Alapon

প্রি ম্যারিটাল সেক্স ও কুকুরের মুখে মানবশিশু.......

সম্পর্কের ১ মাস ১৩ দিনের মাথায় মেয়েটির সঙ্গে আমার প্রথম শারীরিক সম্পর্ক হয়। সিলেটের বিয়ানীবাজারের একটি নির্জন বাসায়। অনেক চেষ্টার পরে কনভিন্স করতে পেরেছিলাম। বলেছিলাম, "আমি অবশ্যই তোমাকে বিয়ে করে ঘরে তুলবো।" আমাকে হারানোর ভয় মেয়েটির মধ্যে তীব্রভাবে ছিলো। আমি তখন সাস্টের সিএসই ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি শেষ করে স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে মাস্টার্স করতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। মেয়েটি আমার খুব সুনিশ্চিত একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছিলো বলে আমাকে কিছুতেই হারাতে চায় নি। ঠিক এই সুযোগটাই আমি কাজে লাগাতে পেরেছিলাম ঠিকঠাকভাবে। শারীরিক সম্পর্ক হওয়ার পরের দিনই আমার মোবাইলের সিমটি বদলে ফেলি এবং ঢাকায় চলে আসি। মেয়েটির নাম ছিলো ঝিনুক। একদিন আমার বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারলাম, ঝিনুক কনসিভ করেছিলো এবং লোকলজ্জার ভয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

ঝিনুকের জন্য আমার অনুশোচনা জেগে ওঠার খুব একটা সময় হয় নি। কারণ ততদিনে আমার জীবনে অন্য এক ঝিনুকের আগমন ঘটেছে। নাম শীলা, ইডেন কলেজে হিস্ট্রি থার্ড ইয়ারের ছাত্রী। এখানে জানিয়ে রাখা প্রয়োজন, আমার আর মাস্টার্স করার জন্য বাইরে যাওয়া হয় নি বলে ঢাকা ভার্সিটিতেই মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছিলাম। শীলার সঙ্গে প্রায়ই ডেটিং এ যাওয়ার সুযোগ হতো। সে ছিলো বেশ উচ্চবিত্ত পরিবারের ৪ ভাইয়ের একমাত্র বোন। ডেটিং এ গিয়ে কখনোই আমাকে বিল দিতে হয় নি। উপরন্তু সে মাঝে মাঝেই আমাকে এটা সেটা কিনে দিতো। একদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা করতে গিয়ে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। সে আমার জন্য ১৩ হাজার টাকা দামের একটা রিস্টওয়াচ কিনে নিয়ে এসেছে। আমার হাতে পরিয়ে দিতে দিতে বললো, "আমরা যতোবার ডেটিং এ বেরোবো, তোমার হাতে এটা থাকা চাই। সবাই দেখুক, আমার বয়ফ্রেন্ড কত স্মার্ট!" প্রায় ২ মাস সম্পর্কের বয়স পূর্ণ হওয়ার পর আমি তাকে সাহস করে লিভ টুগেদারের অফার করলাম। কিন্তু তার ভয়ঙ্কর রিঅ্যাক্টের জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। টানা ৩ দিন ফোন অফ করে রাখলো, যোগাযোগ পুরোদস্তুর বিচ্ছিন্ন। চতুর্থ দিনের মাথায় আমার ফোনের স্ক্রিনে তার টেক্সট আসলো একটা, "আজ বিকেল ৪ টায় রমনা পার্কে দেখা করবে।" আমি বেশ সেজেগুজে হাজির হলাম। শীলার সঙ্গে দেখা হতেই দেখলাম, সে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠেই বলতে শুরু করলো, "আমি তোমাকে ভালোবেসেছিলাম রিশাদ। আমার সমস্ত সত্তা উজাড় করে ভালোবেসেছিলাম। আর তুমি! ছিঃ পবিত্র ভালোবাসার চাইতে তোমার কাছে শরীরটাই বড় হয়ে গেলো! আর কক্ষনও এসব কথা মুখে আনবে না।" আমি চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থেকে শুনলাম। মনে মনে খুশিই হলাম বলতে গেলে। পাখি যখন আবার ফিরে এসেছে তখন খাঁচায় ধরা দিবেই। শীলার শরীরের ব্যাপারে আমার ফ্যান্টাসি আরও বেড়ে গেলো। অনেক জেদ চেপে বসলো, "By hook or by crook, I want you on my bed." আমি হাল ছাড়লাম না। শীলার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠলাম। ১ মাসে মোটামুটি ওর আস্থা অর্জন করে ফেললাম। এরপরে আবার প্রপোজ করে বসলাম অনেকটা কৌশলে। "বিয়ে তো আমাদের হবেই। বিয়ের আগে শুধু একবার তোমাকে বিছানায় পেতে চাই।" এবার রিঅ্যাক্ট আগের মতো ততোটা জোরালো মনে হলো না। তৃতীয় বারও মৃদুভাবে রিজেক্ট করার পর চতুর্থবারের মাথায় আমি শুনলাম সেই কাঙ্ক্ষিত উত্তরটি। শীলা ধীর কণ্ঠে বললো, "আচ্ছা, শুধু একবার কিন্তু!" শুধু একবারের কথা বললেও আমাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিলো মোট ৭ বার। বিয়ের জন্য চাপ দেয়া শুরু করলে আমি নাম্বার বন্ধ করে কয়েক মাসের জন্য গা ঢাকা দিলাম। পরে শুনেছি, এক আমেরিকান প্রবাসীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

