Alapon

প্রেয়সীর প্রতি ভালবাসা

হে আমাদের রব! আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে এমন বানাও, যেন আমাদের চোখ জুড়ায় (সুরা ফুরকান-৭৪)


বাসে নারী সিটে পুরুষ বসলে ৫ হাজার টাকা জরিমান ও ১ মাসের জেল। প্রশ্ন তুলব না এটির কার্যকারিতা ঠিক, নাকি ঠিক না । তবে নারী অধিকার নিয়ে আমাদের মুল্যায়নটা ব্যাখ্যার দাবি রাখে। আমাদের জানা দরকার একটু পিছনের ইতিহাসে। আধুনিকতার মাথা খেয়ে স্বার্থান্ধ ধিকৃত কিছু দালাল বলে যে, ইসলাম নারীকে শেকল পরিয়ে চার দেয়ালের মাঝে বন্দী করে রেখেছে। ইসলাম নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। তাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে জুলুমের বোঝা।


কারন ইতিহাসেরও ইতিহাস থাকে। একটু দেখে আসা যাক পৃথিবীর অন্য ধর্ম গুলিতে কিংবা অন্য দেশে নারীদের কি মর্যাদা দেওয়া হয়েছে…


চীনে: কিসসাতুল হামরার ২৮৩ পৃষ্ঠায় সে দেশের নারীর অবস্থা বলা হয়েছে, নারী কত হতভাগিনী! পৃথিবীতে তার মত মূল্যহীন দ্রব্য আর কিছু নেই……মেয়েদের জন্মমুহুর্তে কখনো সানাই বাজে না। সে মারা গেলে তার জন্য দুফোঁটা অশ্রু ফেলার মত কেউ থাকে না।


ভারতঃ বিশ্ব ইতিহাসের ৩৯৪ পৃষ্টায় বলা হয়েছে, হিন্দু সমাজে এ ধারনা খ্যাতি অর্জ্ন করে যে, নারী হচ্ছে নোংরামির জড় এবং তার অস্তিত্ব হচ্ছে আগাগোড়া নরক। তাছাড়া “মনু” স্মৃতি অধ্যায়ে নারীকে মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে নারীকে নিকৃষ্ঠতম বলা হয়েছে। নারী স্বামীর সাথে খাবার গ্রহন করবে না এবং স্মামীর উচ্ছিষ্ঠ খাবার খাবে(হামরাতুল হিন্দ-১৭৯)।


গ্রিসঃ গ্রিক ইতিহাসের ১১৪-১১৭ পৃষ্ঠায়, গ্রিক দার্শনিক এবং চিন্তাবিদরা মনে করতেন, নারীর অস্তিত্বের মত নারী নামটাকেও যেন বদ্ধঘরে আবদ্ধ করে রাখা হয়। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর ভালবাসা একথাটি ছিল দুর্বোদ্ধ ও নিরর্থ্ক। গ্রিক চিন্তাবিদ ডেমোস্তিন বলেন, আমরা যৌনতৃপ্তির জন্য বেশ্যালয়ে গমন করি….. মেযেরা স্মমীর ঘরে আসে কতৃত্ব হওয়ার জন্য নয়, সেবিকার দায়িত্ব পালন করার জন্য।


রোমঃ স্বামী মারা গেলে বিধবা স্ত্রী ছেলেদের উত্তারাধিকারে পরিনত হওয়ার মত নিকৃষ্ঠ কাজ গনতন্ত্রের মানসকন্যাদের দেশে জায়েয ছিল। তাছাড়া মেয়েদের কোন সম্পত্তির অধীকার ছিল না।


প্রাচীন আরবঃ জীবন্ত মেয়েদের কবর দেয়া। নারীদের ক্রীতদাশি বানানো। মেয়েরা ছিল কলঙ্কজনক ও স্থায়ী বোঝাস্বরুপ বানানো হত। নারী জন্মগ্রহন করলে মুখ কালো হয়ে যেত… (সুরা আন নাহল ৫৮-৫৯)


