Alapon

নব্য মৌলবাদীদের কবলে বাংলাদেশ

১.
মাধ্যমিকে পড়ার সময়ই বাংলা সাহিত্যের প্রতি কিছুটা অনুরাগ তৈরী হয়। তবে বিশেষত ব্যঙ্গাত্মক প্রবন্ধ-রচনা প্রবলভাবে টেনে ধরে আমাকে। তাই বলে সাহিত্যের অন্যান্য শাখাগুলোর প্রতি ভক্তি-ভালোবাসা কিঞ্চিত কমেনি। বাংলা সাহিত্যের ব্যঙ্গাত্মক প্রবন্ধকারদের মধ্যে আমার অন্যতম প্রিয় লেখক শ্রদ্ধেয় আবুল মনসুর আহমদ। বাঙ্গালীর বৈচিত্র্যময় রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকান্ড মনসুর আহমদকে ব্যঙ্গ-রচনায় উদ্বুদ্ধ করেছে প্রবলভাবে। দুর্নীতিগ্রস্থ সমাজ ব্যবস্থায় রাজনৈতিক নেতাদের চিন্তার অসারতা, তথাকথিত সমাজসেবক নামধারী ব্যক্তিদের প্রকৃতরূপ তুলে ধরার চেষ্টা করে গেছেন প্রবলভাবে। যার ফলশ্রুতিতে সেই সময়ের সামাজিক দুর্গতি মনসুর আহমদের সাহিত্যে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। বিশেষত এই সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে যারা কাজ করেন, তাদের চিন্তার রাজ্যে আবুল মনসুর আহমদের সাহিত্যকর্ম প্রচন্ডভাবে ধাক্কা দিয়েছে। 

মাধ্যমিক শ্রেণীর বাংলা বইয়ে আবুল মনসুর আহমদের অতুলনীয় সৃষ্টি “জনসেবা য়ুনিভার্সিটি” প্রবন্ধটি সংকলিত ছিলো। কিন্তু যেকোন কারণে আমাদের শিক্ষাবর্ষে প্রবন্ধটি সিলেবাস থেকে বাদ পড়ে। বাংলা পড়তে খুব ভালো লাগতো। তা যাই হোক না কেন। ইতিহাস বই পড়ে যেমন ঐতিহাসিক ঘটনা জানতে ভালো লাগত, ঠিক তেমনি বাংলা বইয়ের প্রতিটি গদ্য-পদ্য পড়তে মনে অন্য রকম আনন্দ অনুভব করতাম। নবম শ্রেণীর বাংলা বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠা হতে ধারাবাহিক ভাবে পড়া শুরু করলাম। পড়তে পড়তে হঠাৎ থমকে গেলাম মনসুর আহমদের ব্যঙ্গাত্মক প্রবন্ধ “জনসেবা য়ুনিভার্সিটি”তে। এখানে এসে যেন পড়ার সকল গতি থমকে গেল। বারবার জনসেবা য়ুনিভার্সিটি প্রবন্ধটি পড়তে থাকলাম। পরের দিন ক্লাসে আমাদের বাংলার শিক্ষক জনাব আব্দুল মালেক স্যারকে এক প্রকার জোর করে পড়াতে বাধ্য করলাম। যেহেতু জনসেবা য়ুনিভার্সিটি প্রবন্ধটি সিলেবাসের বর্হিভূত তাই তিনি পড়তে চাচ্ছিলেন না। স্যারের কাছ থেকে প্রবন্ধটির প্রতিটি শব্দের ব্যাখ্যার অর্থ সেদিন জেনে নিয়েছিলাম।

মাধ্যমিক ছেড়েছি প্রায় একযুগ হতে চলল। এই সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিটি মুহুর্তে কিংবা পথে-ঘাটে চলার সময় আবুল মনসুর আহমদের “জনসেবা য়ুনিভার্সিটি” প্রতিটি শব্দ মনে করেছি অসংখ্যবার। দেশের মাটিতে সংঘটিত প্রতিটি ঘটনা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি প্রবন্ধের সাথে। “জনসেবা য়ুনিভার্সিটি”র প্রতি আমার এই প্রেমের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বহুবার। একযুগে অন্তত সহস্রাধিক ব্যক্তির কাছে এই প্রবন্ধটি আমি তুলে ধরেছি বিচ্ছিন্ন প্রতিটি ঘটনার সাদৃশ কিংবা বৈসাদৃশ্যের খেলায়। 

