Alapon

বাংলাদেশীদের সৌদি বিদ্বেষ পর্ব ১৫

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
   এক ছেলে হজ্বে যাওয়ার পথে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে আকামা বাতিল করে দেয়৷ আকামা ঠিক করতে তার বিশ হাজার রিয়াল বাংলার প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ হয়৷ এর ফলে তার মনে যে প্রতিক্রিয়াগুলো সৃষ্টি হয়েছে- "হায় আল্লাহ! সৌদী কেমন ইসলামী দেশ?", "হজ্ব করতে যাওয়া কি অপরাধ নাকি?", "ইসলামের নামে সৌদীরা মানুষের উপর জুলুম করছে" ইত্যাদি, ইত্যাদি৷
তার মুখ থেকে ঘটনাটা শোনার উপর শ্রোতাদের মনেও ঠিক একই রকম প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে৷ কেউ কেউ তীব্র ঘৃণায় ফেটে পড়বেন, কেউ কেউ সৌদী বাদশাহর ফাঁসির রায় দিয়ে দিবেন৷ যার অন্তর ঘৃণায় পূর্ণ, আল্লাহ না চাইলে আপনি, আমি সারা জীবন চেষ্টা করেও তার অন্তরে মহাব্বত সৃষ্টি করতে পারবো না৷ বিচারের যোগ্যতা থাক বা না থাক কিছু মানুষ সব কিছুতে বিচারক সেজে যায়৷ মানসিক প্রশান্তির জন্য আবেগী আর বিচারক এই দুই ধরনের লোককে এড়িয়ে চলাই উত্তম৷
সৌদীতে প্রবাসী শ্রমিকদের বলা হয় আজনবী৷ আজনবীদের ওমরাহ্ পালনে কোন বাধা না থাকলেও, সহজে হজ্ব করতে পারে না৷ কেন পারে না? সে ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে, আমাদের দেশের জনগণের অবস্থা বলি কিছু দিন পূর্বেও এখানকার বাঙ্গালীদের মুখে মুখে খবর রটে গেলো আজনবীদের ওমরাহ্ করতে সৌদী সরকার জনপ্রতি তিনশ রিয়াল করে ধার্য্য করেছে৷ পরবর্তীতে প্রমাণ হলো যে খবরটা সম্পূর্ণ ভূয়া৷
অনেকে এ রকম বিভিন্ন লেখায় মেনশন দিয়ে জানতে চায় এটা নিয়া আপনার মতামত কি? ওটা নিয়া আপনার মতামত কি? আসলে সৌদী সম্পর্কে আমাদের দেশে এত এত বেশি মিথ্যাচার আর গুজব রটেছে যে, কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা আমি সেটা নিয়েই কনফিউজড৷ এগুলো যদি সত্যও হয় প্রচার করলে কি পরিমাণ নেকী হাসিল হবে সেটা আমাদের আল্লামা, পীরে কামেল, বাতিলের আতংক, আওলাদে রাসূল, মুফতী ইত্যাদি বিশেষণে বিশেষায়িত বুজুর্গগণ ভালো জানেন, কিন্তু মিথ্যা হলে যে গোনাহ হবে নিশ্চিত, এটা জানার জন্য আপনাকে ইসলামী স্কলার হতে হবে না৷ আর আপনি বার বার চিলের পেছনে দৌড়াবেন আর আমি আপনার পেছনে দৌড়াবো অত বেকার সময় নাই সেজন্য আমি দুঃখিত৷