ইহৃদীবাদঃ ইহুদি সমাজে নারীর মান মর্যাদা ছিল অপমানকর লজ্জাজনক। ইহুদি পিতা তার মেয়েকে বিক্রি করে দেওয়ার অধীকার রাখত।


খৃষ্ঠান পন্ডিতঃ পবিত্র গ্রন্থে বলা হয়েছে,নারীকে লজ্জায় মরে যাওয়ার জন্য এতটুকই যথেষ্ঠ যে, সে নারী। নারী হচ্ছে শয়তানের বহিঃপ্রকাশ। শয়তান নারীর বেশ ধরে দৃশ্যমান হয়। তাদের ভাবনা ছিল নারী স্বর্গে যেতে পারবে না। তার মানবিক আত্না আছে বলে তারা বিশ্বাস করতো না।


 আর বাস্তবতা হচ্ছে তারাই আজকে নারী অধিকার শেখায় আমাদের!! দেখে নেয়া যাক ইসলাম কতোটা নারীদের অধিকার দিয়েছে ?? প্রিয়তমা স্ত্রীদের প্রতি ভালবাসাকে ইসলাম কিভাবে কতোটা সন্মান দিয়েছে।এবং কতোটা অধিকার দিয়েছে নারীদের….


স্বামী নির্বাচনের অধিকারঃ মেয়ে যখন যৌবনপ্রাপ্ত হয় তার বিয়ের ব্যাপারে তার পূর্ন্ স্বাধীনতা আছে।রাসুল বলেন,“কোন অলীর(দায়িত্বশীল)পক্ষে মেয়ের(ব্যক্তিগত)ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নেই”(আবু দাউদ)।তিনি আরো বলেন, “বিবাহিতা নিজের ব্যাপারে অলি থেকে বেশী ক্ষমতাবান। অবিবাহিতার ক্ষেত্রে অলী তার অনুমতি চাইবে আর নীরবতাই অনুমাতির লক্ষন বলে ধরে নিবে”(বুখারি) ।আল্লামা ইবনুল কাইয়ুম বলেন,বালেগা বুদ্ধিপ্রাপ্তা ও জ্ঞানী মেয়ের ধনসম্পদেও যখন তার পিতা মাতা মেয়ের অনুমতি ব্যাতীত ব্যয়ের অধিকার রাখে না। সেখানে বিয়ের ব্যাপারে বিনা অনুমতিতে বিয়ের প্রশ্নই আসেনা(জাদুল মায়াদ,চতুর্থ্ খন্ড)। এসবের পরেও যদি মেয়েকে বিয়ে দেয়, তাহলে মেয়ে সে বিবাহকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। খানসা বিনতে জুযায এর ঘটনা এমনি। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসুল বিয়েকে প্রত্যাখ্যান করার অনুমতি দিয়েছেন। এ বিষয়ে কোরআন-হাদিসে অযস্র উদহরন আছে।



একটু চিন্তা করার বিষয় যে, সারা দুনিয়াতে মেয়েদের কোন মর্যাদ যখন ছিলনা। তখন ইসলাম মেয়ের অমতে তার বিয়েকেও হারাম করেছে। আর তারা বলে ইসলাম নাকি নারীদের অধিকার দেয়নি। হাস্যকর বিষয় ছাড়া আর কি হতে পারে???



