হাসানুল হক ইনুর স্তুতি বাক্যের সমাহার এবং জনতার মনে প্রশ্ন...
তারিখঃ ৪ মার্চ, ২০১৯, ০৬:০৫
সাধারণ জনতা প্রায়শ বলে থাকে, ‘রাজনীতি খুবই খারাপ জিনিস! রাজনীতির খাতিরে মানুষের জীবন নিয়ে রাজনীতি করতে হয়, রাজনীতি করতে হয় লাশ নিয়ে; অসুস্থতা নিয়েও রাজনীতি করতে হয়।
এসবই রাজনৈতিক নেতাদের কর্ম। আবার রাজনৈতিক নেতারা যখন বাটে পড়েন তখন অন্য রাজনৈতিক নেতারা সুযোগ লুভে নিতে ভুল করেন না। এই অসুস্থতা অথবা মৃত্যুর সুযোগে অনেকেই অনেক কিছু বাগিয়ে নেওয়ার ধান্দায় থাকে। যেমনটা ওবায়দুল কাদের সাহেবের অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ফায়দা আদায় করতে চাইলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হাসানুল হক ইনু ওবায়দুল কাদের সাহেবকে দেখতে যান। তিনি হাসপাতাল থেকে বের করে সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন এবং ওবায়দুল কাদেরের অবস্থা জানতে চান। তখন ইনু সাহেব বলেন, ‘তিনি চমৎকার আছেন, সুস্থ আছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব মুক্তিযুদ্ধ করা মানুষ। এসব অসুস্থতা তাকে কাঁবু করতে পারবে না।
ইনু সাহেবের এহেন স্তুতি মাখা বাক্যবানের ঘন্টা খানেকের মধ্যেই ডাক্তার সাহেব জানালেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবকে সিঙ্গাপুরে নিতে হবে।
ইনু সাহেবের এমন স্তুতি মাখা কথার উদ্দেশ্য সাধারণ জনতা বুঝে। সাধারণ জনতার ন্যায় আমিও কিছুটা অনুধাবন করতে পারি। যে ইনু মেননদের দলেরই কোনো অস্তিত্ব নেই, সেই ইনু মেননরা গত ১০ বছর মিডিয়াপাড়াসহ বিরোধী দলকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছে। ক্ষমতার স্বাদ বড়ই খারাপ। এই টার্মে যখন ইনু ও মেননদের মন্ত্রিত্ব দেওয়া হলো না, তখন তাদের অবস্থা দেখে মনে হলো, তারা বুঝি বাপ-মা মরা এতিম সন্তান।
কয়েকদিন আগের একটা ঘটনা বলি। ব্যক্তিগত কাজে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র পল্টনের বিজয়নগরে অবস্থিত আকরাম টাওয়ারে গিয়েছিলাম। লিফট-এর জন্য অপেক্ষা করছি। এমন সময় সেখানে সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন উপস্থিত হলেন। তিনিও আমাদের সাথে লাইনে দাড়িয়ে গেলেন। তার সাথে ছিল না প্রটোকলের হম্বি-তম্বি। তখন সাধারণ জনতা হাসতে হাসতে বলল, ‘মন্ত্রী সাহেবের প্রটোকল কই? গাড়ি কই?’
সে সময় মেনন সাহেবের মুখের অবস্থা দেখে মনে হয়েছিলো, তিনি সত্যিই এতিম সন্তান।
মন্ত্রীত্ব হারিয়ে ইনুরা যেরূপ এতিম এবং অসহায় অবস্থায় পড়েছে, ওবায়দুল কাদেরের অসুস্থতার সুযোগে ইনু সাহেব হয়তো একটু ফায়দা আদায় করতে চাইলেন। বিজ্ঞজনরা বলেন, ‘মানুষ যখন অসুস্থ অবস্থায় থাকে তখন নাকি সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় থাকে। আর এই অবস্থায় যারা পাশে এসে দাঁড়ায় তাদের প্রতি নাকি কৃতজ্ঞতা বোধ জন্মায়।
এই কৃতজ্ঞতার খাতিরেই যদি পুনরায় মন্ত্রীত্ব বাগিয়ে নেওয়া যায়, সে প্রচেষ্ঠাতেই হয়তো ইনু সাহেবের এহেন স্তুতি বাক্যের সমাহার। বাপ নাকি বাপকে ছাড়ে না। তাই ফয়দা আদায়ে এক রাজনীতিবিদ অপর রাজনীতিবিদের অসুস্থতাকেও ছাড় দেয় না।
মন্তব্য: ০