২.
“জনসেবা য়ুনিভার্সিটি”তে আবুল মনসুর আহমদ সমাপ্তি রেখা টেনে ছিলেন এভাবে- “তাই না এদেশের জনসেবকের এমন ভীড়”। আমি দেশের প্রায় পঞ্চাশটি জেলা সফর করেছি। রাজধানী ঢাকার অলিগলি হতে দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তে প্রতিনিয়ত অতি মনযোগের সহিত লক্ষ্য করেছি এদেশে রয়েছে অসংখ্য জনসেবক। বাস্তবে তাদের সাক্ষাৎ না পাইলেও রং-বেরংয়ের পোস্টারে তাদের গুণগান কিংবা সমাজে তাদের অবদান পড়িয়া মুগ্ধ হয়েছি। 
আমার এই অল্প জীবনের বলা চলে অধিকাংশ সময় অতিবাহিত হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। বুড়িগঙ্গা নদীর ঢাকা, তার পানির মতোই দ্রুত পরিবর্তনশীল। বুড়িগঙ্গা নদীর কালো, দুর্গন্ধময় পানির ঢেউ লেগেছে এদেশের সমাজসেবকের আড়ালে লুকায়িত রাজনীতিবীদদের শরীরে। শুধু ঢেউ লাগেনি এক প্রকার আঁচড় কেটে অন্তরের গহীনে প্রবেশ করেছে। ব্যক্তির পরিবর্তনে তাই রাজনীতির গুণগত ধারার কোন পরিবর্তন এদেশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ৪২টি। প্রতিটি দলের একটি স্বতন্ত্র আদর্শ আছে। এর মধ্যে প্রায় ১০টি দল রয়েছে যারা ইসলামী আদর্শে উজ্জিবিত। (বাস্তবে আসলে কোন দল কতটা ইসলামের আলোকে পরিচালিত একমাত্র দলের নীতি নির্ধারকরা বলতে পারবেন। তবে যেহেতু দলের সাথে ইসলাম যোগ আছে তাই আমি ধরে নিচ্ছি তারা ইসলামী রাজনীতি করেন।) বাকি ৩২টি দল দুনিয়াবী ব্যক্তি রচিত অথবা ব্যক্তির দেখানো পথের রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী। এই ধারা আবার দুভাগে বিভক্ত। ডানপন্থি ও বামপন্থি। ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের সময় ডানপন্থি ও বামপন্থি শব্দের উদ্ভব। সাধারণত উদার গণতান্ত্রিক, কিছু জাতিয়তাবাদ ও পুঁজিবাদী ব্যবস্থাকে ডানপন্থি আদর্শ বলে। প্রগতিশীল মতবাদ ও সমাজতন্ত্র বিশ্বাসীদের বামপন্থি বলা হয়ে থাকে।

ধর্মীয় আদর্শের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্র যখন তার আদর্শিক পথ থেকে বিচ্যূত হলো তখনই এদেশের মানুষের মনে জন্ম নিলো ক্ষোভ-বঞ্চনা ও আত্মধিকার ফিরে পাওয়ার চেতনা। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর সকল অপশাসন রুখে দিয়ে এদেশের দামাল সন্তানরা পৃথিবীর ইতিহাস নতুন করে লিখতে বাধ্য করলেন। লাল-সবুজের স্বপ্নিল পতাকা নিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করল “বাংলাদেশ”। স্বাধীনতা উত্তর এদেশের রাজপথ আবারও উত্তপ্ত। বাংলাদেশ কী মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্বাধীন হয়েছে তা নিয়ে চলে তুমুল বির্তক। যা আজও চলমান। কেউ বলে বামপন্থী আদর্শ তথা সমাজতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার ভিত্তিতে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আবার কেউ বলে জাতিয়তাবাদ ও উদার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশ স্বাধীন হয়েছে। অবশ্য এই চারটি আদর্শকে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