প্রিয়তমার স্ত্রী হিসেবে অধিকারঃ প্রিয়নবী বলে তাদের খাওয়া পরার ব্যবস্থা করা স্মামীদের দায়িত্ব। স্ত্রীর গুরুত্ব সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘উত্তম স্ত্রী সৌভাগ্যের পরিচায়ক। স্বচ্চল ব্যক্তি তার স্বচ্চালতা অনুযায়ী ভরনপোষন দেবে (তালাক-৭) এক্ষেত্রে স্ত্রীদের উপর কোন প্রেসার দেয়া হয়নি। হাদিসে আরো বলা হয়েছে খাবার ও পরিধেয বস্ত্রের ব্যবস্থা করা স্বামীদের উপর ফরজ। বিয়ের পরে যদি স্ত্রী কোন আয় করে তাহলে স্বামীর তা নেওয়ার অধিকার নেই। তবে স্ত্রী চাইলে ব্যয় করতে পারে।


পারস্পারিক সম্প্রিতিঃ তিনটি বিষয় নবী করিম (সা.)-এর জীবনে লক্ষণীয় ছিল—এক. নামাজের প্রতি অনুরাগ; দুই. ফুলের প্রতি ভালোবাসা; তিন. নারীর প্রতি সম্মান (বুখারি ও মুসলিম)। তাদের সাথে সুন্দর সদয় ব্যবহার কর(নিসা ১৯)। এ ব্যপারে আল্লাহ বলেন, স্ত্রীদের সাথে উত্তম পন্থায় জীবনযাপন কর। তাদেরকে বিরক্ত করার জন্য কষ্ট দিও না। এমনকি বলা হয়েছে, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই উত্তম যে তার স্ত্রীদের কাছে উত্তম। খুতখুতে স্বভাবের না হয়ে কিংবা স্ত্রীদের ভুল না খুজে বরং সহানুভূতির সাথে তাদের কাছে যাওয়ার জন্য নবী বলেন,কোন ব্যক্তি রাতের অন্ধকারে স্ত্রীর কাছে উদ্যেশ্যে এসো না যে, তাদের ভুল খুজে বেড়াচ্ছো(মুসিলিম)। ইমাম আবু হানিফা বলেছেন, নারী জাতির প্রতি এতবড় আস্থা ও বিশ্বাস এবং নম্রতাপুর্ন্ ব্যবহারের নির্দেশ শুধু ইসলামই দিয়েছে। অন্য কোন ধর্মে এমন দৃষ্টান্ত নেই। আর আজকে পাশ্চাত্য আমাদেরকে নারী অধিকার শেখায়। আশ্চার্য্ !!!!!!



ফ্রান্সে এক প্রস্তাবে বলা হয়, নারী পশু নয় মানুষ তবে তাদের তৈরী করা হয়েছে পুরুষের সোবা করার উদ্যেশ্যে। অথচ ইসলাম নারীকে অবনতি ও অবমাননার নিকৃষ্টতাম ডাস্টবিন থেকে তুলে এনে উন্নতি ও মর্যাদার উচ্চতম সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিতা করেছে। আল্লাহ বলেন, নরীকে স্বাধীন মানুষ ও স্ত্রীত্বের মর্যাদা দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে – পুরুষের দাসী হিসেবে নয়।


ইমলাম যদিও পুরুষকে ৪ টি বিয়ে করার সুযোগ দিয়েছে তা্র অনেক শর্ত্ সাপেক্ষে। তবে আবার বলেছে স্ত্রীদের অনুমতি নিতে হবে এবং সবার সমান অধিকার দিতে হবে। যদি না পার তবে বিয়ে করতে নিষেধ করেছে। তাছাড়া দারিদ্রের অবস্থায় একাধিক বিয়ে করা নিষিদ্ধ।


প্রিয়তমার তালাকের অধিকারঃ আবু দাউদে বলা হয়েছে, আল্লাহর কাছে হালাল বিষয়াবলির মাধ্য সবচেয়ে ঘৃনার বিষয় হচ্ছে তালাক। আবার বলা হয়েছে, বিয়ে কর কিন্তু তালাক দিওনা কারন তালাক এমন এক জিনিস যার জন্য আল্লাহর আরশ কেপে উঠে। তারাপরও যদি তালাক দিতে চায় তবে তাদের অধিকার দেয়া হয়েছে। কোরআন বলে, কোন গুনাহ নেই যে, স্বামী ও স্ত্রী পরষ্পর সমঝোতা করে নেবে(নিসা-১২৮)এমনকি তালাকের ব্যপারে স্ত্রীদেরকে ও অধিকার দেয়া হয়েছে। যদি তারা পৃথক হয়ে যায় তবে আল্লাহ অফুরন্ত ভান্ডার থেকে লালন পালন করবেন (নিসা-১৩)।