যারা এসব সংবাদ তৈরি করে তাদের উদ্দেশ্য কি এবং কিভাবে এসব সংবাদ ছড়ায় সে সম্পর্কে আমি পূর্বের লেখাগুলোতে বলেছি৷ আপনার যদি এ ধরনের উদ্দেশ্য না থাকে, তাহলে আপনার উদ্দেশ্য কি? নেকী হাসিল? ইসলামের প্রচার এবং প্রসার? অথচ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ পাক স্পষ্ট করে সংবাদ যাচাই না করে বিশ্বাস করতে নিষেধ করেছেন৷ রাসূল (সাঃ) যা শোনে তা বলতে নিষেধ করেছেন৷ আপনি আর আমিতো কোরআন -হাদীসই বুঝি না, অথচ বীর মুজাহিদ৷ এই লেখার শুরু থেকেই আমি বলে আসছি, যারা জানতে চায় শুধু তাদের জন্য, বদ হজমের রোগীদের জন্য না৷ ছেলেটার সমস্যা বলার আগে আজনবীদের হজ্ব করতে সমস্যা কোথায় সেটা বলি—

আজনবীদের হজ্ব করতে কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হয়৷ প্রথমে, কফিলের অনুমতি নিতে হবে৷ যারা বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন তারা বুঝতে পারবেন, আপনাকে কোথাও যেতে হলে অবশ্যই আপনার কর্মরত প্রতিষ্ঠান থেকে মৌখিক বা লিখিত অনুমোদন নিতে হবে৷ ওমরাহ করতে একদিনের বেশি সময় লাগে না বলে, এটি নিয়ে কোন সমস্যা হয় না৷ কিন্তু হজ্ব করতে নূন্যতম পাঁচ থেকে সাত দিন লাগে৷ এ ধরনের দীর্ঘ মেয়াদী ছুটির ক্ষেত্রে লিখিত অনুমোদনই অগ্রাধিকার প্রাপ্য৷
দ্বিতীয়ত হজ্ব মিনিস্ট্রির অনুমোদন নিতে হয়৷ আপনি যদি বাংলাদেশের কোন সংরক্ষিত এলাকার ভিতরে প্রবেশ করতে চান যেমন ধরুন- সংসদ ভবন, ক্যান্টর্মেন্ট, বিমানবন্দর তাহলে আপনার অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনপত্র লাগবে৷ যদি কোন কোম্পানীর মিলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে চান সেখানেও আপনার অনুমোদন লাগবে৷ আবাসিক এলাকার ফ্ল্যাটগুলোতে একই অবস্থা৷ এগুলো সাধারণত নিরাপত্তা বিধানের জন্যই করা হয়ে থাকে৷ হজ্বের সময় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারনে হজ্ব মিনিষ্ট্রির অনুমতি ছাড়া কোন আজনবী যেমন হজ্ব করতে পারে না, তেমন কফিলের সুপারিশ ছাড়া কোন আজনবীকে মক্কা প্রবেশও করতে দেওয়া হয় না৷ আপনার মা-বাবা আসলেও কফিল জিম্মাদার না হলে আপনি মক্কা যেতে পারবেন না৷
তৃতীয়ত, একলা বা কাফেলাবদ্ধ যে কোন উপায়ে ওমরাহ পালনের অনুমতি থাকলেও একলা হজ্ব পালনের অনুমতি নাই৷ আপনার যদি ইজতেমায় বা পিকনিকে যাওয়ার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি সহজেই বিষয়টা বুঝতে পারবেন৷ কেউ আবার হজ্বের সাথে ইজতেমা, ইজতেমার সাথে পিকনিকের তুলনা করে প্যাঁচিয়ে ফেলবেন না৷ প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা সহজে বোঝার জন্য আমি ঊদাহরণটা এনেছি৷ ইজতেমায় বা পিকনিকে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন মুরুব্বী বা লিডার নির্ধারণ করা হয় যিনি অন্যদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো দেখে থাকেন৷ হজ্ব কাফেলাতে এ ধরনের একজন মুয়াল্লিম বা গ্রুপ লিডার থাকেন৷ আমরা যদি সাধারণ একটা সভাতেও যোগ দেই প্রত্যেকে কিন্তু একটা নির্দিষ্ট গ্রুপের সাথে যাই, এতে সভার সুশৃঙ্খলতা বজায় থাকে৷ আর এটাতো মুসলমানদের মহা সম্মেলন এখানে যদি সবাই যার যেভাবে খুশি সেভাবে যেতে চায় তাহলে বিশাল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে৷
পূর্বেই বলেছি এখানে যারা আসে বেশিরভাগই নিরক্ষর৷ এদের মাঝে এমনও লোকও আছেন যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা জীবনেও ঢাকাতে আসেনি৷ এমনও লোকও আছে সৌদীতে যাদের প্রথম কর্ম দিবস৷ এমনও লোক আছেন বিশ বছর হয়ে গেছে এখনো আরবী বোঝেন না, বুঝলে বলতে পারেন না৷ এতসব ঝক্কি-ঝামেলা তারা বোঝেন না, বোঝলেও মোকাবেলা করতে চান না, আমি নিজেও এসব ঝামেলা মোকাবেলা করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নয় বলে হজ্ব করা হয়ে উঠেনি৷ এক্ষেত্রে সৌদী আরবে আজনবীদের হজ্ব করতে দেয় না বলে খুব সহজে পাশ কাটিয়ে দেওয়া যায়৷ অনেকেই এই সহজ কাজটা করে থাকেন৷
যে ছেলেটার কথা বলছিলাম, এসব নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করেই সে প্রথমে এক বার হজ্ব করেছিলো৷ নিয়ম না মানায় তার হজ্ব কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে আল্লাহ ভালো জানেন, তবে আমি একজন আলেমের কাছ থেকে শুনেছি হজ্বের সময় কর্তৃপক্ষের নির্দেশাবলীর প্রতি শ্রদ্ধা পালন করা উচিত৷ সাধারণত প্রথমবার হজ্ব করাই মুসলমানদের উপর ফরয৷

দ্বিতীয়বারও সে একই পন্থায় হজ্ব করতে গিয়েছিলো৷ হজ্বটা যদি ধর্মীয় কারনে হয়ে থাকে তাহলে আমরা ধর্মের কথায় আসি, এখানে তার চাচা আছেন আর হাদীসে চাচাকে পিতৃতুল্য বলা হয়েছে৷ তার চাচা তাকে যেতে নিষেধ করেছেন৷ তাকে ভিসা দিয়ে এখানে যিনি নিয়ে এসেছেন, তিনি নিষেধ করেছেন৷ আমি তাকে কিছু দিন পড়িয়েছিলাম সে হিসেবে আমি তার ওস্তাদও৷ আমি তাকে নিষেধ করেছি৷ আমাদের আরো যারা আছে তারা নিষেধ করেছে৷ সে আমাদের কারো কথাকে কোন পাত্তাই দিলো না৷ রাসূল (সাঃ) বলেছেন যে, "বড়দের সম্মান করে না, ছোটদের স্নেহ করে না সে আমার দলভূক্ত নয়৷"
আজনবীদের হজ্ব করার যে নিয়মাবলীর কথা বললাম, এগুলো অনেক পুরাতন৷ কোন ঝামেলা না হওয়ার কারনে সৌদীরা এসব দিকে তেমন নজর দেয়নি৷ যার কারনে তার প্রথমবার হজ্বে কোন সমস্যা হয়নি৷ দ্বিতীয়বার হজ্ব করার সময় লিবিয়া, মিশর, তিউনিসিয়া সহ মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিলো৷ পরিস্থিতি যত উত্তপ্ত হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা তত জোরদার হয়৷ হজ্ব মিনিষ্ট্রি থেকে সেবার সব আজনবীর মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে দিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিলো, কেউ যাতে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ছাড়া হজ্ব করতে না যায়৷ এবার কিন্তু কাউকে মেসেজও পাঠানো হয়নি, যারা বিনাঅনুমতিতে হজ্ব করতে গেছে কাউকে আটকও করা হয়নি৷
বিনাঅনুমতিতে হজ্ব করার জন্য অর্থদন্ড, কারাদন্ড (পরিমাণ মনে নেই) এবং সেই সাথে দশ বছর সৌদী প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জারি করে আইন করা হয়েছে৷ তাকে কিন্তু কিছুই করা হয়নি শুধু তার আকামা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে৷ আকামা ছাড়া সে প্রায় চার-পাঁচ বছর কাজ করছে তাকে পুলিশ গ্রেফতারও করেনি৷ যে বিশ হাজার রিয়াল সে দিয়েছে সেটা ছিলো ঘুষ৷ সৌদী আরবে ঘুষখোর অফিসার দূর্লভ, যারা এই ঘুষখোরদের দালালী করে এরা বেশিরভাগ বাঙ্গালী, হিন্দি, পাকিস্তানী৷ বাদশাহ সালমান ক্ষমতায় আসার পর অবৈধ আজনবীদের দেশে যাওয়ার অথবা কাগজপত্র ঠিক করার সুযোগ দিয়েছিলো, সেই সুযোগে সে আকামা ঠিক করেছে৷
এইযে তার আইন অমান্য করার প্রবণতা, মুরুব্বীদের প্রতি অশ্রদ্ধা, আইন অমান্য করার অপরাধে তাকে যে কোন কঠোর সাজা দেওয়া হয় নাই, দেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও সে যে সৌদীতে ছিলো এসব কিছু বাদ দিয়ে তার বিশ হাজার রিয়ালই তার কাছে বড় এবং এটা নিয়ে সে সারাদিন মাছির মত ফ্যানর ফ্যানর করে৷ পুরো শরীর ভালো থাকলেও মাছির নজর শরীরের ক্ষত অঙ্গে৷

এটা অবশ্য আমাদের জাতীয় রোগ৷ এইতো সেদিন বাচ্চাদের আন্দোলনের ভাষা নিয়ে দেখলাম কত ধার্মিক, নীতিবানদের মাতামাতি অথচ ৪৬ বছরে দেশে কত খারাপ কাজ হয়েছে সেগুলোতে ধার্মিকদের ধর্মে, নীতিবানদের নীতিতে আঘাত হানেনি৷ এখানকার জেলখানায় আমার সাথে কলকাতার এক ভদ্রলোকের পরিচয় হয়েছিলো৷ তিনি বিন লাদেন কোম্পানীতে কাজ করেন৷ মসজিদে নববীর দেখাশোনার দায়িত্ব বিন লাদেন কোম্পানীর হাতে৷
তার অপরাধ ছিলো, তিনি মসজিদে নববীতে একটা বাচ্চাকে সরিয়ে তার জায়গায় বসেছিলেন সেজন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ গ্রামের একটা কমিউনিটি স্কুলে বাচ্চাদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ আমার হয়েছিলো৷ স্কুলটা মসজিদের পাশে৷ সামনের কাতারটা খালিই থাকত, তবু তাদের সামনে যাওয়ার অধিকার নেই৷ পেছনে বসলে বাচ্চারা সাধারণত গল্প গুজব করত, তখন এদের মসজিদে আসতে কে বলছে?
