Alapon

বিনামূল্যে আপনার মেয়েকে বিয়ে দিতে চান??? আজই একটি স্মার্টফোন কিনেদিন

ফেসবুকে প্রেম; অতপর...
‘আব্বু-আম্মু, আমার জীবনের প্রতি ঘৃণা চলে এসেছে।এই ফয়সাল আমার সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। তোমরা তাকে ছেড়ে দিও না। আমি তাকে ভালবেসে ভুল করেছি। আমি চলে যাচ্ছি...।’ :(

মৃত্যুর আগে এ কথাগুলো লিখে গেছে লামিয়া নূর (১৯)। প্রেমের ব্যর্থতা মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে সে। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল প্রেমিক ফয়সালের সঙ্গে। শুরু হয় বন্ধুত্ব। দীর্ঘদিনের এ পরিচয় থেকেই একজনের প্রতি আরেকজনের ভালবাসা সৃষ্টি হয়। তখনও তারা কেউ কাউকে দেখে নি। যখন সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে শুরু হয় তখন তারা একজন আরেকজনের সঙ্গে দেখা করে। এ থেকে সম্পর্ক মোড় নেয় আরও গভীরে। লামিয়ার এক বান্ধবী বলেছে, আমাদের কাছে প্রায় সময়ই ফয়সালের কথা বলতো সে। বলতো, সে যদি ফয়সালকে না পায় তাহলে থাকতে পারবে না। তবে আমার জানা মতে, তাদের সম্পর্কটা অনেক গভীর ছিল যার কারণে তারা বিয়ে করবে বলে সিদ্ধান্তও নিয়েছিল। এ ছাড়া মাঝেমধ্যেই এসব সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। কলেজে এলেই আমাদের কাছে এসব কথা বলে কান্নাকাটি করতো। তখন সে বলেছিল ফয়সাল তাকে বিয়ে করতে রাজি না। সে ফয়সালকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারবে না। তবে এভাবে সে আত্মহত্যা করবে তা আমরা বুঝতে পারিনি।" গত মঙ্গলবার বিকালে লামিয়া প্রাইভেট পড়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। পড়া শেষ করে আবার বাসায় ফিরে আসে। বাসায় তার গৃহশিক্ষক পড়াতে আসেন। সন্ধ্যায় সেই শিক্ষক পড়াতে এলে তার ছোটবোন লামিয়াকে ডাকতে যায়। ডাকাডাকির পরও দরজা খুলছিল না সে। একপর্যায়ে তারা দরজা ভেঙে রুমের ভেতরে ঢুকে দেখেন লামিয়ার দেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। তখনই শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি। পরে পরিবারের সবাই মিলে তার দেহটি নামিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গ্রিন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কলাবাগান থানার এসআই আজগর আলী লাশ উদ্ধার করে গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। লামিয়ার খালা আলেয়া বেগম জানান, আমরা তার কোন সম্পর্কের কথা জানতাম না। কখনও পরিবারের কেউই বুঝতে পারতো না। সে সারাদিন ব্যস্ত থাকতো তার পড়ালেখা আর কম্পিউটার নিয়ে। তিনি আরও জানান, লামিয়া এমন কোন কাজ করবে আমরা বুঝতেও পারিনি। সে তার সব কথা আমাদের কাছে শেয়ার করতো। অবশ্যই সেই ছেলেটা আমাদের মেয়ের সঙ্গে এমন কিছু করেছে যার কারণে তার এ পথ বেছে নিতে হয়েছে। আমি চাই তার উপযুক্ত শাস্তি যাতে হয়। তার কারণে আমাদের মেয়েটার আজ এ পরিণতি। অন্যদিকে বাবা-মা কেউ আসেননি লাশ নিতে মর্গে। খালা আর লামিয়ার বান্ধবীর বাবা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না সেখানে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে লামিয়ার খালা জানান, মেয়ের এ ঘটনার ফলে তারা মানসিক ও শারীরিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছেন, তাই তারা আসেননি। এমনকি তারা এ ব্যাপারে কারও সঙ্গে কোন ধরনের কথাও বলতে রাজি নন। তিনি জানান, লামিয়ার পিতার নাম মো. নূর মোহাম্মদ। তিনি পেশায় প্রকৌশলী। মা জাকিয়া বেগম। লামিয়া সিটি কলেজের কমার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তাদের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়ায়। এ বিষয়ে কলাবাগান থানার এসআই আজগর আলী বলেন, প্রেমে ব্যর্থতার কারণেই লামিয়া আত্মহত্যা করেছে। এর প্রমাণ সে রেখে গেছে। তবে এখানে দোষী ফয়সল সম্পর্কে আমরা এখনও কোন সন্ধান পাইনি। আশা করছি খুব দ্রুত তাকে আমরা খুঁজে বের করতে পারবো। তাকে পাওয়া গেলে পুরো ঘটনাটা বের হয়ে যাবে।...


পঠিত : ৫৪১ বার

মন্তব্য: ০