অথচ বাইবেলে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি দ্বিতীয় বিয়ে করেছে যে যেন তার সাথে ব্যভিচার করেছে। অতি-১৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে এমনভাবে লেপ্টে থাকবে যেন এক দেহ এক প্রান কোনদিন তারা আলাদা হবে না। খৃস্টান ধর্মগুরু সেন্ট বলেন, আমি চাই বিশ্বের সব মানুষই আমার মত অবিবাহিত জীবন যাপন করুক। খৃস্টবাদে বৈধ তালাকের কোন অবকাষ নেই। একবার চিন্তা করে দেখা দরকার তাহলে ঐ মেয়েদের অবস্থা কি হবে যাদর স্বমী নোংরা বা অস্বচ্চরিত্র। আর তারা আজ আমাদের কে নারী অধিকারের কথা বলে। হায় সেকুলাস!!!


পোশাকের ব্যাপারে অধিকারঃ ছেলেকে সোনা ব্যবহারের অনুমতি না দিলেও নারীদের ক্ষেত্রে তার অনুমতি শুধু দেয়নি বরং উৎসাহিত করেছে। সুগন্ধি ব্যবহার করে স্বামীর কাছে যেতে উৎসাহিত করেছে। এ ক্ষেত্রে ওসামন রাঃ কে আল্লাহ রাসুল বলেন, যদি তুমি তৌহিদবাদী হয়ে থাক তবে নিজের স্ত্রী কাছে যেও এবং সন্তানের প্রতি লক্ষ রেখ। তাছাড়া মেয়েদের রেশমি কাপড়া ব্যবহারেও তাদের কোন বাধা নেই যদিও পুরুষের জন্য নিষেধ।


প্রিয়তমার ব্যবসা অন্যান্য অন্যন্য অধিকারঃ হযরত আসমা রাঃ বলেন,আমি তাঁর উট ও ঘোড়া চরাতাম, পানি পান করাতাম এবং পানি উত্তোলনকারী মশক ছিঁড়ে গেলে সেলাই করতাম, আটা পিষতাম ।হযরত ওমর রাঃ এক নারীকে বাজারের সরদার নিয়োগ করেছিলেন। তাছাড়া রাসুলের সময় মেয়েরা জিহাদেও অংশগ্রহন করেছে। জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রেও ইসলাম সমানভাবে নারীদের উৎসাহিত করেছে।


নারীর উত্তরাধিকার অধিকারঃ সাদ বিন রাবী রাঃ এর স্ত্রীর ব্যপারে কোরানের প্রথম নারীদের সম্পত্তির ঘোষনা আসে(নিসা-১১-১২)। নারীদের যদিও কোন খরচ নাই তবে তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে সম্পত্তি পেয়ে থাকে। কারন প্রতিটি পদক্ষেপে নারীকে পুরুষই খরচ বহন করতে বাধ্য।


মেয়ে সন্তানের অধিকারঃ নবী সা: বলেন, যাদেরকে আল্লাহ মেয়ে দান করেছেন,তারা যদি তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে তারা তাদের জন্যে জাহান্নামের প্রতিবন্ধক হবে(বুখারি)। অন্যত্র বলা হয়েছে যার ঘরে মেয়ে আছে সে যদি ছেলেদের ওপর অগ্রধিকার না দেয় তাহলে তাকে আল্লাহ তায়ালা জান্নাতে পবেশ করাবেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মেয়েশিশু বরকত (প্রাচুর্য) ও কল্যাণের প্রতীক।


