Alapon

আল জাজিরায় গওহর রিজভীর সাক্ষাৎকার এবং চেতনাপাড়ায় প্রতিক্রিয়া...


আল জাজিরা টেলিভিশনের জনিপ্রয় অনুষ্টান ‘হেডে টু হেড’-এ গতকাল প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভি উপস্থিত ছিলেন। উপস্থাপক হিসেবে যথারীতি ছিলেন মেহদি হাসান। পুরো অনুষ্ঠান দেখার পর জাতির প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, এ ক্ষেত্রেও জাতি দু’ভাগ হয়ে গেছে।
 
একদল আল জাজিরার পক্ষে; মেহদি হাসানকে প্রশংসার স্তুতি বাক্যে গগনে তোলার চেষ্ঠায় তৎপর। অপরদল আল জাজিরা এবং মেহদি হাসানকে ছাগু প্রমাণ করবার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশংসা করার কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের আপামর সাধারণ জনতা চায়, আমাদের মিডিয়াগুলোও অনুরূপ ভূমিকা পালন করুক। মিডিয়া জাতির বিবেকের দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু তারা এখন সরকারের মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করছে। আর জনতার চাওয়া পূরণ করেছে আল জাজিরা এবং মেহদি হাসান। যার কারণেই, সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছে আল জাজিরা এবং মেহদি হাসান।

আজকে যারা আল জাজিরা এবং মেহদি হাসানকে ছাগু বলছেন, বেয়াদপ উপস্থাপক বলছেন, এই মানুষগুলোই আবার নবনীতা ফারাজানা রূপাদের মত সাংবাদিকদের এহেন কাজকে বাহবা দিতেন! তারা পিঠ চাপড়িয়ে দিয়ে বলতেন, এইতো সাব্বাশ! এটাই সাংবাদিকত। যখন ফারাজানা রূপারা বিরোধী দলীয় নেতাদের টকশোতে কথা বলার সুযোগ দিতেন না, দিলেও কথার মাঝখানে বা হাত ঢুকাতেন তখন এই সকল মানুষরাই আনন্দ পেতেন।
 
আজকে যখন আল জাজিরার প্রখ্যাত সাংবাদিক মেহদি হাসান একইভাবে গওহর রিজভীকে প্রশ্ন করল এবং প্রশ্নের বিপরীতে গওহর রিজভী যখন ভিন্ন প্রসঙ্গ টানার চেষ্টা করলেন অথবা উল্টো মেহদি হাসানকে প্রশ্ন করতে গিয়ে মেহদি হাসান দ্বারা বাধা প্রাপ্ত হলেন তখন এই সকল মানুষরা হা...রে...রে... রব তুললেন। যারা ফারাজানা রূপাদের এহেন কাজের জন্য বাহবা দিতেন, তখন সেটাকে যৌক্তিক মনে হতো। আর আজ মেহদি হাসানেরটা অযৌক্তিক হয়ে গেল?
 
এখানে বলে রাখা ভালো, মেহদি হাসানের ‘হেড টু হেড’ অনুষ্ঠানটা অনেক আগে থেকেই দেখা হয়। এবং অধিকাংশ পর্ব দেখে মনে হয়েছে, অনুষ্ঠানটির চরিত্রটাই এমন। সেইসাথে শুধু গওহর রিজভী নয়, অনুষ্ঠানে আগত সকল অতিথিকেই একইভাবে প্রশ্ন করা হয়, ক্রিটিসাইজ করা হয়। এই অনুষ্ঠান যারা দেখে, তাদের কাছে এটাই স্বাভাবিক ছিল। তবে বাঙাল চেতনবাজাদের আতে ঘা লাগল কোথায়?
 
সত্য কথা বলতে, ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মিডিয়া পাড়ায় তৈলের ব্যবহার বাড়তে শুরু করে। তৈলের ব্যবহার এতোটাই বেড়ে যায় যে, প্রধানমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনকে অনেকে ‘কৌতুক শো’-বলে অবিহিত করেন। সেখানে কোন সাংবাদিক কত মাত্রায় তৈল মারতে পারেন সেই প্রতিযোগিতা হয়। সরকার প্রধান বা সরকারি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদের নেতাদের শক্ত প্রশ্ন করবার মত সাংবাদিক মিডিয়া পাড়ায় একজনও অবশিষ্ঠ নেই। যার কারণে চেতনাবাজরা তৈল মর্দনময় মিডিয়া দেখতে দেখতে হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সামনে পড়ে সেখানে ‘তৈলের’ আশা করেছিলেন হয়তো। তৈল না পাওয়ায় তারা নাখোশ হয়ে এখন বলছে, ‘আল জাজিরা’ জামায়াত ইসলামের টিভি! আর মেহদি হাসান শিবিরের ইউকে শাখার কেন্দ্রিয় সভাপতি! লও ঠ্যালা।

পঠিত : ৪৭৭৫ বার

মন্তব্য: ০