শীলার বিয়ে হওয়াতে আমি মোটামুটি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু ততোদিনে মেয়েদের শরীরের নেশা আমাকে পেয়ে বসেছে। এর মধ্যে একবার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লায় ঘুরতে গিয়ে গ্রামের এক অতি রূপবতী তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠলো আমার। মাত্র ৪ দিনেই তাকে বিছানায় নিতে পারা আমার জীবনের অন্যতম একটা বৃহৎ কীর্তি হয়ে থাকবে। এরপর একে একে ৩৭ জন মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেছি আমি। এরমধ্যে ৩ জন সুইসাইড করেছে। ১ জন বাচ্চা অ্যাবোরশন করিয়েছে। বাকিদের অধিকাংশেরই বিয়ে হয়ে গেছে। দুই জন শুধু থানায় ধর্ষণের মামলা করেছিলো। কিন্তু হালে পানি পায় নি। ওসিকে কিছু টাকা খাইয়ে আর দুই একজন মামা খালু ধরে মামলা ডিশমিশ করে ফেলেছি। আপাতত আমার টার্গেট হাফ সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাওয়া। হাফ সেঞ্চুরি করতে পারলে একটা ছোট খাটো পার্টি দেবো। সেখানে আপনাকেও ডাকবো রাসেল ভাই।............... এতোটুকু বলে থামলো রিশাদ নামের যুবকটি। টেবিলের সামনে রাখা গ্লাস থেকে 'ঢোক ঢোক' শব্দ করে পানি খেলো। তার চোখ জোড়া কোনো এক অজানা কারণে লাল টকটকে হয়ে আছে। রাসেল ভাই নির্বাক তাকিয়ে আছেন তার চোখের দিকে। একবারও চোখের পলক ফেলছেন না। আমি দাঁড়িয়ে আছি তাদের দুজনের একটু পাশেই। অপেক্ষা করছি রাসেল ভাই কি বলেন তা শোনার জন্য। রাসেল ভাই কিছু বলছেন না। চুপচাপ তাকিয়ে আছেন। সম্ভবত পড়তে চেষ্টা করছেন রিশাদ নামের এই যুবককে। যে যুবকের দ্বারা লুণ্ঠিত হয়েছে অসংখ্য বোনের আব্রু। হঠাৎ মনে হলো, আমিও খানিকটা স্তব্ধ হয়ে গেছি। আবছা আঁধারে ঢাকা এই রুমটাতে কেমন নিঃশ্বাস বন্ধ বন্ধ লাগছে! আমি রাসেল ভাইয়ের সাথে রিশাদ নামক এই যুবকের কথপোকথন শোনার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারলাম না। দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। বাইরের মৃদুমন্দ বাতাসেও মনে হলো কোনো প্রশান্তি নেই। বাতাসে যেন ভেসে ফিরছে বাংলাদেশের আনাচে কানাচের এমন হাজারো বিয়ের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে ইজ্জত লুণ্ঠিত হওয়া তরুণীদের হাহাকার আর আর্তনাদ। ফাঁসির দড়িতে ঝুলছে স্বপ্নরা, ডোবা নর্দমায় ভাসছে নিষ্পাপ জীবন। ভাসছে বাংলাদেশের স্বপ্ন, ভাসছে অনাগত সম্ভাবনার এক প্রজন্ম।

পঠিত : ১১৯৪ বার

মন্তব্য: ০