানে হলো বিকল্প হিসেবে বামপন্থীরা নিজেদের দাবি করলেও তারা সরকারি আঁতাতটা তরুণরা ধরে ফেলেছে। ফলে বিকল্পই এখন তাদের কাছে অবিকল্প, শুধু শিবিরকেই যেন বিশ্বাস করা যায়।

এই মনোভাবের মানে কিন্তু এই যে শিবিরের চেয়ে কম বিকল্প আসলে তরুণদের কাছে বিকল্প না, তবে আরও বেশি বিকল্প হলে তারা না করবে না। অর্থাৎ শিবিরের চেয়ে আরও ভালো সংগঠন করেই তবে, আরও বেশি বিরোধিতা করেই তবে আপনি তরুণদের পছন্দের কিছু হইতে পারবেন।

এখন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামেরা যদি নিজেদেরকে তরুণদের কাছে শিবিরের চেয়ে বেশি বিশ্বাসযোগ্য না করে তাহলে তারা প্রত্যাখ্যাত হবে।

আর ইমেডিয়েটলি সরকার যদি নিপীড়ন বন্ধ না করে, বরং ছাত্রলীগ-পুলিশ আরও লেলিয়ে দেয় তাহলে এটি হবে তাদের আত্মহত্যা, কারণ নিজহাতে কিশোরদের শিবির শিবির করতে উৎসাহিত করছে।

লিখেছেনঃ খুমেনি এহসান

পঠিত : ১১৪৪ বার

মন্তব্য: ০