Alapon

ওহী ও আকলের মধ্যে সম্পর্ক

 কোনটা আকলী কোনটা নাকলী? ইসলামের মত আকলকে এত গুরুত্ত্ব
দিয়ে থাকে সমগ্র দুনিয়াতে এমন কোন পদ্ধতি, চিন্তা ও দর্শন পাওয়া যাবে না। ইসলাম
আকলকে মর্যাদার চোখে দেখে থাকে। যদি এমন কোন কিছু শোনে থাক যা আকলকে ছোট করে,
আকলকে অপ্রয়োজনীয় ভাবে, তাহলে জেনে রাখ সেটা ইসলামী নয়। যেটা দ্বীনী সেটা একই সাথে
আকলী। এটাও আমরা শুনে থাকি, যদি আকলকে এক কিনারায় রেখে না দাও তাহলে জান্নাতে যেতে
পারবে না!




আল্লাহ কি
বলে এই ব্যাপারে? আল্লাহ এই বিষয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলে থাকেন,




আল্লাহ বলেন, ﴿وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ
نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ﴾




তারা আরো বলবেঃ আহা! আমরা যদি শুনতাম এবং বিবেক -বুদ্ধি দিয়ে বুঝতাম৷ তাহলে আজ এ জ্বলন্ত আগুণে সাজাপ্রাপ্ত
দের মধ্যে
গন্য
হতাম না৷
 




দেখুন হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী আকল এবং নাকীল
(দ্বীন ও আকল) এর মধ্যকার সম্পর্ক বুঝানোর ক্ষেত্রে কি বলেন। তিনি বলেন,




الوحي عقل من الخارج




ওহী হল এমন আকল যা বাহির থেকে মানুষের কাছে
এসেছে।




العقل وحي من الداخل




আর আকল হল মানুষের ভেতর থেকে আগত ওহী।




আকল এবং ওহীর মধ্যকার সম্পর্ককে বুঝানোর জন্য
আমাদের ইসলামী সভ্যতার ইতিহাস যে পরিমানে গ্রন্থ লেখা হয়েছে সে সকল গ্রন্থকে যদি
একত্রিত করি তাহলে একটি বিশাল লাইব্রেরী কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাবে। এত পরিমাণে
গ্রন্থ লেখা হয়েছে এই আকল সম্পর্কে।




কিন্তু সেই আকলের কোন মূল্য নেই যে আকল ওহীকে
বাদ দেয়। সেটা বলা হয় রেশনালিজম বা যুক্তিবাদ
(Rationalism)ওহীকে বাদ দিয়ে আকলকে যারা একমাত্র
জ্ঞান এবং সত্যের উৎস বলে থাকে আমি তাদের কথা বলছি না। কিন্তু আল্লাহর দ্বীন
মানুষের আকলকে উদ্দেশ্য করে কথা বলে থাকে। আল্লাহর কিতাব মহাগ্রন্থ আল-কোরআন যেমন
আল্লাহর একটি কিতাব তেমনি ভাবে মানুষের আকলও আল্লাহর একটি কিতাব (সৃষ্টি)। এখানে
শুধুমাত্র আকলের সীমাবদ্ধতা সমূহ সম্পর্কে তোমাদের জানতে হবে। আর আমাদের দায়িত্ত্ব
হল এর সর্বদায় এর সীমানাকে বৃদ্ধি করা। আমরা যদি মানব সভ্যতার ইতিহাসের দিকে তাকাই
তাহলে দেখতে পাই যে, মানুষ সব সময় তার আকলের সীমানাকে বর্ধিত করার চেষ্টা করেছে।
যদি তা না করত তাহলে এই সকল নিত্য-নতুন আবিষ্কার আমাদের চোখে পড়ত না। 

পঠিত : ৭১০ বার

মন্তব্য: ০