ইসলামপন্থি, ডানপন্থি ও বামপন্থি এই তিনধারার রাজনৈতিক আদর্শ, বিশ্বাস ও কর্মপদ্ধতি ও কর্মসূচীতে রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্নতা। ইসলামী দলগুলো ইসলামী আদর্শের আলোকে রাজনীতি করবেন এটাই স্বাভাবিক। তাদের কর্মসূচী-কর্মকান্ড ও সর্বোপরি ব্যক্তিগত পোষাক-পরিচ্ছেদে ইসলামী ভাব-গাম্ভীর্য ফুটে উঠা তাদের আদর্শিক রাজনীতির অংশ। তাদের নিয়ে কোন কথা নেই। কিন্তু যারা ইসলামকে রাজনীতির মাঠে আনতে চান না। তারা মনে করেন ধর্মীয় নয়, বরং ব্যক্তি রচিত মতবাদ দেশ পরিচালনা করার জন্য আদর্শ। এই সকল ডানপন্থি-বামপন্থিদের রাজনৈতিক আদর্শ, কর্মপদ্ধতি-কর্মসূচী যথেষ্ট ভিন্ন হলেও একটি বিষয়ে ঐক্যমত। ধর্মকে তারা শুধু ঘরের চৌকাঠের মাঝে বন্দি রাখতে চান। বিশেষত বামপন্থি আদর্শে বিশ্বাসী রাজনীতিবীদরা ধর্মকে এড়িয়ে চলার প্রাণপণ চেষ্টা করেন। ডানপন্থি রাজনীতির সাথে যারা জড়িত তারা ধর্মকে এতটা এড়িয়ে না গেলেও ইসলামপন্থিদের রাজনীতির মাঠে থাকা তাদের পছন্দ নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো দেশের যেকোন নির্বাচনে  ধর্মকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা ডান তো নয়ই এমনকি বামপন্থিদের মাঝে লক্ষ্য করা যায়না। এই সময় তারা যেকোন ধর্মীয় কাজে নিজেদের যথেষ্ট সম্পৃক্ত করেন। বিশেষত মসজিদ মাদ্রাসায় অনুদান, ওয়াজ-মাহফিল, ইসলামী গানের জলসায় প্রধান অতিথির চেয়ার অলংকৃত করে তাদের ধর্মীয় অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তখন তাদের ভাবখানা এমন তারাই প্রকৃত ইসলামপন্থি! 

৩.
প্রধান দুই ধারায় বিভক্ত দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলগুলো একটি ক্ষেত্রে ঐক্যমত, পাকিস্তানের অদ্ভুত ধর্মীয় নীতি তাদের ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট ভুল ধারণা দিতে পেরেছে। যার ফলশ্রুতিতে তারা চাননা এদেশের রাজনীতিতে ইসলাম জড়িয়ে পড়–ক। তারা বুঝে অথবা না বুঝে ইসলামকে এদেশের রাজনীতির মাঠে আনতে অপারগ। বিশেষত প্রায় ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে তারা অসাম্প্রদায়িক কিংবা জাতিয়তাবাদের নামে নতুন ধারা সৃষ্টির প্রয়াস দেশ ভাগের পর থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় দেশের রাজনীতিতে কোন আলেম-উলামা আসলে তাদের মৌলবাদ আখ্যা দিয়ে রাজনীতি হতে দূরে সরিয়ে রাখছেন। এজন্য যা যা করার দরকার তা করতে তারা পিছপা হচ্ছেন না। 

বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশী আবেগ প্রবণ। বিশেষত ধর্মীয় অনুভূতিকে তারা অন্য মর্যাদায় রূপ দিয়েছে। আর এই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন এদেশের সুযোগ সন্ধানী রাজনীতিবীদরা। মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে তারা নিজেদের রূপ পরিবর্তন করছেন গিরগিটির মত। বহুরূপী এসব বিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা এক মুখে আলেম-উলামাকে মৌলবাদী বলে গালি দিয়ে মুখে ফেনা তুলে ফেলছেন। অন্যদিকে ধর্মীয় চিহ্ন নিজেদের সাড়ে তিন হাত শরীরে এমন ভাবে উপস্থাপন করছেন যেন একেক জন আল্লাহর ওলী!

পল্টিবাজী আদর্শের রাজনীতিবীদরা নিজেদের কায়েমী স্বার্থের ধান্দায় এমন কোন কাজ নেই তারা করতে পারে না। নিত্য নতুন ধর্মীয় সংজ্ঞা প্রতিদিন আবিস্কার করে তারা নিজেদের মুফতি-মুহাদ্দিসের কাতারে উপস্থাপন করছেন। তারা প্রচার করছেন “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার” তাই তো সনাতন ধর্মালম্বীদের পূজা উৎসবে যেমন ঢোল বাজিয়ে নৃত্য দিচ্ছেন, অন্যদিকে ওয়াজ-মাহফিলে দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবীর লেবাসে হাজির হয়ে ইসলামের দুর্দিনের কথা শুনে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে কান্না করছেন। উভয় জনগোষ্ঠীকে কত সুন্দর অভিনয়ের মাধ্যমে ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছেন তা হয়ত এই বিজ্ঞ রাজনীতিবীদরা নিজেরাও জানেন না। 

