Alapon

প্রাপ্তবয়স্ক হলে মেয়েদেরকে কথা বলতে দিন।

প্রতিটি মানুষের নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার স্বাধীনতা রয়েছে,রয়েছে ভালোমন্দ বিচার বিশ্লেষণ করার।কারো স্বাধীনতা হরণ করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি সেটা নিষেধ করা হয়েছে ধর্ম কিনবা দেশের প্রচলিত সংবিধানে।বুঝেশুনে ও স্বজ্ঞানে আমাদের সমাজে বা পরিবারে অন্যের অধিকার কে গলা টিপে হত্যা করছে প্রতিনিয়ত।কিছুদিন আগে আমার খুব কাছের একজন ছোট বোন,পিতার আত্মসম্মানের কাছে বলি হয়ে বিয়ের কিছুদিনের মাথায় আত্মহত্যা করেছে।আমি তার মৃত্যুর খবর শুনে নিজেকে সামলাতে খুব কষ্ট হয়েছে।

মেয়েটি খুব ভালো ছিল,তার কারনে পরিবারের কেউ কটু কথা শুনতে হয়নি কখনো।তার পিতাকে বিয়ের পূর্বে বারবার বলেছে আমি এখন বিয়ে করবোনা,আমাকে পড়তে দিন,আমি আরো কিছুদিন পড়তে চাই।মেয়েটি হাজার বার পিতার হাতে পায়ে ধরে ও বিয়েটা বন্ধ করতে পারেনি।বিয়ের জন্য তার সম্মতি কিনবা মতামতের ও প্রয়োজন মনে করেনি।পিতাতো তার বংশমর্যাদাও আত্মসম্মানের কাছে ছোট হতে রাজি নয়,তার এককথা বিয়ে দিয়েই ছাড়বে।এভাবে বোনটিও তার পিতাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে আমারও আত্মসম্মান রয়েছে।

মেয়েদেরকে নিজের মত করে মানুষ হিসাবে ভাবতে চেষ্টা করুন।মেয়েদের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ ও জুলুম করার সুযোগ নেই,তাদের মতামতকেও প্রাধান্য দিন।

মেয়ের অনুমতি ও সন্তুষ্টি ছাড়াই তার বিয়ে দেওয়ার অধিকার কোন অভিভাবককে দেওয়া হয়নি। ইসলামে জোরজবরদস্তি করে বিয়ে দেওয়ার কোন স্হানও নেই।

তারা যদি ন্যায়সঙ্গতভাবে পরস্পর সম্মত হয়, তবে স্ত্রীগণ নিজেদের (প্রাক্তন) স্বামীদেরকে বিবাহ করতে চাইলে তোমরা তাদের বাধা দিও না। (সূরা বাকারা : ২৩২)

মেয়েদের অতিমাত্রা খুশী হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে, যত যাই হোক না কেন,অভিভাবকের সম্মতি ব্যতীত কোন বিয়েই বৈধ নয়।রাসূলুল্লাহ স. বলেছেন,যে নারী তার অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই নিজে নিজে বিবাহ করে, তার বিবাহ বাতিল, বাতিল, বাতিল।(আহমাদ,আবু দাউদ,তিরমিযী,ইবনে মাজাহ,দারেমী,মিশকাত ৩১৩১ নং)

ইসলাম ধর্মে নারীর জীবনব্যবস্থা ও সমাজের অপরিহার্য অঙ্গ হিসাবে বিবেচনা করেছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে স্ত্রী, কন্যা, মাতা ও ভগ্নী হিসাবে তার ব্যক্তিগত মর্যাদা অধিকার ও স্বাধীনতার সঙ্গে সামগ্রিক সব বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশের অধিকার দেওয়ার কথাও বলেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষা সংস্কৃতি প্রতিটি বিষয়ে পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও উৎসাহিত করেছে।

নারীদেরও রয়েছে অধিকার পুরুষের উপর যেমন পুরুষের রয়েছে নারীদের উপর৷ (সূরা বাক্বারাঃ ২২৮)

আল্লাহ তাআলা প্রত্যেককে ইসলামি অনুশাসন মেনে বিবাহ করার মাধ্যমে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের তাওফিক দান করুন।

পঠিত : ৬১৪ বার

মন্তব্য: ০