বাচ্চাদের মসজিদে না নিলে তারা মাঠে দৌড়াদৌড়ি করত, এতে আবার মুসল্লীদের নামাযের ব্যাঘাত হয়৷ নামাযের সময় পড়ালে আবার মাস্টারদের কি নামায, কালাম লাগে না? অর্থাৎ যে পদ্ধতিই অবলম্বন করি, একটা না একটা দোষ আবিষ্কার হয়ে যায়৷ এখানে কোন বাচ্চার সাথে আপনাকে কোন তর্ক বা নালিশ করতে গেলে, বাচ্চার যতই অপরাধ থাকুক পুলিশ বা সৌদীরা বলবে, "তুমি কি পাগল? বাচ্চার বয়স আর তোমার বয়স কি সমান? তোমার বয়স হলে সে ঠিক হয়ে যাবে৷" সামান্য মুলা চুরির অপরাধে আমরা যারা বাচ্চাদের পিঠিয়ে মেরে ফেলার পক্ষে তাদের কাছে এসব দৃষ্টিকটু লাগে৷
পুরো রমজান মাস এখানকার মাদ্রাসাগুলো বন্ধ থাকে৷ সে সময় তারা কিশোরদের জন্য বিভিন্ন সরকারী- বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে পার্ট টাইম জবের ব্যবস্থা করে৷ যে পোস্টে নিয়োগ পায় তাকে ঐ পোস্টের স্কেল অনুযায়ী বেতন প্রদান করা হয়৷ সৌদীদের জন্য সর্বনিম্নের কাজ হলো দারোয়ান৷ কেউ যদি দারোয়ানের চাকুরীও নেয় তাহলে তার বেতন পড়ে এখানকার আড়াই হাজার রিয়াল আমাদের দেশের প্রায় পঞ্চান্ন হাজার টাকা৷ তার কর্ম দিবস প্রথম রমজান থেকে সাতাইশ রমজান পর্যন্ত্য৷ ছয় ঘন্টা ডিউটি এর মাঝে চার দিন ছুটি৷ কাজের জন্যও তাদের কোন চাপ প্রয়োগ করা হয় না৷ কোম্পানীগুলোর পার্মানেন্ট লোক আছে৷ এদের কোম্পানীর প্রয়োজন নেই, অর্থনৈতিক হিসাবে এরা কোম্পানীর লস প্রজেক্ট৷ তবু তারা কেন এদের হাসি মুখে গ্রহণ করছে বোঝেন? এদের মাঝে তারা আগামী দিনের বীজ বুনছে৷

আমাদের দেশে অনেকে বলেন, সৌদীতে আন্দোলন করতে দেয় না, মিছিল করতে দেয় না৷ আন্দোলন কেন করবে? অন্নের প্রয়োজন, বস্ত্রের প্রয়োজন, বাসস্থানের প্রয়োজন, চিকিৎস্যার প্রয়োজন, চাকুরীর প্রয়োজন সরকারী অফিসে যোগাযোগ করলে পেয়ে যাচ্ছে৷ তাহলে কিসের জন্য তারা আন্দোলন করবে? ছোটবেলা থেকেই তাদের চাহিদাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে৷ আর আমাদের কি দেওয়া হচ্ছে?
সেদিন একটা জরিপে দেখলাম, ২০১৮ সালে বই মেলায় বই বিক্রি হয়েছে ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার আর নেশার পেছনে দৈনিক খরচ হচ্ছে সাড়ে ২৮ হাজার কোটি টাকা৷ হ্যাঁ, এ জিনিষটাই আমাদের জন্য সহজ লভ্য করে দেওয়া হয়েছে৷ বাংলাদেশের সামাজিক ব্যবস্থা ধ্বংসের প্রধান কারন এই নেশা৷
অনলাইনেতো অনেক বীর মুজাহিদ, বিপ্লবী, নেতা, পীরে, কামেলকে দেখলাম সৌদীর বিরূদ্ধে জিহাদের ডাক দিতে দিতে ফেনা তুলে ফেলছেন৷ সৌদীতে আসতে আপনার অনেক সময় লাগবে অথচ ঘরের পাশেই আপনার জিহাদের ক্ষেত্র পড়ে আছে৷ এগিয়ে যান না বাচ্চাদের জন্য সুন্দর একটা দেশ গড়ার জিহাদে৷ আদৌ কি আপনার এসবের প্রতি আগ্রহ আছে? নাকি সৌদীতে ইসলাম থাকলেই আপনাদের বেহেশত মিলে যাবে?

পঠিত : ১৪২১ বার

মন্তব্য: ০