মা হিসেবে নারীর অধিকারঃ মায়ের মর্যাদা সম্পর্কে প্রিয় নবী বলেছেন, এক সাহাবি জিহাদের অনমতি চাইলে বলেন,তোমার মায়ের খেদমত কর ।যদি তুমি এমন কর তাহলে হজ্জ,ওমরা এবং জিহাদ তিনটির পুন্য পাবে(তাবরানী)। এছাড়া মায়ের পায়ের তলে সন্তানের বেহেসত কথাটিতো সবাই জানে।


সিদ্দান্ত গ্রহনকারী হিসেবেঃ নারীদেরকে বিয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দিয়ে নবী বলেছেন, যখন তোমাদের কাছে চরিত্রবান ও সভ্য ছেলের প্রস্তাবা আসে তাদের সাথে বিয়ে করে নাও। যদি তা না কর তাহলে দুনিয়াতে বিভেদ বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে (তিরমিযী)। এবং বিধবা নারিকেও তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না্।


দেন মোহর নারীর অধিকারঃ দেন মোহর দেওয়া ফরজ। এমনকি এ ব্যপারটাতেও নারীদের কে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে,তালহা ইবনে সালিম ইসলাম গ্রহনকেই মোহর হিসেবে নিয়ে বিয়ে করেন।কিংবা অন্য হাদিসে কোরানের কয়েকটি সুরা মুখস্ত করার শর্তেও মোহরানা হিসেবে বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এমনকি মোহরানা ছাড়া বিয়ে হবেনা। এটি একমাত্র নারীর অধিকার। যা অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। তাছাড়া বিয়েতে নারীদের পক্ষের কোন রকম খরজ ইসলাম সাপোর্ট্ করে না। সেখানে যৌতুকের প্রশ্নই আসেনা।


আমি জানিনা পাশ্চাত্যে নারীদেরকে আজ পর্য্ন্ত এ অধিকার দেয়া হয়েছে কি না । অথচ রোমান ও গ্রিক সমাজে মেয়েদেরকে এখনও খেলতামাশা-ভোগ বিলাশের বস্তু মনে করা হয়। যখন সারা পৃথিবীতে নারীর অধিকার তো দুরের কথা। তাদের সামান্য স্ত্রীর অধিকার পর্যন্ত দেওয়া হতো না। খৃস্টান সমাজ বিয়েকে অমঙ্গল ও খারাপ কাজ বলে মনে করতো। তখন ইসলাম বিয়ের মাধ্যমে বিয়েকে সামাজিক মর্যাদা দিয়েছে। শুধু সামজিক মর্যাদা দেই নি বরং বিয়ে করতে উৎসাহিত করেছে।


বিয়ের ব্যপারেঃ সুরা আন নুরে বলা হয়েছে, যাদের বিয়ে হয়নি তাদের বিয়ে করিয়ে দাও। বিয়েকে দ্বিনের অর্ধেক বলে তার গুরুত্ব আরো স্পষ্ঠ করেছেন মাহনবী সা:। আরো বেলেছেন, চারটি বিষয় হল নবিদের ঐতিহ্য তার মধ্যে একটি হল বিয়ে(তিরমিযি ও আহমদ)। অন্যত্র বলা হয়েছে ,যে বিয়ে করেনা যে আমার দলভুক্ত নয়।যে ব্যাক্তি পাবিত্রতার সাথে আল্লাহর সাথে দেখা করার আগ্রহী তার উচিত বিয়ে  করা। 



