Alapon

যারা সিলেটের জঙ্গি অভিযানকে নাটক বলছেন....


সিলেটের ঘটনাকে যারা নাটক নাটক বলে হাস্যরসের সৃষ্টি করছেন। তাদের কাছে প্রশ্ন সেনাবাহিনীও কি নাটক করতে পারে??


অভিযান কেনো দীর্ষ সময়  িনলো, তা জানতে আপনাকে আজকের প্রথম আলো প্রকাশিত এই নিউজটি মনোযোগ দিয়ে পড়েতে হবে।


 


‘ফোর্স পাঠান, সোয়াত পাঠান, আমাদের সময় কম।’—এই কথোপকথনেই বদলে যায় আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কৌশল। অভিযান-সংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এমনটাই জানিয়েছেন।


চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান ও তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। এর ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলের সন্ধান পাওয়া যায়। পাঁচতলা বাড়িটি গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঘিরে ফেলে পুলিশ। ভোররাতে বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা ছোড়া হয়।


বাড়ির মালিকের কাছ থেকে ভাড়াটেদের তথ্য নিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়, নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গিরা অবস্থান করছে। ভেতরে একজন নারী থাকার বিষয়ে নিশ্চিত ছিল পুলিশ। কিন্তু মোট কতজন আছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল না।


বাড়ির মালিকের দেওয়া তথ্যে পুলিশ জানতে পারে, গত জানুয়ারি মাসে একটি পরিবার নিচতলায় ওঠে। ভাড়াটে ফরমে মর্জিনা বেগম নাম লেখা হয়। এ তথ্যের সুবাদে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করাতে গত শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার থেকে পুলিশ হাতমাইকে ডাকাডাকি শুরু করে।


সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বাড়িটির উল্টো দিকে পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে হাতমাইকে বলতে থাকেন, ‘মর্জিনা, শুনতে পাচ্ছেন, কথা বলেন মর্জিনা!’


পরে পুলিশের অন্য সদস্যরাও মর্জিনার নাম নিয়ে এমন ডাকাডাকি করেন। এভাবে ডাকাডাকির একপর্যায়ে বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটের জানালা থেকে প্রথম নারী কণ্ঠ ভেসে আসে, ‘আমরা আল্লার পথে আছি।’


দ্বিতীয় দফায় ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে আরও কিছু কথাবার্তা শোনা যায়। শেষে ফ্ল্যাট থেকে বলা হয়, ‘ফোর্স পাঠান, সোয়াত পাঠান, আমাদের সময় কম।’


এরপর দিনভর দফায় দফায় ডাকাডাকি করলেও জঙ্গিরা আর সাড়া দেয়নি।


অভিযান-সংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার জঙ্গিদের ওই কথোপকথন শোনার পরই অভিযানের কৌশল বদলে যায়। জঙ্গিদের কাছে শক্তিশালী অস্ত্র ও বিস্ফোরক আছে বলে ধারণা করে পুলিশ।


জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন বলেন, ‘সোয়াত পাঠান, সময় কম’—এই কথা শোনার পর মনে হয়েছে, জঙ্গিরা শক্ত অবস্থানে আছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়।


তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সিলেট মহানগর পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যেহেতু জঙ্গিরা সোয়াত ডেকেছে, তাই সেটি কোনো ফাঁদ কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা হয়। শুক্রবার বিকেলে ঢাকা থেকে সোয়াত আসে। সন্ধ্যার পর আসে সেনাবাহিনী। শনিবার সকালে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে।


গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনী জানায়, বাড়ির ভেতরে থাকা চার জঙ্গি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও একজন নারী। আতিয়া মহলে আর কোনো জঙ্গি জীবিত নেই। সবাই অভিযানে নিহত হয়েছে।


সেনাবাহিনী আরও জানায়, আতিয়া মহল থেকে একজন নারী ও একজন পুরুষের মৃতদেহ বের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভেতরে আরও দুটি মৃতদেহ পড়ে রয়েছে, যাদের শরীরে সুইসাইডাল ভেস্ট বাঁধা।

পঠিত : ১৮৫৪ বার

মন্তব্য: ০