Alapon

এরপরেও কি বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায়?

অতি সম্প্রতি একটা ভিডিও দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। ঢাকা সিটি উত্তরের নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুর রহমান ‘ময়লা পরিষ্কার’ কার্যক্রম-এ যাবেন এ উপলক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনের পয়ঃনিস্কাশন কর্মীরা রাস্তায় শুকনো কাগজ ফেলছে। পরে মেয়র আতিকুর সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং নিজ দলের কর্মীদের নিয়ে রাস্তা পরিষ্কারে নেমে পড়লেন। আর সাংবাদিকরা মহাসমারোহে তাদের সেই কর্মের ছবি তুলে পত্রিকায় প্রকাশ করেছে। 

এসবকে পুঁজি করেই অর্থাৎ উন্নয়নের ধোঁয়া তুলে বাংলাদেশ যে বাকশাল তথা ওয়ান পার্টি স্টেট এ পরিণত হয়েছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। গণতন্ত্রের বদলে উন্নয়ন যে একটা ফাপা বুলি তা মেয়র আতিকুলদের এহেন লোকদেখানো কাজই প্রমাণ করে। এই আতিকুলরাও ভোটারবিহিন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। 

আতিকুলের কথা না হয় বললাম। আজ সারাদেশে চলছে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন। কিন্তু গোটা নির্বাচন জুড়েই চলছে ভোটার খরা। ভোটরদের আকাল হবে এমন চিন্তা করেই হয়তো রাষ্ট্রিয় পুলিশ বাহিনি দ্বারা মাইকিং করেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের দেখা মিলছে না। আর মানুষ ভোট দিবেই বা কেন, সময় নষ্ট করে ভোট দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। আপনি ভোট দিয়ে আসবেন একজনকে কিন্তু দিনশেষে দেখা যায় নির্বাচিত হয়েছে সরকারি দলে পছন্দের প্রার্থী! তাহলে সময় করে এই ভোট দেওয়ার দরকার কী! সেকারণেই হয়তো দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে এই ভোটার খরা। চলুন ছবিতে দেখে আসি দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের অবস্থা।

ভোটার একজনও নাই। তাই ক্লান্ত হয়ে কর্মরত কর্মকর্তা অবশেষে ঘুমিয়ে পড়েছেন!

 

৫ হাজারের অধিক ভোটার থাকার পরও একজনও ভোট দিতে আসেননি। এই চিত্র কীসের ইঙ্গিত দেয়? এই প্রশ্নটা নিজের বিবেককে করেন আশা করি উত্তর পেয়ে যাবেন।

ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা বাহিনি ভোটারের অভাবে দোল খাচ্ছে! কী করবে বলেন, কিছু একটা করে তো সময় কাটাতে হবে।

আর এই সাংবাদিক মহাদয়! ভোটের নিউজ কাভার করতে গেছেন। সারাদিন অপেক্ষা করেও একজন ভোটারেরও দেখা পাননি। অবশেষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বসলেন, ‘আসবেন তো, তা কখন বলবেন কি?’

 

এই হল গণতন্ত্রের মানসকন্যা আমাদের সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রীর দেশের ভোট কেন্দ্রের চিত্র! এরপরও কি বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায়?

পঠিত : ১৮৭৪ বার

মন্তব্য: ০