আবার পুরুষদেরকে সতর্ক্ করা হয়েছে যে, তোমরা ধন সম্পদের ভিত্তিতে নারীদের বিবাহ করো না, এতে করে তাদের অবাধ্য হওয়ার সম্ভাবনা থাকে (ইবনে মাজাহ,বায়হাকী)।নারী যুদ্ধাবস্তায় কাওকে আশ্রয় দিতে পারে। উমর রা: বোন মক্কা বিজয়ের সময় এক মুশরিককে আশ্রয় দিলে রাসুল তা অনুমদন করেন। হাদিসে আরা বলা হয়েছে যে, নারী পুরো জাতির দায়িত্ব নিতে পারে(তিরমিযি)।মহানবী বলেছেন,নারী পুরুষের সাথে সম পার্যায় ভুক্ত। সুরা নিসা ১ আয়াতে বলা হয়েছে,একই স্বত্তা থেকে মানুষকে তৈরী করা হয়েছে ।সুরা আত তাওবার-৭১ আয়াতে বলা হয়েছে যে, মুমিন পুরুষ-নারী একে অপরের বন্ধু। সব জিনিসেরই জোড়া স্বরুপ তৈরী করেছি। (জারিয়াত-৪৯) ইয়াসিন ৩৬।


পাশ্চাত্যের অবাধ ব্যভিচারের ইতিহাসে প্রসঙ্গে ক্রমে যুগের পরিবর্ত্ন ঘটে। পাশ্চাত্যের ও খৃস্টান,ইয়াহুদি ধর্মের অমানুসিক জুলুম নির্যাতনের ফলে গোটা পাশ্চাত্য জগৎ মানবধিকারের শ্লোগানে কেপে উঠে। গোটা পাশ্চাত্য সমাজ ধর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে। ঐ সকল জীবন ব্যস্থার উপর বিতৃষ্ণ হয়ে মানুস অন্য ধর্মের খোজে সচেষ্ঠ হয়। শুরু হয ধর্ম্ ও রাষ্ট্রের যুদ্ধ। এ নারী বস্তুবাদী বিপ্লবের  সয়লাবে নারী-পুরুস একাকার হয়ে যায়। ধর্মকে তারা সম্পুর্নকে বর্জ্ন করে। শুরু হয় অবাধ নারী পুরুষ স্বাধীনতা। নৈতিকতা চলে যায় অন্ধকারে। যা বলেছেন,জর্জ্ রয়লী স্কট তার গ্রন্থ এ হিস্টরি অব প্রস্টিটিউশন গ্রন্থে।


নারী পুরুষ মধ্যকার সাম্যের ধারনা ভূল। এ ভ্রান্তি নারিকে তার স্বাভাবিক দায়িত্ব সম্পর্কে উদাশীন এবং অস্বীকারকারী করে ছেড়েছে। এর ফলে সে পুরুষের কর্ম্ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। সে এখন নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যকে বর্জ্ন করে পুরুষের উপর অধিকার দাবী করছে। এখন নারী অধিকার বলতে পুরুষের অংশের অধিকারকেই বোঝায়। এবং তার জন্য সর্বোচ্চ চেঁচামেচি ও সংগ্রাম করে বেড়াচ্চে।


অথচ ইসলাম নারী অধিকার তখন থেকে দিয়েছে যখন নারীদের কোন মূল্যই ছিল না। ভূল ভাঙ্গুক আমাদের। ইসলামের নামে সকল মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ হোক। ফিরে আসুক আমাদের মুসলিম যুবসমাজ।


তিনি তোমাদেরই অস্বীত্ব থেকে স্ত্রীদের সৃষ্ঠি করেছেন যেন তোমরা তাদের কাছে শান্তি লাভ কর এবং তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়ার উদ্রেগ সৃষ্টি করেছেন। (আর রুম ২১)।


 


বিস্তারিত জানতে পড়ুন : পিস পাবলিকেশন্স এর “নারী ও পুরুষ ভুল করে কোথায়”


https://goo.gl/1MVK4j


আমার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট: http://www.swapnerghuri.com


 

পঠিত : ১১৬৯ বার

মন্তব্য: ০