এই চমৎকার নাটক, অভিনয়ের একমাত্র লক্ষ্য নির্বাচনী বৈতারণি পার হওয়া। সকল ধর্ম মানার তাদের যে প্রবণতা, বাস্তবে হয়ত তাদের মধ্যে কোন ধর্ম পালনের বিন্দু পরিমাণ ধর্মীয় আদর্শ পাওয়া যাবেনা। নির্বাচন যেন একেকটি জুয়া খেলার আসর, খেলা শেষ তো সব শেষ। আমি এই বহুরূপী রাজনীতিবীদদের নামকরণ করলাম “নব্য মৌলবাদী” হিসেবে। তাই তাদের সুরে সুর মিলিয়ে বলতে পারি, “আসছে সামনে নির্বাচন, চলছে তার শোডাউন”।

৪.
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে সারাদেশের খালি দেয়ালগুলোতে, বড় বড় বিলবোর্ড কিংবা ব্যানার ফেস্টুনে নব্য মৌলবাদীরা নিজেদের উপস্থাপন করছেন ভিন্ন ভিন্ন সাজেঁ। কারও মাথায় টুপি, মুখে দাঁড়ি, গায়ে পাঞ্জাবী, মহিলাদের মাথায় হিজাব এযেন নিজেদের ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবে উপস্থাপনের অবিরাম চেষ্টা! পুরুষ প্রার্থীরা মসজিদ গুলোতে নিয়মিত নামাজ আদায়, রোজার ঈদে বিশাল আয়োজন করে যাকাতের লুঙ্গি-শাড়ী বিতরণ, কোরবানী ঈদে হাঁটের বড় বড় একাধিক গরু কোরবানী করে গোশত বিতরণ, একাধিকবার হজ্জ করে নিজের নামে “আলহাজ্ব” টাইটেল লাগিয়ে, বিশাল শোডাউন করে নিজের মুসলমান্বিত জাহির করে যাচ্ছেন।

রাজনীতিবীদদের এই বিপরীত মুখী আচরণের অর্থ কি ? একটাই অর্থ এদেশের সরল মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ধোঁকা দিয়ে ভোটের মাঠে জয়লাভ করা। দেশের অধিকাংশ সাধারণ ভোটারদের, রাজনীতির এই পাকা খেলোয়াড়দের কুটচাল সম্পর্কে কোন ধারনা’ই নেই। ফলশ্রুতিতে প্রতিবার নির্বাচন আসে, নব্য মৌলবাদী রাজনীতিবীদদের চেহারা-সুরতে পরিবর্তন দেখে, আশার আলো নিয়ে ভোটারগণ মার্কার উপর মেরে চলেছেন একের পর এক সিল। 

নির্বাচনে জয়ী নব্য মৌলবাদী রাজনীতিবীদদের শরীর থেকে চিহ্ন হাওয়া না হলেও মনের মধ্যে জাগ্রত ধর্মীয় অনুভূতি বিনাশ হতে সময় লাগেনা। তারা ফিরে যায় তাদের পুরনো রূপে। দেশে কায়েম হয় পাকিস্তানী স্টাইলের শাসন ব্যবস্থা। অপশাসন, শোষণ, দুর্নীতি, ন্যায় বিচারহীনতার এই সংস্কৃতির ফলে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এই অরাজকতা। প্রতিপক্ষকে হত্যা, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, মাদকের কারবার, অন্যের সম্পত্তি দখল, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতন সহ নানা মুখী অপরাধে জড়িয়ে পড়ে নব্য মৌলবাদী ও তাদের অনুসারীরা।

সর্বনাশা নব্য মৌলবাদীদের কারণে ব্যাহত হচ্ছে সোনার বাংলা গড়ার অগ্রযাত্রা। দূষিত এই নেতৃত্বের কবলে পড়ে শহীদের রক্তে সিক্ত লাল ভু-খন্ড ও প্রকৃতির দান চির সবুজের বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত হারিয়ে ফেলছে এগিয়ে যাওয়ার পথ। হোঁচট খাচ্ছে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়ার ৫৬ হাজার বর্গমাইলের পবিত্র ভূমি। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, কর্ণফুলি, শীতলক্ষা ও গোমতী নদীর পানি দূষিত হচ্ছে দেশের এই ভোগবাদী রাজনীতিবীদদের কারণে। অসংখ্য পাখির মধুর কন্ঠস্বর হারিয়ে যাচ্ছে কালের গহবরে। ভালোবাসা-মানবিকতা হারিয়ে মানুষ পরিণত হচ্ছে জন্তু-জানোয়ারে।

এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়াবার, ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তুলে নব্য মৌলবাদীদের হাত থেকে নেতৃত্বের চাবি কেড়েঁ নেওয়ার। এই বাস্তবতা জনতার মহল যত শীঘ্রই উপলব্ধি করবে, ততই মঙ্গল তাদের নিজেদের এবং দেশ ও জাতির।

পঠিত : ৩২১০ বার

মন্তব্য: ০